Mar 18, 2022

আমের রাজ্যে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা




আমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আমের রাজধানীতে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। গত বছরের ক্ষতি পুষিতে নিতে এবার আম গাছের পরিচর্যায় বেশ মনযোগী হয়েছেন বাগান মালিকরা। বাগান পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরাও পেয়েছে নতুন কর্মস্থল। তারাও নতুন কর্মস্থল পেয়ে আনন্দিত। বাগান মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া মজুরি দিয়ে সংসারের দুঃখ দূর হবে বলে আশাবাদী শ্রমিকরা। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সুত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে আম ২ লাখ ৭৭ হাজার ৬২২ বিঘায় মোট ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৪০ টি আম গাছ চাষাবাদ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার ৩০ হাজার ৯১১ বিঘা বেশি জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এ মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৮ হাজার ৪৭০ দশমিক ৫ বিঘা, শিবগঞ্জে ১ লাখ ৫২ হাজার ১৪ দশমিক ৫ বিঘা, গোমস্তাপুরে ৩১ হাজার ৫২৩ দশমিক ৪ বিঘা, নাচেলের ২৮ হাজার ২৭৩ দশমিক ৯৫ বিঘা, ভোলাহাট উপজেলায় ২৭হাজার ৩৪০ দশমিক ২ বিঘা জমিতে আম গাছ চাষাবাদ হচ্ছে।

সদর উপজেলার ইসলামপুরে ২৪ বিঘার একটি বাগান কিনেছেন মুনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, গত বারের চেয়ে এবার আম উৎপাদনের জন্য দিয়ে মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি। গতবছরে জলবায়ুর কারণে আমের মুকুল ফুটার সময় বৃষ্টি হয় নি। এছাড়াও করোনার প্রাদূর্ভাবের কারণে অন্য জেলার ব্যাপারীরা আম কিনতে আসতে পারেনি। ফলে আমের মৌসুমের প্রথম দিকে আমের দাম পাওয়া যায়নি। অনেক লোকসান হয়েছে। এবার করোনার মধ্যে আমের বাজারদর যেন না কমে এদিক দিয়ে আম সংশ্লিষ্টরা খেয়াল রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শিবগঞ্জের আরেক আম বাগানি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এবারের মৌসুমের প্রথম দিক থেকে আবহাওয়া ভালো আছে। ফলে গতবারের চেয়ে এবার আম ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।  আমের ফলন ভালো হলে গত বছরের লোকসানের টাকা গুলো এবার পুষিয়ে নেয়া যাবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ  সদর উপজেলার ঝিলিম এলাকায় একটি বাগানে আমের গাছে কিটনাষক প্রয়োগ করছিলেন সাইফুল, গোলাম রাব্বানি, সোহেল, আব্দুল আজিম। তারা জানান, করোনায় অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কাজ ছিলোনা, ধার দেনা করে আমাদের সংসার চালাতে হয়েছে। এমন কী বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে সংসারে ব্যয় করতে হয়েছে। এখন আমরা কাজ পেয়েছি। প্রত্যেকেই প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করি। সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন কাজ থাকে। এমন করে কাজের গতি চলতে থাকলে, ধার আর লোনের টাকা গুলো শোধ করা যাবে। তবেইতো নিতে পারবো স্বস্থির নিঃশ্বাস।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, বর্তমানে আমের গাছগুলো শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি মুকুল এসেছে। এবারের মৌসুমে ৩৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন। আবহওয়া ভালো থাকায় আমের ফলন ভালো হবে বলে আশাবাদি এ কর্মকতা।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কামরুল ইসলাম বলেন, চলচি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে তিন চার ধরে মেঘলা আবহওয়া ছিল। এ সময়ে যে সব মুকুল ফুটেছিলো সেগুলো ঝরে যাওয়ার শঙ্কা ছিলো। কিন্তু পরে আবহাওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় আমের মুকুলের ক্ষতি হয়নি। তবে যে সব গাছে আগাম মুকুল এসেছিল, ওইসব কিছু কিছু গাছের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি আরও বলেছেন, এ সময়ে গাছের সঠিক পরিচর্যা না নিলে, আম গাছে ছত্রাক ভাইরাস বাসা বাঁধতে পারে। কৃষকরা যদি গাছে ছত্রাক নাশক স্প্রে করে তাহলে এ ভারসাস থেকে পরিত্রাণ পাবে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com