Showing posts with label ফিচার. Show all posts
Showing posts with label ফিচার. Show all posts

Mar 18, 2022

আমের রাজ্যে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা

আমের রাজ্যে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা




আমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আমের রাজধানীতে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। গত বছরের ক্ষতি পুষিতে নিতে এবার আম গাছের পরিচর্যায় বেশ মনযোগী হয়েছেন বাগান মালিকরা। বাগান পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরাও পেয়েছে নতুন কর্মস্থল। তারাও নতুন কর্মস্থল পেয়ে আনন্দিত। বাগান মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া মজুরি দিয়ে সংসারের দুঃখ দূর হবে বলে আশাবাদী শ্রমিকরা। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সুত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে আম ২ লাখ ৭৭ হাজার ৬২২ বিঘায় মোট ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৪০ টি আম গাছ চাষাবাদ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার ৩০ হাজার ৯১১ বিঘা বেশি জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এ মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৮ হাজার ৪৭০ দশমিক ৫ বিঘা, শিবগঞ্জে ১ লাখ ৫২ হাজার ১৪ দশমিক ৫ বিঘা, গোমস্তাপুরে ৩১ হাজার ৫২৩ দশমিক ৪ বিঘা, নাচেলের ২৮ হাজার ২৭৩ দশমিক ৯৫ বিঘা, ভোলাহাট উপজেলায় ২৭হাজার ৩৪০ দশমিক ২ বিঘা জমিতে আম গাছ চাষাবাদ হচ্ছে।

সদর উপজেলার ইসলামপুরে ২৪ বিঘার একটি বাগান কিনেছেন মুনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, গত বারের চেয়ে এবার আম উৎপাদনের জন্য দিয়ে মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি। গতবছরে জলবায়ুর কারণে আমের মুকুল ফুটার সময় বৃষ্টি হয় নি। এছাড়াও করোনার প্রাদূর্ভাবের কারণে অন্য জেলার ব্যাপারীরা আম কিনতে আসতে পারেনি। ফলে আমের মৌসুমের প্রথম দিকে আমের দাম পাওয়া যায়নি। অনেক লোকসান হয়েছে। এবার করোনার মধ্যে আমের বাজারদর যেন না কমে এদিক দিয়ে আম সংশ্লিষ্টরা খেয়াল রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শিবগঞ্জের আরেক আম বাগানি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এবারের মৌসুমের প্রথম দিক থেকে আবহাওয়া ভালো আছে। ফলে গতবারের চেয়ে এবার আম ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।  আমের ফলন ভালো হলে গত বছরের লোকসানের টাকা গুলো এবার পুষিয়ে নেয়া যাবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ  সদর উপজেলার ঝিলিম এলাকায় একটি বাগানে আমের গাছে কিটনাষক প্রয়োগ করছিলেন সাইফুল, গোলাম রাব্বানি, সোহেল, আব্দুল আজিম। তারা জানান, করোনায় অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কাজ ছিলোনা, ধার দেনা করে আমাদের সংসার চালাতে হয়েছে। এমন কী বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে সংসারে ব্যয় করতে হয়েছে। এখন আমরা কাজ পেয়েছি। প্রত্যেকেই প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করি। সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন কাজ থাকে। এমন করে কাজের গতি চলতে থাকলে, ধার আর লোনের টাকা গুলো শোধ করা যাবে। তবেইতো নিতে পারবো স্বস্থির নিঃশ্বাস।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, বর্তমানে আমের গাছগুলো শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি মুকুল এসেছে। এবারের মৌসুমে ৩৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন। আবহওয়া ভালো থাকায় আমের ফলন ভালো হবে বলে আশাবাদি এ কর্মকতা।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কামরুল ইসলাম বলেন, চলচি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে তিন চার ধরে মেঘলা আবহওয়া ছিল। এ সময়ে যে সব মুকুল ফুটেছিলো সেগুলো ঝরে যাওয়ার শঙ্কা ছিলো। কিন্তু পরে আবহাওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় আমের মুকুলের ক্ষতি হয়নি। তবে যে সব গাছে আগাম মুকুল এসেছিল, ওইসব কিছু কিছু গাছের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি আরও বলেছেন, এ সময়ে গাছের সঠিক পরিচর্যা না নিলে, আম গাছে ছত্রাক ভাইরাস বাসা বাঁধতে পারে। কৃষকরা যদি গাছে ছত্রাক নাশক স্প্রে করে তাহলে এ ভারসাস থেকে পরিত্রাণ পাবে।

 

May 5, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক কাঠুরের জীবন যুদ্ধে হার না মানার গল্প

চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক কাঠুরের জীবন যুদ্ধে হার না মানার গল্প


চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাস করেন ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধ মো. মশিরউদ্দি।বয়স প্রায় ৭৫ বছর ।জন্ম তার গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়।নদীভাঙ্গনের কবলে পড়ে এ জেলায় এসে বাস করছেন।এখন ভাড়া থাকেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীনগরে।

কথা হচ্ছিলো বৃদ্ধ মশিরউদ্দিনের সাথে।জানালেন তিনি তার জীবনের গল্প।তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধেরে ভিক্ষা করেছি।ভাবলাম এটা তো ইসলাম সমর্থন করেনা।তাই পরনির্ভরশীল না হয়ে থেকে গত ২৮ বছর থেকে কুড়াল হাতে কাঠ কেটে সংসার চালাচ্ছি।এ জায়গায় ৩০ বছর থেকে বসবাস করছি। এ ঠিকানায় জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় পাইনি কোন সরকারি সাহায্য।দারিদ্রতার কারনে দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেনীতে আর ভর্তি হওয়া হয়নি।একদিকে নদী ভাঙ্গন, অন্যদিকে কোন কাজকর্ম না থাকায় বিয়ের পর এক সন্তানকে নিয়ে আরো বিপাকে পড়ে যাই। কোন উপায় না পেয়ে স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে চলে আসি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

এখানে এসে সে রকম কোন ভালো কাজ না পেয়ে ৩ মাস অন্যের গরুর পালের রাখাল ছিলাম।যখন তাতেও সংসার চলছিলনা তখন পেয়ে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করেছি। ৯ মাস ভিক্ষা করার পর মাথায় আসে নিজেই আত্মনির্ভরশীল হওয়ার কথা। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী আমজাদ আলী ঝড়ুর নিকট শরণাপন্ন হলে তিনি মশিরউদ্দির হাতে একটি কুড়াল তুলে দেন। ওই কাড়ালের উপর ভর করে গত ২৮ বছর ধরে সংসার চলছে।কুড়াল পাওয়ার পর জেলা শহরের ফিটু ও দুরুলের খড়ির আড়ৎ-এ ১ বছর কাজ করি। এরপর নিজেই শুরু করি বাড়ি বাড়ি গিয়ে খড়ি ফাঁড়ার কাজ। এতে এখন দৈনিক ৭০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত পাই।৩ ছেলের মধ্যে এক প্রতিবন্ধী ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে চলছে আমার সংসার। আলীনগর এলাকার রবিউল ইসলাম মতির বাড়িতে মাসিক ১৫০০ টাকায় ভাড়া থাকে মশিরউদ্দির পরিবার। তিনি আরোও জানালেন, বয়স অনেক হয়েছে, শরীরে কুলায় না। কিন্তু কি আর করার, সংসার চালাতে এই কষ্ট করতেই হচ্ছে। এখান কার আইডি কার্ড নাই, তাই মেম্বারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন সরকারি সহযোগিতা পায়নি।

প্রতিবেশী মরিয়ম বেগম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে তারা এখানেই বসবাস করে। খুব কাছ থেকে তাদের দেখে আসছি।কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছে। খেয়ে না খেয়ে দিন যায় তাদের। মেম্বার-চেয়ারম্যানরাও একটু সহযোগিতা করে না। লোকটার নাই একটা বয়স্কভাতা। তার ছেলে প্রতিবন্ধী।তার ছেলের জন্য সে কোন সরকারি সহযোগিতা পায় না। মশিরউদ্দির প্রতি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ০৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এনামুল হক জানান, আমার সাথে যোগাযোগ করলে তার যেকোন একটা ব্যবস্থা করে দিবো।

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসা. উম্মে কুলসুম জানান, এমন ব্যক্তি এই বয়সে কুড়াল হাতে কাজ করার বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক। তবে বৃদ্ধ মশিরউদ্দিকে যেকোন সরকারি সহায়তা নিতে হলে গাইবান্ধা থেকেই নিতে হবে। কারন সেখানকার ঠিকানায় তার জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে।

May 1, 2021

সোনামসজিদ স্থলবন্দর প্রেসক্লাবের আত্মপ্রকাশ

সোনামসজিদ স্থলবন্দর প্রেসক্লাবের আত্মপ্রকাশ


চাঁপানবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর প্রেসক্লাব এর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।আজ শনিবার সন্ধায় বিশ্বরোড মোড়স্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ এশিয়ান টিভির অফিসে এক ইফতার মাহফিলে এ কমিটির ঘোষণা করেন এ প্রেসক্লাবের সভাপতি ফয়সাল আজম অপু। এ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি এস.এম.সাখাওয়াত জামিল দোলন।

