লকডাউন আতঙ্কে জেলার বাসিন্দাদের অতিরিক্ত কেনাকাটার কারণে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৪ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। তবে বিধিনিষেদের মধ্যে বাজারে ক্রেতাদের চাপ কমায় দু’দফায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ১৩ টাকা কমে আবার আগের দামে ফিরে গেছে।
পেঁয়াজের দামে এমন উত্থান-পতন লোকসান গুনতে
হচ্ছে বলে দাবি করেছেন খুচরা ও পাইকারি উভয় শ্রেণির ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, দাম বাড়ার
পর পেঁয়াজের বাজার এভাবে হুট করে পড়ে যাবে, তা কেউ ধারণাও করতে পারেননি। আমাদের ধারণা
ছিল- পেঁয়াজের দাম আরও একটু বাড়তে পারে। এ কারণে দাম বাড়ার শুরুতে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী
বাড়তি পরিমাণে পেঁয়াজ কিনে রাখেন।
ব্যবসায়ীরা আরও বলছেন- বাজারে এখন ভালো মানের
হালি পেঁয়াজে ভরপুর। এই পেঁয়াজ দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। দাম কমে যাওয়ার পরও এই ভালো
মানের পেঁয়াজ এখন ক্রেতারা কিনছেন না। কিন্তু যখন দাম বেড়ে যায়, তখন এক শ্রেণির ক্রেতা
পেঁয়াজ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন।
রোববার (১৮ এপ্রিল) জেলার বিভিন্ন বাজারে
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের খুচরা পর্যায়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫
টাকা। আর পাইকারিতে পেঁয়াজ কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯-৩০ টাকা কেজি। গত ৫ এপ্রিল সরকার মহামারি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে প্রথম দফায় এক সপ্তাহের লকডাউন বা বিধিনিষেধ
আরোপের আগে এই দামে বিক্রি হচ্ছিল পেঁয়াজ।
তবে এক সপ্তাহের লকডাউনের ঘোষণা আসার পর
জেলার বাসিন্দারা বাড়তি কেনাকাটা শুরু করলে পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকায় উঠে যায়। এরপর কিছুটা
দাম কমলেও দ্বিতীয় দফায় সরকার এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করলে আবার পেঁয়াজের
দাম বেড়ে কেজি ৪০-৪৫ টাকায় উঠে। এ পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে পেঁয়াজের দাম আবার কমা শুরু
হয়েছে।
জেলা শহরের পুরাতন ব্যবসায়ী আলমগীর । তিনি
বলেন, আমাদের মতো খুচরা ব্যবসায়ীরা খুব বিপদে আছে। লকডাউনের আগে বিক্রি ভালো ছিল। কিন্তু
লকডাউনের মধ্যে বিক্রি কমে গেছে। অথচ এখন রোজা চলছে। রোজায় পেঁয়াজের চাহিদা অন্য সময়ে
তুলনায় অনেক বেশি থাকে। এই করোনা মহামারির মধ্যে সবকিছু ওলট-পালট হয়ে গেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নতুন হাটের ব্যবসায়ী
মো. আলামিন বলেন, কিছুদিন আগে ৪০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কিনতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছিল। এতে
দাম আরও বেড়ে ৪৫ টাকা হয়ে যায়। এখন পেঁয়াজের কেজি ৩৫ টাকা হয়েছে। কিন্তু আগের সেই ক্রেতা
নেই।
শিবগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মুনিরুল। তিনি
বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমেছে তাতে কী হয়েছে। ব্যবসায়ীরা লোকসান গুনেছে, সরকারের তো কিছু
হয়নি। মানুষ কম দামে পেঁয়াজ কিনে খেতে পারছে। আমাদের মতো ব্যবসায়ীরা মরলে কার কী যায়-আসে।’