সহ-সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন, সেতাউর রহমান,সহ- সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন,প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক ডি.এম কপোত নবী, বন্দর বিষয়ক সম্পাদক রাজিবুল ইসলাম জীবন, সাংস্কৃকিত বিষয়ক সম্পাদক হাসান আলী ডলার, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস সিহানক শান্ত, তথ্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নাদিস হোসেন, নির্বাহী সদস্য শাহাদাৎ শাহরিয়া, নাসিম আলী, জামিল হোসেন।

এ সময় নয়া গঠিত প্রেসক্লাবের সভাপতি বলেন, আমরা ভেদাভেদ ভূরতে চাই।আমার প্রেসক্লাবের প্রতিটা সদস্য সত্য প্রকাশে সচ্চার থাকবে।

 

 

 

Apr 27, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিশোরী ইসলামি সংগিত গেয়ে ভাইরাল

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিশোরী ইসলামি সংগিত গেয়ে ভাইরাল

”বাবা মানে হাজার বিকেল আমার ছেলে বেলা, বাবা মানে রোজ সকালে পুতুল পুতুল খেলা” এ ইসলামি সংগিত গেয়ে জায়মা নূর (১০) নামের এক কিশোরী বেশ আলোচিত হয়েছে।


রমজান মাস উপলক্ষে আয়োজিত ’পবিএ কুরআনের আলো’ নামক অনুষ্ঠানে এ সংগিত গেয়ে ফেসবুকের পর্দায় আলোচনায় আসে ওই কিশোরী।গত বৃহস্প্রতিবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে এ সংগিত গেয়ে আলোচিত হয়।অনুষ্ঠানটি প্রচার করা হয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল বাংলা ভিষন।

ঠিকানা ও পরিচয়- এ কিশোরী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার পাইকোড় তলা গ্রামের  মেয়ে।তার বাবাও দেশজুড়ে আলোচিত ব্যক্তি। তিনি হলেন জামাত নেতা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৩ আসনের সাংসদ পদপ্রার্থী নুরুল ইসলাম বুলবুল।সে ঢাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রি।তার তিন ভাই-বোনের সে সবার ছোট।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তার বাবা জামাত নেতা বুলবুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৩ আসনের সাংসদ পদপ্রার্থী ছিলো। সে সময় জায়মা নূর তার বাবার জন্য নির্বাচনি প্রচারণার জন্য গান গেয়ে আলোচনায় এসেছিলো।সে সময় জেলাবাসীর মন জয় করেছিলো।

জায়মা নূরের কন্ঠে উল্লেখযোগ্য ইসলামি সংগিত- রহমতের বৃষ্টি, বাবা, পর্দা, কার চোখে এতো মায়া, রাসূল তুমি আলোক শিখা, তোমার নামে মধুর গানে, মাছরাঙ্গা, খাদিজার মতো জীবন গড়ো, হাত তুলেছি, সেই রেল লাইনের ধারে, তোমার কাছে এসেছি, যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে, তাঁর ভালোবাসা, মুহাম্মাদ এই একটি নামে, খুশির সওগাত, মন ভোমরা, এছাড়া ও সে আরোও ইসলামি সংগিত গেয়েছেন।

জায়মা নূর সুত্র মারফত জানান- আমি বড় হয়ে মানুষের উপকার করতে চাই।আমার কন্ঠে আমি সর্বদা সত্যের কথা বলতে চাই।কাউকে নিন্দা করে আমি আমার কন্ঠে গান গাইতে চাইনা।আমার জন্য দোআ করতে বলবেন আমার প্রাণের চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাসীকে।

 

আলোচিত গানের লিংকটি দেয়া হলো- https://www.youtube.com/watch?v=b9kSKlxY3_8

Apr 14, 2021

এক ঝলক

এক ঝলক


ছবিগুলো তোলা হয়েছে; চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ী এলাকার  আলিসাহস পুর এলাকার মহানন্দা নদীর পাড়ে। 



চিত্র: ২


চিত্র: ৩

চিত্র: ৪

চিত্র: ৫

চিত্র: ৬

চিত্র: ৭

Apr 13, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জের যে নদীতে গোসল করে দু-দেশের বাসিন্দা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের যে নদীতে গোসল করে দু-দেশের বাসিন্দা


নদীতে গোসল করছে কজন ওরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাটের মহানন্দা নদীতে ভারতের মালদা জেলার আইহো থানার শুকনগর এলাকার লোকজন। অপর দিকে এ পারে ভোলাহাটের গোহালবাড়ী,আলীসাহসপুর,বজরাটেক,মুন্সি-গঞ্জ এলাকার লোকজন গোসল করে। সরজমিনে গিয়ে এ দৃশ্যটি দেখা যায়।

স্হানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়; দীর্ঘ দিন থেকে এপারের আর ঐপারের বাসিন্দারা এ নদীতে গোসল করে আসছে। তাদের বলা কথায় শোনা গেছে; ঐ ভারতের শুকনগরে অনেকের আত্মীয় আছে; গোসল করতে আসলে একে অপরের স্বজনদের সাথে দেখা মিলে।

আলিসাহস পুর এলাকার স্হানীয় বাসিন্দা শাহনাজ খাতুন। তিনি জানান; আমি দীর্ঘদিন থেকে এ দৃশ্য দেখে আসছি। বিজিবি অথবা বিএসএফ থেকে কোন ঝামেলাও হয় না। যে যার মতো করে গোসল করে,কাপড় ধোলায় করে। ভালোই লাগে এ দৃশ্যটি।

স্হানীয় একজন কৃষক আলী আকবর। তিনি জানান;অনেক ধানী জমি আছে এ নদীর পাড়ে। ধান আবাদ করলে এ সময় আমরা নদীর মাধ্যমে পানি ব্যবস্থা করে থাকি। ঠিক আমার জমির পাশের ভারতীয় একজনের জমি আছে; তার আবাদী জমিতে পানি প্রয়োজন হলে এ নদী থেকে পানি নেয়।

গোহালবাড়ী ইউপি সদস্য নাজমুল শাহ ইয়ারুল। তিনি জানান; এখানে বিজিবি বিএসএফের কোন হয়রানী নাই। আমিও এ নদীতে গোসল করি। সবাই আনন্দ উপভোগ করেন।

গোহালবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আঃ কাদের জানান; এ দৃশ্যটি উপভোগ করার মতো। আমাকে বেশ দারুণ লাগে।

Apr 11, 2021

বিয়ে করলে কি বিসিএস পরীক্ষা দেয়া যায়?

বিয়ে করলে কি বিসিএস পরীক্ষা দেয়া যায়?


বাংলাদেশে সরকারি চাকরিগুলোর মধ্যে কিছু চাকরিতে বিবাহিত প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা নেই। কিন্তু বিসিএস এমন একটি চাকরি পরীক্ষা যেখানে আপনাকে কতগুলো নিয়মনীতির উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা দিতে হবে। যেমন,

১/ ন্যূনতম স্নাতক পাশ এবং স্নাতকের সর্বনিম্ন ফলাফল ২.৫০।

২/ সার্টিফিকেটের বয়স অবশ্যই ৩০-এর মধ্যে হতে হবে।

৩/ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে বিসিএস-এর চিন্তা মাথা থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। আরও কিছু বিষয়াবলি আছে যদিও

এবার উত্তরে আসি; পূর্বে বলেছি, সার্টিফিকেটের বয়স ৩০ এর মধ্যে হলে আপনি যতবার ইচ্ছে পরীক্ষা দিতে পারবেন এবং বিবাহিত কী অবিবাহিত তাতে কোন সমস্যা নেই। এমনো বিসিএস ক্যাডার রয়েছে যারা বিবাহিত জীবনে সন্তান-সন্তানাদি থাকা পরও বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সফল হয়েছে। যদি ইচ্ছে থাকে অদম্য, তাহলে বিবাহিত বা অবিবাহিত যা-ই হোক না কেন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

 

Apr 2, 2021

তিনে পা

তিনে পা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সর্বাধিক পঠিত অনলাইন পোর্টাল আমার চাঁপাই। দুবছর শেষ করে তিন বছরে পা দিয়েছে। দৈনিক লাক্ষাধিক পাঠকের আস্থা আমার চাঁপাই নামক অনলাইন পোর্টালটির। গত ৩ মাস থেকে এলেক্সা রাঙ্কিং এ জেলার অনলাইন পোর্টাল গুলোর মধ্যে  প্রথমস্থান দখল করে রেখেছে ।


 ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রয়ারী। প্রথম যাত্রা শুরু করে। বলে রাখা ভালো; এ পোর্টালটির কয়েক বার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমে হারঘে লবগঞ্জ নামে যাত্রা শুরু করে। ইচ্ছা ছিলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা। এ আঞ্চলিক ভাষায় সংবাদ লিখতে গিয়ে কতৃপক্ষ সময়ের গুরুত্ব ভেবে নাম পরিবর্তন করে। নাম দেয়া হয় আমাদের চাঁপাই। এ নামে যখন পোর্টালটির ডোমেইন ক্রয় করা হলো; নাম বড় হয়ে যাওয়াসহ অনিবার্য কারণবশত ফের নাম পরিবর্তন করার উদ্যেগ নেয়। নাম পরিবর্তন করে রাখা হলো " আমার চাঁপাই"।শুরু থেকে আজ অবধি আমার চাঁপাই নামক অনলাই পোর্টালে জেলার সংবাদ প্রকাশিত করা হয়েছে প্রায় দু-হাজার।

চাঁপাই দর্পণের স্টাফ রিপোর্টার টুটুল রবিউলের সাথে আমার চাঁপাই'র পাবলিশার মেহেদী হাসান শিয়াম যায় বালিয়াডাঙ্গায়। সুত্র খবর দিয়েছিলো বালিয়াডাঙ্গার পিয়ারাপুরে নিজ ভাইয়ের নির্যাতনের শিকার ছোট বোন। জমি জায়গার জের ধরে ছোট বনের বাড়ির দরজা অবরুদ্ধ করে রাখে বড় ভাই। সংবাদটি প্রকাশিত হয় আমার চাঁপাই পোর্টালে। সদর উপজেলার সাবেক ইউএনও আলমগীর সংবাদটি পড়ে। সেই ছোট বোনের দরজায় করা ইটের দালান ভেঙ্গে আসে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে সে পরিবারটি মুক্তি পায়। তখনও নজরে রাখে আমার চাঁপাই'র পাবলিশার শিয়াম। গোপন সুত্রধরে খবর আসে; সরকার গরিব রিক্সাচালকদের রিক্সা দিবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় পাবে ৪জন। সেই ছোট বনের জামাই (বর)  রিক্সাচালক। তাকে রিক্সা নিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে। পরে তাকে ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে রিক্সা দেয়া হয় সরকার থেকে।

 শিবগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে প্রকাশ্যে চলছিলো মাদক ব্যবসা। এ মর্মে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় আমার চাঁপাই অনলাইন পোর্টালে। ৭দিনের মাথায় অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ীকে ৬৭ বোতল ফেন্সিডিল সহ আটক করে ডিবি পুলিশ। তার দেড় বছরের কারাদণ্ড হয়। এখনো সে কারাভোগ করছে।

আমার চাঁপাই পোর্টালে "বাদাম বিক্রি করে চলেই জীবন" এ শিরনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ঐ মহিলা বাদাম বিক্রি করে বারোঘরিয়া ব্রিজের উপর। ৫৩ বিজিবি চেকপোস্টের পাশে। স্বামী মৃত্যুতে সংসার না চলার করানে বাদাম বিক্রি করে। তার ছেলে গৌড়। সেও নতুন বাড়ি করেছে। তার মাকেও বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পর জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ ঐ মহিলার মুঠোফন নাম্বার নিয়ে; জেলা প্রসাশক নিজেই মুঠোফনে যোগাযোগ করেন। একদিন ডিসি তার অফিসে আসতে বলেন সেই বাদাম বিক্রেতা মহিলাকে। ডিসির সাক্ষাৎ পেয়ে; ঐ মহিলা একটি বাড়ির আবদার করেন। আমনুরায় নির্মাণাধীন  গুচ্ছগ্রামে জেলা প্রশাসক তাকে বাড়ি দেয়ার আশ্বাস দেয়। এরকম উল্লেখযোগ্য আরোও ঘটনা আছে। 

আমার চাঁপাইয়ে প্রকাশিত সকল সংবাদ নির্ভূল করার চেষ্টা করে প্রকাশিত করে। বিশেষ করে বানান। তারপরে বাক্য গঠনে। কোন গণমাধ্যম কর্মীরা সেচ্ছায় বানান ভুল করেনা। আমার চাঁপাই অনলাইন পোর্টালে বানান ভূল হয়ে থাকে। সে সকল ভূল ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার চাঁপাই তিনে পা দিয়ছে। তাই আমার চাঁপাই নতুন প্রতিজ্ঞা নিয়ে ফের পথ চলবে। সঠিক ঘটনা,আর বানান নির্ভূলে বেশ নজর রাখবে আমার চাঁপাই' প্রকাশনা মন্ডলীরা।

 


Mar 24, 2021

আমের গুটি ঝরা রোধ করতে চাইলে

আমের গুটি ঝরা রোধ করতে চাইলে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম চাষিদের জন্য চলতি মৌসুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সময় অনেক চাষিকে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। এরমধ্যে আমের গুটি ঝরা অন্যতম। আম গাছে গুটি আসার পর নানা কারণে তা ঝরে যায়। তাই এসব কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে হবে।


প্রাকৃতিক কারণ: আম গাছে প্রতি মুকুলে ১ হাজার থেকে ৬ হাজারটি পর্যন্ত পুরুষ ও স্ত্রী ফুল থাকে। তারমধ্যে প্রাথমিকভাবে প্রতি থোকায় জাতভেদে এক থেকে ৩০টি আমের গুটি ধরতে দেখা যায়। গুটি আসার ২৫-৫০ দিনের মধ্যে প্রতি থোকায় মাত্র এক-দু’টি গুটি থাকে। বাকি গুটি প্রাকৃতিক বা অভ্যন্তরীণ কারণে ঝরে যায়। তবে কোন কোন মুকুলে চার-পাঁচটি আম ধরতে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে আমের আকার ছোট হয়। 

প্রতিকার: অতিরিক্ত গুটি ঝরে না পড়লে আমের আকার ছোট হয়। ফলে আমের গুণগতমান ও ফলন কমে যায়। প্রতিটি মুকুলে একটি করে গুটি থাকলে সে বছর আমের বাম্পার ফলন হয়। তবে প্রতি মুকুলে আমের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ফুল ফোটার ১০-২০ দিন পর দুইবার দশ লিটার পানিতে ৬ গ্রাম হারে বোরিক অ্যাসিড স্প্রে করলে ভালো হয়। এছাড়া সব ফুল ফোটা অবস্থায় জিবেরেলিক অ্যাসিড প্রতি লিটার পানিতে ৫০ মিলিগ্রাম হারে স্প্রে করলে আমের গুটি ঝরা কমে যায়।

মাটিতে রসের অভাব: মাটিতে রসের অভাব হলেও আমের গুটি ঝরে যায়। আমের বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল মাসে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মাটিতে রসের অভাব দেখা দেয়। মাটিতে রসের অভাব হলে আমের বোঁটায় তাড়াতাড়ি নির্মোচন স্তর গঠিত হয়। ফলে আমের গুটি ঝরে যায়।

 প্রতিকার: মাটিতে রসের অভাবে আমের গুটি ঝরে গেলে গাছের চারপাশে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। আমের গুটি মটরদানার মতো হলেই প্রথমে একবার গাছের গোড়ায় পানি সেচ দিতে হবে। প্রথম সেচ দেওয়ার পর থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ত ১৫ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। সেচের পাশাপাশি হরমোন প্রয়োগ করেও আমের গুটি ঝরা কমানো যায়। আমের গুটি মটরদানার মতো হলে প্রতি লিটার পানিতে ২০ গ্রাম ইউরিয়া সার অথবা প্রতি ৪.৫ লিটার পানিতে দুই মিলিলিটার হারে প্লানোফিক্স হরমোন পানিতে মিশিয়ে হালকা সূর্যের আলোয় আমের গুটিতে স্প্রে করলে গুটি ঝরা কমে যায়।

পোকার আক্রমণ: গুটি আসার পর প্রাথমিক পর্যায়ে আমের গুটিতে হপার পোকার আক্রমণ হতে পারে। এ পোকার পূর্ণবয়স্ক মথ ও কিড়া গুটির রস শোষণ করে খায়, ফলে আমের গুটি শুকিয়ে ঝরে যায়। 

প্রতিকার: গুটি মটরদানার মতো হলেই কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক একসাথে পানিতে মিশিয়ে গুটিতে স্প্রে করতে হবে। কীটনাশকের মধ্যে সাইপরমেথ্রিন ১০ ইসি বা ল্যামডা সাই হ্যালাথ্রিন ২.৫ ইসি বা ফেন ভেলারেট ২০ ইসি গ্রুপের যে কোন একটি কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে এক মিলিলিটার হারে এবং ছত্রাকনাশকের মধ্যে মেনকোজেব ৮০ ডচ গ্রুপের যে কোন একটি প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম হারে একসাথে মিশিয়ে গুটিতে স্প্রে করতে হবে।

ফল ছিদ্রকারী পোকা: আমের গুটি মার্বেল আকৃতির হলে ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ হতে পরে। এ ক্ষেত্রে পূর্ণবয়স্ক পোকা আমের নিচের অংশে খোসার ওপরে ডিম পাড়ে। কয়েক দিনের মধ্যে ডিম ফুটে লার্ভা বের হয় এবং লার্ভা খুব ছোট বিন্দুর মতো ছিদ্র করে আমের ভেতর ঢুকে পড়ে। প্রথমে শাঁস ও পরে আঁটি খাওয়া শুরু করে। পরে আক্রান্ত স্থান কালো হয়ে যায় এবং কোনো কোনো সময় আম ঝরে পড়ে। 

প্রতিকার: এ সমস্যা দেখা দিলে আমবাগান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এমনকি গাছের মরা ডালপালা ছেঁটে ফেলতে হবে।

Mar 21, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ফের দেখা মিললো বায়োস্কোপ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ফের দেখা মিললো বায়োস্কোপ

বায়োস্কোপ দেখছে আমার চাঁপাই’র প্রতিবেদকি এমরান বাবু

জলবিহীন নদীর যেমন তরঙ্গ নেই, তেমনি বিনোদনবিহীন মানুষের জীবনও নিস্তরঙ্গ। মানুষের জীবনে বিনোদনের জন্য তরঙ্গ তৈরি করার অনেক মাধ্যম রয়েছে; বিশেষ করে বাঙালির জীবনে বিনোদনের মাধ্যমও সমৃদ্ধ- যার একটির নাম বায়োস্কোপ। বায়োস্কোপ নিয়ে চমৎকার একটি গান রয়েছে: ‘তোমার বাড়ির রঙের মেলায়/দেখেছিলাম বায়োস্কোপ/বায়োস্কোপের নেশা আমায় ছাড়ে না।’ গতকাল শনিবার (২০ মার্চ) জেলার  রহনপুরে এ বায়োস্কোপের দেখা মেলে। রহনপুরের মুক্তমহাদলের ৪০ বছর পূর্তি এক উৎসব অনুষ্ঠানে।


মনে পড়ে, সেই ছোটবেলার কথা। উনিশশ নব্বয়ের দশক। তখন আমার জন্মগ্রামে থাকি। গ্রামটি ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের দূর্লভপুর ইউনিয়নের ঘুঘু ডাংঙ্গা। ধুলাওড়া, পাখি ডাকা, ছায়াঘেরা, অভাবী মানুষদের গ্রাম। আমাদের বাড়িরপাশেই ধুলোময় সড়ক। সড়ক ধরে মানুষের পাশাপাশি গরুর গাড়ি, মোষের গাড়ি,পালকি, বাইসাইকেল চলত। হয়ত বসে আছি ঘরের জানালার পাশে; হঠাৎই শুনতে পেলাম-‘কী চমৎকার দেখা গেল/ রহিম-রূপবান আইসা গেল/ ঢাকা শহর দেখেন ভালো/ কী চমৎকার দেখা গেল।’ অথবা ‘ওই দেখা যায়, কেমন মজা/ দ্যাখেন, তবে মক্কা-মদিনা/ তার পরেতে মধুবালা/ এক্কা গাড়িতে উত্তম-সুচিত্রা।’ এই আওয়াজ শোনার সঙ্গে সঙ্গে ঘর থেকে লাফ দিয়ে এক দৌড়ে রাস্তায় গিয়ে উঠতাম। সচক্ষে দেখতাম একজন লোক এক হাতে খঞ্জনি, অন্য হাতে লাল কাপড় নিয়ে ছন্দভরা বাক্যে অবিরাম বলে যাচ্ছেন। সঙ্গে রয়েছে একটি কাঠের বাক্স যেটির নাম বায়োস্কোপ। এই বায়োস্কোপ দেখা কি যে আনন্দের!

বায়োস্কোপ একটি বাক্স, যার বাইরে দিয়ে মুড়ির টিনের মতো একাধিক খুপড়ি বা একটি জানালার মতো জায়গা, যেখানে চোখ লাগিয়ে দেখতে হয়। চোখ মেললেই বাক্সের ভিতর দেখা যায়- দূরের দিল্লি শহর, মক্কা-মদিনা নগরী, রাম-লক্ষণের যুদ্ধ, ক্ষুদিরামের ফাঁসি, আফগানের যুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ অনেক ঘটনাবহুল রঙিন ছবি, যা দর্শকপ্রাণে শিহরণ জাগায়, অন্য রকম অনুভূতির সঞ্চার করে। বিশেষ করে শিশুদের চিত্ত বিনোদনের আধুনিক মাধ্যম ছিল এটি।

তখন গ্রামে নানা ধরনের মেলা বসত। বিশেষ করে বৈশাখী মেলা। এটিই সবচেয়ে বড় মেলা। মেলায় নানা রকম খাবার-দাবার, মাটির, বাঁশের এবং অন্যান্য নানান ধরনের জিনিসপত্রের দোকান থাকত। আর মেলার সবচেয়ে আকষর্ণীয় বিনোদন ছিল, নানা রকমের খেলা। যেমন ষাঁড়ের দৌড়, ঘোড়ার দৌড়, লাঠিখেলা, সাপখেলা, বানরখেলা, পুতুল নাচনাগরদোলা ইত্যাদি। দেখা যেতো মেলার এক কোণায় বায়োস্কোপওয়ালা তার চিরাচরিত আওয়াজ দিয়ে দর্শকদের ডাকছেন, ছড়া-ছন্দে বলছেন আকর্ষণীয় বাক্য আর দেখিয়ে যাচ্ছেন বাক্সের ভিতরের রঙিন ছবি। খঞ্জনি আর গানের তালে তালে বাক্সের ভেতরেও পাল্টে যায় ছবি। আর তা দেখে যেন গল্পের জগতে হারিয়ে যায় ছেলে বুড়ো সবাই। এ কারণে দর্শক ভিড় জমায় চতুর্দিকে। একজনের পর একজন; এক পয়সা, দুই পয়সা কিংবা তিন পয়সা দিয়ে দেখছে। ঘাড় নিচু করে, কোমার বাঁকিয়ে, দুই চোখের দুই পাশে দুই হাত রেখে কয়েক মিনিট ধরে একটানা দেখছে দিল্লি, ঢাকা, মুজিব, মক্কা-মদীনা আর কান দিয়ে শুনছেবায়োস্কোপওয়ালার ছান্দসিক বাক্য-এই দ্যাখেন ভাই ঢাকা শহর, এই দ্যাখেন ভাই দিল্লি ইত্যাদি।

এই যে দেখা, এর মজা আলাদা! বাংলার গ্রামীণ নিস্তরঙ্গ জীবনের বায়োস্কোপ নানা বয়সের মানুষকে আনন্দ দিতো, আলোড়িত করতো সেই সময়। তবে গ্রামেই শুধু নয়, নগর জীবনেও বায়োস্কোপ আনন্দ দান করতো। আধুনিক ঢাকার যারা গোড়াপত্তন করেন, সেই নওয়াবদের বাড়িতেও বায়োস্কোপ দেখানো হতো। তাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে বায়োস্কোপের রূপছায়াময় বিবরণ পাওয়া যায়। সেই সময়কার ঢাকায় নানা ধরনের মেলা হতো, খেলাধুলা হতো এবং বায়োস্কোপও হতো।

পত্রিকার তথ্য মোতাবেক জানা যায়, কলকাতার একটি স্বদেশী মেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, যেখানে বায়োস্কোপ ছিল দর্শকদের জন্য। সেটি ১৯৩১ সালের কথা। সে-বছর ১৬ অক্টোবর ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায় এ উপলক্ষ্যে বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছিল। বিজ্ঞাপনের ভাষা ছিল এরকম: ‘স্বদেশী মেলা/ ৩৭ নং বহুবাজার স্ট্রীট (শিয়ালদহ)/ অদ্য কবি সম্রাট রবীন্দ্রনাথের শুভ পদার্পণ হইবে। অদ্য শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর/ মেলা বিকাল ৩টায় খুলিবে/ ৬টায় ম্যাজিক/ ৭টায় থট্ রিডিং ও ভেন্ট্রিলাকুইজম।/৮টায় বায়স্কোপ/ প্রবেশ মূল্য তিন আনা।’

আবার দেখি, কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘গৃহদাহ’ উপন্যাসের এক জায়গায় বলেছেন, ‘দিন বারো কাটিয়া গিয়াছে। কেদারবাবুর ভাবগতিক দেখিয়া মনে হয়, এত স্ফূর্তি বুঝি তাঁহার যুবা বয়সেও ছিল না, আজ সন্ধ্যার প্রাক্কালে বায়োস্কোপ দেখিয়া ফিরিবার পথে গোলদীঘির কাছাকাছি আসিয়া তিনি হঠাৎ গাড়ি হইতে নামিতে উদ্যত হইয়া বলিলেন, সুরেশ, আমি এইটুকু হেঁটে সমাজে যাব বাবা, তোমরা বাড়ি যাও, বলিয়া হাতের ছড়িটা ঘুরাইতে বেগে চলিয়া গেলেন।’

এই যে রবীন্দ্র-শরৎয়ের কালেও বায়োস্কোপের স্বর্ণযুগ ছিল, সেই বায়োস্কোপ বাঙালির প্রাণের মাধ্যম। বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদের মানুষের। সুতরাং এর সাথে এ অঞ্চলের মানুষদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই। গ্রামীণ প্রবীণ ব্যক্তিদের তো নয়ই। তখন জনপদজুড়ে নানা বিনোদনের আয়োজনে মানুষ মুখর ছিল। নতুন প্রজন্মের মানুষের কাছে বিশেষ করে যারা শহরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী জীবনযাপন করে অভ্যস্ত কিংবা যাদের জন্ম এইমাত্র একযুগ আগে তাদের কাছে হয়তো হাস্যকর এক বোকা বাক্স মনে হবে। কিন্তু বায়োস্কোপ মোটেও হাস্যকর কোনো বস্তু ছিল না কিংবা ছিল না কোনো বোকা বাক্স! প্রকৃতপক্ষে বায়োস্কোপ গ্রামবাংলার সিনেমা হল। রং-বেরঙের কাপড় পরে, হাতে ঝুনঝুনি বাজিয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচিত ধারা বর্ণনা করতে করতে ছুটে চলত গ্রামের স্কুল কিংবা সরু রাস্তা ধরে। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো তার পেছন পেছন বিভোর স্বপ্ন নিয়ে দৌড়াত গ্রামের ছেলেমেয়েরা। বায়োস্কোপওয়ালার এমন ছন্দময় ধারা বর্ণনায় আকর্ষিত হয়ে ঘর ছেড়ে গ্রামের নারী-পুরুষ ছুটে আসত বায়োস্কোপের কাছে। একসাথে সবাই ভিড় জমালেও তিন কী চারজনের বেশি দেখতে না পারায় অপেক্ষা করতে হতো অন্যদের। সিনেমা হলের মতো এক শো, এরপর আবার আরো তিন বা চারজন নিয়ে শুরু হতো বায়োস্কোপ। বায়োস্কোপ দেখানো শুরু করলেই ‘কী চমৎকার দেখা গেল’ বলে ফের শুরু হতো বায়োস্কোপওয়ালার ধারাবিবরণী। আর এই বায়োস্কোপ দেখানোর বিনিময়ে দুই মুঠো চাল কিংবা দুই টাকা নিয়েই মহাখুশি হয়ে ফিরে যেত বায়োস্কোপওয়ালা।

এই যে প্রত্যন্ত গ্রাম এবং নগরজুড়ে এক সময় প্রচলন ছিল বায়োস্কোপের, যেটি কাঠের বাক্সে চোখ লাগিয়ে গানের তালে ছবি দেখার দৃশ্য নগরজীবনে এখন আর চোখেই পড়ে না। বায়োস্কোপ, বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের এক নাম। বর্তমান সময়ে গ্রামবাংলায় বায়োস্কোপ এমনই বিরল যে, জাদুঘরে রেখে দেয়ার জন্যও অন্তত একটি বায়োস্কোপ কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে বাংলার বিনোদনের এই লোকজ মাধ্যম। টিভি আর আকাশ সংস্কৃতি স্যাটেলাইটের সহজলভ্যতার কারণে আপনা-আপনি উঠে গেছে বায়োস্কোপ। বাংলাদেশেও আকাশ সংস্কৃতির দাপট এখন। ফলে সংস্কৃতি ও বিনোদন এই চিরচেনা মাধ্যম বায়োস্কোপ থাকলেও এটিকে দেখার সুযোগ হয়ে ওঠেনি নতুন প্রজন্মের। কারণ আধুনিক প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের ফলে বিনোদন মাধ্যমগুলো প্রত্যেকের হাতের মুঠোয় চলে আসায় বায়োস্কোপের কলাকুশলী এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। এ পেশার সাথে জড়িত যারা মাঠে ঘাটে প্রাচীন বায়োস্কোপ ব্যবসা নিয়ে ঘুরে বেড়াতো তাঁরা এখন হারিয়ে গেছে। আধুনিক যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে এই ব্যবসার কদর নেই। মেলায় বসলেও অনেকে চেনেন না বায়োস্কোপ কি জিনিস। আগামী প্রজন্ম হয়তো জানবেনা বায়োস্কোপ কি ছিল? কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে বায়োস্কোপ; নতুন প্রজন্ম শুনবে বায়োস্কোপের গল্প।

আজকাল প্রযুক্তির কৃত্রিমতার কাছে অনেক কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। এই হারিয়ে যাওয়া শৈল্পিক ঐতিহ্য রক্ষায় প্রয়োজন সময়োপযোগী পদক্ষেপ। গ্রামবাংলার সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে বায়োস্কোপ দেখানোর উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে নতুন করে। এখন আমরা সবাই অনেক সামনে এগিয়ে এসেছি সময়ের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে, কিন্তু পেছনে ফেলে এসেছি আমাদের ঐতিহ্য। গুরুজনেরা যে জিনিসটি দেখে আনন্দ পেতেন আমাদের মতো বয়সে, সেই জিনিসের কথা শুনলে আমরা এখন হেসে উড়িয়ে দেই।  এভাবেই কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে অতীতের সেই বোকা বাক্স যা এক সময় বাংলার শিশু, কিশোর, নারী, বৃদ্ধসহ সকলের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল। অথচ এখন জাদুঘরে রাখার জন্যও কোনো বায়োস্কোপের সন্ধান পাওয়া যাবে না। ভরদুপুরের আলস্য ভাঙাতে কাউকে চিৎকার করে বলে উঠতে শুনি না-কি চমৎকার দেখা গেল!

বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম হিসেবে আমরা কি বাংলার ঐতিহ্যগুলোকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে পারি না? হয়তো পারি না। কিন্তু আজও, আমাদের বাবা-মা এই বয়সে এসেও টের পান তাঁদের বুকের গভীরে কোথায় যেন অমলিন রয়ে গেছে সেই রঙিন ছবিগুলো। টুকরো টুকরো অনেক ছবি ভেসে ওঠে তাঁদের চোখে। একসাথে অনেকগুলো ছেলেমেয়ের জটলা। উৎসুক হয়ে বসে আছে তারা। চারটি আয়নায় চোখ লাগিয়ে শিশু-বুড়ো সব বয়সী মানুষ ছবি দেখার দৃশ্য উপভোগ করছে। সঙ্গে সেই চিরচেনা আওয়াজ- কি চমৎকার দেখা গেল। তাঁরা আনমনে রাস্তায় চলতে চলতে আজও কোনো কিশোরের মুখে ভো-কাট্টা শুনে চমকে যান। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখেন কাটা ঘুড়ি ভেসে ভেসে যাচ্ছে। তাঁরাও যেন চলেন ঘুড়ির সঙ্গে। এক সময় পৌঁছে যান মেলার সেই মাঠে। যেখানে রয়েছে বায়োস্কোপ। যেখানে বানরওলা সজোরে ডুগডুগি বাজিয়ে খেলা দেখাচ্ছে।

কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে বাংলাদেশের বিনোদনের এই লোকজ মাধ্যম। তবুও কোথাও না কোথাও দু’একজন রয়ে গেছে। সেই দু’একজন অকেজো হিসেবে ছুড়ে দেননি বায়োস্কোপকে। জড়িয়ে ধরে রেখেছেন সন্তানের মতো। মানুষ আজ বায়োস্কোপ না দেখলেও যখনই তার মন চায় তিনি গ্রামের সরু রাস্তা ধরে বায়োস্কোপ নিয়ে ছুটে চলেন। তিনি জানেন এখন আর কেউ টাকা দিয়ে দেখবে না, তারপরও তিনি বায়োস্কোপ নিয়ে বের হন। আবার দু’একজন আছেন যারা নির্দিষ্ট মৌসুম ছাড়া বায়োস্কোপ দেখান না। পেশা বদল করে প্রায় সবাই অন্য পেশা গ্রহণ করেছেন। রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ এমন একটি কি দুটি জেলায় দু’একজন আছেন। এদের মধ্যে রাজশাহীর আবদুল জলিল মণ্ডল একজন। তিনি রাজশাহী জেলার বাঘমারা থানার চায়ের শারা গ্রামের মৃত বকশি মণ্ডলের ছেলে। বাবা বকশি মণ্ডল ৪০ বছর এ পেশায় জড়িত ছিলেন। বাবার উত্তরসূরি হিসেবে ১০-১২ বছর বয়সে তিনি এ পেশায় আসেন। এরই মধ্যে ৩০ বছর পার করেছেন তিনি। এ পেশার রোজগার দিয়ে দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে কোনো রকমে তার দিন চলে যাচ্ছে। বায়োস্কোপ পেশায় তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করেন। একটা সময় ছিল যখন গ্রামগঞ্জের পথেঘাটে হাটবাজারে তিনি ও তার বাবা বায়োস্কোপ দেখিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছেন। তখন ধান, চাল ও অর্থের বিনিময়ে বায়োস্কোপ দেখাতেন। বায়োস্কোপ দেখানোর বিষয়বস্তুতে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে বিভিন্ন প্রেমকাহিনী, তারপর যুদ্ধ, বিশ্বের দর্শনীয় স্থান, ধর্মীয় বিষয় ও রাষ্ট্রনায়কদের নিয়ে বায়োস্কোপ দেখানো হতো। এজন্য তাদের অনেক বেশি জানতে হয়। তারপর সেটা দেখানোর সময় এক এক করে ছন্দ মিলিয়ে বলতে হয়। তাহলেই দর্শক বায়োস্কোপ দেখতে আগ্রহী হয়। তার বাক্সে একসাথে ছয়জন দর্শক বায়োস্কোপ দেখতে পারে। তাঁর কাছে জানা যায়- এখন ঘরে ঘরে টেলিভিশন ও হাতে মোবাইল ফোন চলে আসায়, আগের মতো আর এর প্রতি দর্শকের চাহিদা নেই। তবে অনেকেই কৌতূহল নিয়ে এটি দেখতে এগিয়ে আসেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন মেলায় বায়োস্কোপ প্রদর্শন করেন।

এক যুগ আগেও বায়োস্কোপের যে জৌলুশ ছিল, প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় তা আজ বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু জলিল মণ্ডল অকেজো জিনিস হিসেবে ছুড়ে ফেলেননি বায়োস্কোপকে। জড়িয়ে ধরে রেখেছেন সন্তানের মতো। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নীল দেশের সক্ষমতা অর্জন করেছে। ফাইভ জিতে যাচ্ছে কয়েক মাসের মধ্যে, এমতাবস্থায় অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রযুক্তির মহাসড়কে হাঁটা অবস্থায় পুরনো বিনোদন মাধ্যম কি টিকে থাকবে? যেখানে মানুষের হাতে হাতে ডিভাইস, যে ডিভাইসের মাধ্যমে সেকেন্ডে সেকেন্ডে দেখছে পৃথিরীর সব এবং সব। সেখানে বায়োস্কোপের কাল শেষ! শেষ নয় কি? প্রশ্ন শেষ হতে দেয়া কি ঠিক? নতুন আঙ্গিকে, নতুন মাত্রায় বাংলার নিজস্ব এই বিনোদন মাধ্যম বায়োস্কোপকে সকলের প্রচেষ্টায় টিকিয়ে রাখা দরকার।

লেকক: মেহেদী হাসান শিয়াম
এডমিন&পাবলিসার
আমার চাঁপাই

Mar 20, 2021

 দুটি পিঁপড়ে মুখোমুখি হলে যা করে

দুটি পিঁপড়ে মুখোমুখি হলে যা করে


দুটি পিঁপড়ে মুখোমুখি হলে তারা থমকে দাঁড়ায় সেটা সবার জানা। কিন্তু থমকে দাঁড়িয়ে তারা কী করে জানেন? অনেকেই হয়তো শুনে থাকবেন যে পিঁপড়েরা একে অপরের গায়ের গন্ধ শোঁকে কিন্তু কেন জানেন? পিঁপড়েরা একটি কলোনির মতো একসঙ্গে থাকে এবং অত্যন্ত পরিশ্রমী হওয়ার পাশাপাশি তারা খুবই দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন। খাবার জোগাড় করলে তারা সেই খাবার বাসায় নিয়ে গিয়ে সকলের সঙ্গে ভাগ করে তবে খায়। এই এক একটি বাসা হলো এক একটি পেরেন্ট নেস্ট।

একটি পেরেন্ট নেস্ট-এর সঙ্গে অপর পেরেন্ট নেস্টের কিন্তু রেষারেষি। অনেকটা এক পাড়ার সঙ্গে অন্য পাড়ার যা হয়। দুটি পিঁপড়ে মুখোমুখি হলে তারা একে অপরের গায়ের গন্ধ শুঁকে বোঝার চেষ্টা করে যে অন্য পিঁপড়েটি তার নিজের নেস্ট-এর কি না। যদি তা হয় তবে কেউ কাউকে না ঘাঁটিয়ে নিজের পথ ধরে। কিন্তু যদি দেখা যায় যে অন্য পিঁপড়েটি অন্য নেস্ট-এর, তবে তারা জমিয়ে মারপিট করে এবং সে মারামারি কিন্তু মরণপণ। একজন চেষ্টা করে অন্যজনকে মেরেই ফেলতে।

এই জন্যই খেয়াল করে দেখবেন কোনো কোনো সময় দুটি পিঁপড়ে মুখোমুখি হয়েই এগিয়ে যায়। আবার কিছু সময় তারা বেশ কয়েক সেকেন্ড মুখোমুখি থাকে এবং ক্রমশ শুঁড়ে শুঁড়ে লাঠালাঠি করে। পিঁপড়ের তলপেটে ফেরোমোন গ্ল্যান্ড থাকে এবং এই গ্ল্যান্ড থেকে নিঃসৃত হরমোনের গন্ধ থেকেই তারা শনাক্ত করে তাদের গোষ্ঠীর সহ-পিঁপড়েদের আর গন্ধটা একটু সন্দেহজনক হলেই ব্যস।

Mar 17, 2021

আমার চাঁপাই’র সম্পাদকের মায়ের দাফন সমম্পন্ন

আমার চাঁপাই’র সম্পাদকের মায়ের দাফন সমম্পন্ন


আমার চাঁপাই’র সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক আখতারুজ্জামানের মা মিলি মাহফুজা মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টা ৫০ মিনিটে  (১৭মার্চ) পৌর এলাকার শিবতলার নিজস্ব বাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)

আজ ১৭ মার্চ বুধবার বেলা ১১টার সম রেহাইচর গোরস্থানে জানাজা শেষে সেখানেই দাফন সম্পন্ন হয়। মরহুমা বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি মারা যান। মরহুমা মিলি মাহফুজা মৃত্যু কালে অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমার মৃত্যুতে আমার চাঁপাই’র প্রকাশনা কমিটির সদস্যরা গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

Mar 9, 2021

মানব সেবায় রহনপুরে খাবার বিতরণ

মানব সেবায় রহনপুরে খাবার বিতরণ

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি 
প্রায় ৪০ দিন ধরে অব্যাহতভাবে রাতের খাবার বিতরণ করে চলেছেন “২০-২১ মানবতার সেবায় রহনপুর” ফেরিওয়ালা সংগঠনটি। হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের সঙ্গে থাকা আত্মীয়- স্বজন,ঘুরে বেড়ানো ভবঘুরে ছিন্নমূল মানুষদের হাতে প্রতিদিন রাতের খাবার তুলে দেন এ সংগঠনটি। 

প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাতে মানবসেবার এ ফেরিওয়ালা সংগঠনটি রহনপুরস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত রোগীদের সঙ্গে থাকা আত্মীয়- স্বজনের কাছে খাবার বিতরণ করেন। এ সময় সংগঠনটির আহবায়ক ও পৌর কাউন্সির মোস্তাফিজুর রহমান জেম, মহন্ত মহারাজ ক্ষিতিশ চন্দ্র আচারি, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মেসবাউল হক,সংগঠনের সদস্য তৌহিদ খান, রিফাত জামান, সুমন, আমিনুল ইসলাম আমিন ও অনু সাহা উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনটির আহ্বায়ক কাউন্সিলর মোস্তাফিজুর রহমান জেম বলেন,অব্যাহতভাবে মানবসেবায় কাজ করে যেতে চাই এ সংসঠনটি। প্রায় ৪০ দিন ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগী ও স্বজনকে খাবার দেয়াসহ রহনপুর পৌর এলাকার ভবঘুরে ও ছিন্নমূলদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে । এ কার্যক্রম আগামীতে অব্যহত রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। (০১৩২২৩৩৩৫২২ বিকাশ, নগদ, রকেট ) সংগঠনের এ নাম্বারে পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

Mar 4, 2021

ভোলাহাট ইউএনও'র ভালোবাসার গল্প

ভোলাহাট ইউএনও'র ভালোবাসার গল্প


চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার বাসিন্দাদের অর্শিবাদ নিয়ে এসেছে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মশিউর রহমান। তার উজ্জল প্রমাণ দিলো আবার। এতিম শিশুটির ইচ্ছা পূর্ণ করলো সেই নির্বাহী অফিসার মশিউর।


ভোলাহাট সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দ ইয়াহিয়া। সে মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। বেশ কদিন আগে জটিল রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছে তার বাবা। শিশু ইয়াহিয়ার শখ ছিলো একটি লাল রংয়ের বাইসাইকেল চালানো । বাবাতো নাই; তার স্বপ্ন পূর্ণ করবে কে? সে শিশুটি তার মাকে বলে বাইসাইকেলের কথা। মায়ের কাছে সামর্থ্য না থাকায় স্বপ্ন পূর্ণ করতে পারেনি ছেলেটি। হাঠাৎ তার স্বপ্নের কথাটি সোসিয়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া স্বপ্নের কথাটি জানতে পারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মশিউর রহমান। 

ইউএনও মশিউর তার নিজস্ব অর্থায়নে একটি লাল রংয়ের বাইসাইকেল কিনে দিলো বাবা হারা ছেলে টিকে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে বাইসাইকেলটি ইয়াহিয়াকে উপহার দেওয়া হয়। স্বপ্নটাও পূর্ণ হয় মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইয়াহিয়ার। ছেলেটি লাল রংয়ের বাইসাইকেল পেয়ে আনন্দিত হয়ে তার মুখের চেহারা উল্লাসে মেতে উঠলো। তার মা সালেহা (ছদ্মনাম) আনন্দে ইউএনও মশিউরের হন্য বিধাতার কাছে দোয়ার করলো।

এ বিষয়ে আমার চাঁপাই'র এডমিন মেহেদী হাসান শিয়ামকে ইউএনও মশিউর জানান; ছেলেটাকে আমার বড্ড পছন্দ হয়েছে। আমি আমার জায়গা থেকে বাবা হারা ছেলেটার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমার ভালো লাগার জায়গা থেকে আমি তাকে বাইসাইকেলটি উপহার দিয়েছি।
উপহার দেয়াকালে উপস্থিত ছিলেন; ভোলাহাট উপজেলার চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুন,ভোলাহাট উপজেলার সমাজ সেবা অফিসার নাসিম উদ্দিন প্রমুখ।

Mar 2, 2021

দেশ স্বাধীন হলেও ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি চাঁপাইয়ের মুক্তিযোদ্ধা শ্যাম মুর্মুর

দেশ স্বাধীন হলেও ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি চাঁপাইয়ের মুক্তিযোদ্ধা শ্যাম মুর্মুর


চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জলাহার। এই গ্রামেই বসবাস করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যাম মুর্মু। ২০ বছর বয়সে দেশকে হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করার প্রত্যয়ে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। তবে, দেশকে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে মুক্ত করলেও চরম দারিদ্রতার মধ্যে বাস করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। ছিমছাম গড়নের শ্যাম মুর্মুর বয়স এখন বয়স ৬৯ বছর। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম ১৯৫২ সালের ২৭ ডিসেম্বর। বসবাস করেন মাটির তৈরি টিনের একটি বাড়িতে।  বাড়িটিও তার মতোই জীর্ণ-শীর্ণ।

তিনি জানান, যুদ্ধ শুরু হলে গ্রামের অন্যান্যদের মতো পরিবারের সঙ্গে চলে যান ভারতের মালদহ জেলার সিংগাবাদে। যাওয়ার আগে তিনি দেখেছিলেন- তার গ্রামের দুই সাঁওতাল তরুণীকে লাঞ্ছিত করেছিল রাজাকাররা। তখন থেকেই প্রতিশোধের বারুদ জন্মেছিল তার মনের মধ্যে। বুকের সেই বারুদ দাবানলের মত জ্বলে ওঠে সিংগাবাদ শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া শ্যাম মুর্মুর। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতারা শরণার্থী শিবির যান তাদের দেখতে। তখনই তাদের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার আগ্রহের কথা জানান শ্যাম মুর্মু। তারা শ্যাম মুর্মুকে মালদহ ডাক বাংলোয় দেখা করতে বলেন। এরপর তিনি প্রথমে মালদহের গৌড় বাগান তারপর শিলিগুড়িতে প্রশিক্ষণ নেন। 

প্রশিক্ষণ শেষে সাত নং সেক্টরের অধীনে সীমান্তসংলগ্ন মহদীপুর ক্যাম্পে যোগ দেন। মহদীপুর ঠিক সোনামসজিদ স্থল বন্দরের বিপরীতে। সেই ক্যাম্পে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আড়গাড়াহাট, সদর উপজেলার পোড়াগাঁ, আমনুরা এবং ভোলাহাট উপজেলার দলদলিসহ কয়েকটি স্থানে বিজয়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মুখোমুখি লড়াই করেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। দিনমজুর হিসেবে অন্যের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন আর শারীরিক সক্ষমতা আগের মতো নেই। বেশ কিছুদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, কানেও কম শোনেন এখন। তার সন্তানদের মধ্যে- ছোট ছেলে পলিটেকনিক থেকে পাশ করেছেন। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। অন্য দুই ছেলেও দিনমজুরের কাজ করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পেলেও সংসার চালাতে তা যথেষ্ট নয়। তাই কোনো রকমে দিন চলে যায় তার। নিজে কষ্টে থেকেও স্বপ্ন দেখেন দেশ যেন ভালো থাকে। মানুষের মধ্যে যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকেসদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের প্রাক্তন প্রচার সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শ্যাম মুর্মুকে যুদ্ধের সময় থেকেই চিনি। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে বেশ কয়েকটি বড় লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিংগু মুর্মু বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শ্যাম মুর্মু  শুধু সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জন্য নয়, এই এলাকার সব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য গর্বের। তিনি আমাদের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে পাশে থেকেছেন এবং পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।’


Feb 26, 2021

একসাথে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড

একসাথে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড

 


জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন ও ইংল্যান্ডের মিনিস্টার অফ স্টেট ফর বিজনেস, এনার্জি এন্ড ক্লিন গ্রোথ এন মেরি ট্রেভেলিয়ানের সঙ্গে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড একযোগে কাজ করার বিষয়ে অঙ্গীকার করেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় দুজন বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন। এ সময় বাংলাদেশের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। আলোচনাকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রোকনুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একসাথে কাজ করতে হবে। মন্ত্রী এসময় উন্নত দেশ হিসেবে প্যারিস এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নে যুক্তরাজ্যের অধিকতর সহযোগিতা কামনা করেন।

বনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ইংল্যান্ড বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকেই ইংল্যান্ড বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে।

জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে বনমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ‘ক্লাইমেট ভালনারেবলিটি ফোরাম’ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়াও গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপটেশন-এর আঞ্চলিক অফিস ঢাকায় স্থাপনের ফলে এ বিষয়ক কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে।

সভায় ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য মিনিস্ট্রিয়াল ইভেন্টে আমন্ত্রণের জন্য পরিবেশ মন্ত্রী ব্রিটিশ স্টেট মিনিস্টার ফর বিজনেস, এনার্জি এন্ড ক্লিন গ্রোথ এন মেরি ট্রেভেলিয়ানকে ধন্যবাদ জানান। সভায় দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে দুদেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর করার বিষয়েও দুজন একমত পোষণ করেন।

সুখবরের অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ

সুখবরের অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ

 জাতিসংঘের কাছ থেকে আরেকবার সুখবরের অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারে আজ জাতিসংঘ। সংস্থাটির কমিটি ফর ডেভেলপম্যান্ট পলিসির (সিডিপি) পর্যালোচনা সভা চলছে। এ সভাতেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে যাবে না এলডিসি থাকবে সে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।


জাতিসংঘের এ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি জানান, সিডিপির (ভার্চুয়াল) সভা চলছে।

বাংলাদেশের উত্তরণের বিষয়ে শুক্রবার সিদ্ধান্ত আসবে। 

সূত্রগুলো জানায়, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করে। ওই সময় জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) জানিয়েছিল,  উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য বিবেচ্য মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এ তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে তা ছয় বছর ধরে রাখতে হবে। তিন বছর পরপর পর্যালোচনা করা হবে। তিন বছর পর সিডিপির সেই ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা শেষ হবে আজ শুক্রবার। সংশ্লিষ্টরা জানান, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেও আরও তিন বছর পর্যবেক্ষণে থাকবে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা দেওয়া হবে। এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ এখন যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা, ওষুধ খাতে সুবিধা, মেধাস্বত্ব সুবিধাসহ যেসব সুবিধা পাচ্ছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার হবে। তবে করোনা মহামারীর কারণে বাংলাদেশ প্রস্তাব দিয়েছে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের এ প্রস্তুতিকাল আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত করার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) প্রফেসর শামসুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা আশা করছি বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সিদ্ধান্ত দেবে সিডিপি। তবে প্রস্তুতিপর্বের সময় দুই বছর বাড়ানো হয় কিনা, সে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। এটি হলে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।

হাইটেক পার্কে আশার ঝলক

হাইটেক পার্কে আশার ঝলক

 


করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও দেশের হাইটেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগের ঢল নেমেছে। মহামারিকালেও ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি নির্মাণ শিল্পের উদ্যোক্তারা গাজীপুরের কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করছেন।

এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ উপযোগী হওয়া দেশের সাতটি হাইটেক পার্কের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে করোনাকালে বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে ৬৬১ কোটি টাকার। এ ছাড়া ওরিক্স বায়োটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান ৩০০ মিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার ৫৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। এই পার্কে এ পর্যন্ত ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এক হাজার ১১৭.৫৮ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে।

অন্য ছয়টি হাইটেক পার্কেও আশানুরূপ বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ওয়ালটন, র্যাংগস, ফেয়ার ইলেকট্রনিকস, ভিশন, কেডিএস, নাজডাক টেকনোলজিস, এলিয়ন ইন্টারন্যাশনাল, বিজনেস অটোমেশন, জেআর এন্টারপ্রাইজ ও বিজেআইটির মতো বড় দেশীয় গ্রুপের পাশাপাশি বিদেশি বিভিন্ন কম্পানির বিনিয়োগ এসেছে। কম্পানিগুলো এই পার্কে মোবাইল ফোন সংযোজন ও উৎপাদন, অপটিক্যাল কেবল, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ডাটা সেন্টারসহ উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুতের নিশ্চয়তা, মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিতে একগুচ্ছ শুল্কমুক্ত সুবিধার কারণে এই হাইটেক পার্কে বিনিয়োগে ঝুঁকছেন উদ্যোক্তারা।

কালিয়াকৈরের হাইটেক সিটিতে বিপুল চাহিদা থাকলেও প্লট প্রায় শেষের দিকে। সে কারণে উদ্যোক্তাদের জায়গা দিতে বিভাগীয় শহরসহ দেশের ৩৯ জেলায় হাইটেক পার্ক গড়ে তুলছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।

প্রযুক্তি বিশ্বের রাজধানী খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিকে সবাই এক নামে চেনে। প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা বৈশ্বিক কম্পানিগুলোর বেশির ভাগের সদর দপ্তর সেখানেই। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গুগল, অ্যাপল, ফেসবুক, টুইটার, ইয়াহু, অ্যাডব, ইবে, নেটফ্লিক্স, সিসকো, পেপ্যাল, ইন্টেল, এইচপি, ইউটিউব, উবার, প্যান্ডোরা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

কয়েকটি প্রযুক্তি সংস্থা বলেছে, বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি বিনিয়োগকারীদের গন্তব্য প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। উচ্চ শুল্ক, আবাসন ও কার্যালয় ভবনের জন্য খরচ বেশি হওয়ার কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান সিলিকন ভ্যালি ছাড়তে চায়। এদের কেউ কেউ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তাদের উৎপাদনকেন্দ্র স্থানান্তর করতে শুরু করেছে। এ ছাড়া চীনভিত্তিক বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও কারখানা স্থানান্তর করছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ বলছে, এসব বিনিয়োগ যাতে বাংলাদেশে আসে সে জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সিলিকন ভ্যালির উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক সিলিকন ভ্যালিতে ইন্টেল ও ম্যাকসকেন ভেঞ্চারের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করে তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশে ৩৯টি হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ভারতের ঋণ সহায়তায় ১২টি হাইটেক পার্ক হবে। বর্তমানে সাতটি হাইটেক পার্ক বিনিয়োগের উপযুক্ত অবস্থায় আছে। এগুলো হচ্ছে কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি, ঢাকায় জনতা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, সিলেটে বঙ্গবন্ু্ল শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক, চট্টগ্রামে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, নাটোরে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, রাজশাহীতে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। দেশের বিভিন্ন পার্কে এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কালিয়াকৈরে ৩৩৫ একরের দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি বাস্তবায়িত হচ্ছে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে ‘সাপোর্ট টু ডেভেলপমেন্ট অব কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক’ প্রকল্পের আওতায় অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পার্কটিকে পাঁচটি ব্লকে ভাগ করে প্রশাসনিক ভবন, হাসপাতাল, কাস্টম হাউস, স্কুল-কলেজ, ব্যাংক, শপিং মল, আবাসিক এলাকা, শিল্প এলাকা, কনভেনশন সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে কালিয়াকৈর পার্কের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ নিশ্চিত করতে একটি রেলস্টেশন স্থাপন ও শাটল ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে।

এরই মধ্যে সেখানে ৪৮টি কম্পানিকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উৎপাদনে রয়েছে ১৪টি কম্পানি।

জানা গেছে, করোনা শুরুর পর মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ১৭টি কম্পানির কাছ থেকে ৭৭.৭৭ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে, যা টাকার অঙ্কে ৬৬১ কোটি। একই সঙ্গে সাত হাজার ৮৮৯ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান বিজনেস অটোমেশন কিয়স্কসহ ডাটা সফট আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) যন্ত্রাংশ তৈরি করছে। ওরিক্স বায়োটেক আসছে মার্চ থেকে বায়োটেকনোলজি পণ্য উৎপাদনের কাজ শুরু করবে। তারা ৩০০ মিলিয়ন ডলার পরিমাণ বিনিয়োগ করবে পাঁচ থেকে দশ বছরে। এ ছাড়া সোনার বাংলা ফাউন্ডেশন কিডনি ডায়ালিসিসের যন্ত্রপাতি উৎপাদন করছে। সম্প্রতি কোরিয়ার বিখ্যাত অটোমোবাইল ব্র্যান্ড হুন্দাই বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে কারখানা স্থাপনে ছয় একর জমি নিয়েছে।

ফেয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অটোমোবাইল শিল্পে প্রযুক্তি হস্তান্তর, মানবসম্পদ বিকাশ ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই আমাদের লক্ষ্য। শিগগিরই আমরা হুন্দাইয়ের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং সরকারের নীতি সহায়তায় উৎপাদনভিত্তিক কারখানা স্থাপন করব।’

জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা শ্রমনির্ভর থেকে জ্ঞাননির্ভর জাতিতে পরিণত হতে চলেছি। পৃথিবীতে যে বিশাল জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে, আমরা তার অংশীদার হতে চাই। নতুন ধরনের এই অর্থনীতিতে প্রবেশের মাধ্যমে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সরকার সারা দেশে হাইটেক পার্ক নির্মাণসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে দেশের প্রায় সকল ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি, যা শিগগিরই গ্রামের ঘরে ঘরে চলে যাবে। এর ফলে দেশের স্বল্প শিক্ষিত তরুণরাও নিজ এলাকায় বসে বিদেশি কম্পানির কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবে।’

২০১০ সালে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়। এরপর কালিয়াকৈরে ৩৫৫ একর জমির ওপর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি তৈরির কাজ শুরু হয়। এর কাজ প্রায় শেষের পথে।

জানা গেছে, বিনিয়োগকারীদের জায়গা দিতে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির পাশেই গড়ে তোলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি-২। প্রায় ৩৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে।

চট্টগ্রামেও তৈরি হচ্ছে চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্মিত সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের ৬-১১ তলা নির্মাণ করে তৈরি হচ্ছে চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। এরই মধ্যে পার্কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই এটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ারকে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে রূপান্তর করা হয়েছে। নতুন উদ্যোক্তাদের সুযোগ সৃষ্টি করতে সরকারের এই আয়োজন। বর্তমানে ১৫টি প্রতিষ্ঠান সেখানে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আছে স্টার্ট-আপদের জন্য বিশেষ বরাদ্দের ফ্লোর।

সিলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক নির্মাণ করছে সরকার। সিলেটে ১৬২.৮৩ একর জমিতে পিপিপি মডেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। এই পার্ককে বিশেষায়িত ইলেকট্রনিক সিটি হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর।

যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর চালু হয়েছে। অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে এই পার্কে।

রাজশাহীর পবার নবীনগরে গড়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক। ৩১ একর জমিতে দুই লাখ বর্গফুটের মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হবে এ বছরের জুন মাসে।

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হাইটেক পার্কে কম্পানিগুলোর জন্য সরকার বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১০ বছর কর মওকুফ, পার্ক ডেভেলপারের জন্য ১২ বছর পর্যন্ত কর মওকুফ, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি শুল্ক মওকুফ, প্রতিটি হাইটেক পার্ককে ওয়্যারহাউস স্টেশন হিসেবে বিবেচনা করাসহ নানা সুবিধা। এ জন্য কমপক্ষে এক কোটি ডলার বা প্রায় ৮৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। পার্কে বরাদ্দ পাওয়া প্লটের ভাড়া হিসেবে বছরে প্রতি বর্গমিটারে দুই ডলার করে দিতে হবে কম্পানিগুলোকে।

বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হাইটেক পার্কে আমরা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পেরেছি। বড় বড় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কম্পানির বিনিয়োগ এসেছে। অনেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে; যার ফলে এখানে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

পাবনার খবর

Feb 23, 2021

রহনপুরে মানবতার সেবায় খাবার বিতরণ

রহনপুরে মানবতার সেবায় খাবার বিতরণ


গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ
গত ১৭ দিন ধরে অব্যাহতভাবে রাতের খাবার বিতরণ করে চলেছেন “২০২০-২১ মানবতার সেবায় রহনপুর” ফেরিওয়ালা সংগঠনটি। হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের সঙ্গে থাকা আত্মীয়- স্বজন,ঘুরে বেড়ানো ভবঘুরে ছিন্নমূল মানুষদের হাতে প্রতিদিন রাতের খাবার তুলে দেন এ সংগঠনটি। প্রতিদিনের ন্যায় গত সোমবার রাতে মানবসেবার এ ফেরিওয়ালা সংগঠনটি রহনপুরস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত রোগীদের সঙ্গে থাকা আত্মীয়- স্বজনের কাছে খাবার বিতরণ করেন।

এ সময় সংগঠনটির আহবায়ক ও পৌর কাউন্সির মোস্তাফিজুর রহমান জেম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা.নাসিরউদ্দীন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মেসবাউল হক,উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আতিকুল ইসলাম আজম,সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আহমদ, সহ সভাপতি শফিকুল ইসলাম,সহ সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন বিশ্বাস, সদস্য দেলোয়ার হোসেন রনি, এমরান আলী বাবুসসহ সাংবাদিক নাহিদ ইসলাম ও শাহিন আলম,সংগঠনের সদস্য তৌহিদ খান,আমিনুল ইসলাম আমিন ও অনু সাহা উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনটির আহ্বায়ক কাউন্সিলর মোস্তাফিজুর রহমান জেম বলেন,অব্যাহতভাবে মানবসেবায় কাজ করে যেতে চাই এ সংসঠনটি। গত ১৭দিন ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগী ও স্বজনকে খাবার দেয়াসহ রহনপুর পৌর এলাকার ভবঘুরে ও ছিন্নমূলদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে । এ কার্যক্রম আগামীতে অব্যহত রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। (০১৩২২৩৩৩৫২২ বিকাশ, নগদ, রকেট ) সংগঠনের এ নাম্বারে পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।


Feb 16, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢাকা পোস্ট'র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢাকা পোস্ট'র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন


"সত্যের সাথে সন্ধি" এই স্লোগানকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল "ঢাকা পোস্ট"। 

মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সকালে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কেট কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকা পোস্ট'র চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হুদা অলক, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ডা. গোলাম রাব্বানী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মনিরুল ইসলাম। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাক আহমেদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম, জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ আতিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন আখতার। 

আরো উপস্থিত ছিলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামাল সুকরানা, মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান, দেনিক গৌড় বাংলা'র বার্তা সম্পাদক সাজিদ তৌহিদ, দৈনিক চাঁপাই চিত্র'র নির্বাহী সম্পাদক ওয়ালিউজ্জামান রুবেল, লাল সবুজের কন্ঠ'র প্রধান প্রতিবেদক ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির জেলা প্রতিনিধি ফয়সাল মাহমুদ, চাঁপাই চিত্র'র নিজস্ব প্রতিবেদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী, আমার চাঁপাই'র এডমিন পাবলিশার মেহেদী হাসান শিয়াম,সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক লেলিন প্রামানিক, স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন স্পর্শ ও বাঁধন'র সদস্য ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী এবং জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

এসময় বক্তারা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায়, মুক্তিযুদ্ধের শক্তিতে বিশ্বাসী ঢাকা পোস্ট দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও সমাজের বিভিন্ন দুর্নীতি, দুঃশাসন, অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে এসব বিষয় তুলে আনবে ঢাকা পোস্ট। মূলধারার খবর পরিবেশনের পাশাপাশি ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের প্রতি গুরুত্ব দেন অতিথিবৃন্দ। 

সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে ঢাকা পোস্ট এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন, আর্দশ হাফেজিয়া মাদরাসার পরিচালক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুল মতিন। পরে কেক কাটেন অতিথিবৃন্দ। শেষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন থেকে একটি র‍্যালী শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।