Apr 10, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কঠোর দোকানিরা, ক্রেতাদের ঢিলেমি


করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে শপিংমল ও দোকান-পাট খুলে দেয়া হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব মার্কেটের দোকান-পাট খোলার কথা থাকলেও, তা মানছেন না অনেকেই।দোকানিরা কঠোর হলেও, ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ।

শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে জেলার একাধিক মার্কেট ও কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রবেশপথে নিরাপত্তারক্ষীরা হাতে স্যাভলন মিশ্রিত পানি ছিটাচ্ছেন।দোকান গুলোতে নেই সামাজিক দূরত্ব। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক থাকলেও, সেটা অনেকের থুতনির নিচে স্থান পেয়েছে। শর্ত সাপেক্ষে মার্কেট খোলার অনুমতি দেয়ার জন্য সবাই সরকারের প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে দোকানীর। দোকান মালিকরা বলছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলে মার্কেট থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা ।


গত ৫ এপ্রিল ৭ দিনব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর জেলায় ২য় দিনে জেলার বণিক ও মার্কেট সিমিতির লোকেরা প্রতিবাদ সভা করেন।এ সময় তারা বলেন,‘স্বাস্থ্যবিধি মানবো, দোকানপাট খুলবো।’ এমন অবস্থায় শুক্রবার থেকে পাঁচদিন কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শপিংমল খোলা রাখা যাবে বলে ঘোষণা দেয় সরকার।স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন না করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। তবে মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেট ও হাতেগোনা কয়েকটি ফ্যাশন হাউজে প্রবেশ করতে গেলে হাতে ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে স্যাভলন মিশ্রিত পানি।আবার কখনো বোতলে করে কাপড় কাঁচার জেট আর পানি মিশিয়ে ক্রেতাদের হাতে ছেটানো হচ্ছে।

মার্কেটের জুতার ব্যবসায়ী।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, ‘৬ দিন পর আজকে দোকান খুলেছি। আমরা মাস্ক ছাড়া কাউকে দোকানে ঢুকতে দিচ্ছি না।’ক্রেতাদের বারবার বারণ করার পড়েও তারা কথা শুনছেনা।

ফুটপাতের দোকানদার শরিফ আহমেদ। তিনি জানান, ‘দোকান খুলছি ঠিক আছে, তবে বিক্রি তো হয় নাই। আমাদের তো দিনে এনে দিন খাওয়ার অবস্থা। একদিন বিক্রি না হলে পরিবার নিয়ে চলতে কষ্ট হয়।’ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে, মাস্ক পরা নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েরই সমান অনাগ্রহ। এ জন্য তাদের কাছে আছে গরম লাগা, কথা বলতে না পরাসহ নানা অজুহাত।

নিউ মার্কেটে এক ক্রেতাকে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে, তিনি বলেন ‘মাস্ক পরি নাই তো কী হইছে?’ গত একদিনে ৭৪ জন করোনাভাইরাসে মারা গেছেন জানালে তিনি বলেন, ‘মরে যাওয়া ভালো তো!’ তদারকির কেউ নেই

দোকান-মার্কেটে স্বাস্থ্যঝুকি মানা হচ্ছে কি না তা তদারকি করতে দোকান মালিক সমিতি, পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট কারও উপস্থিতি চোখে পড়েনি। এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারছেন অনেক ব্যবসায়ী। তাই তারা নিয়েছেন পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা।

এমনই একজন ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘দোকানের বাইরে রশি টানিয়ে দিয়েছি। বাইরে থেকে বেচাকেনা করছি। কাউকে দোকানের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছি না। মাস্ক ছাড়া কারও কাছে পণ্য বিক্রি করছি না ‘ তিনি বলেন, ‘যারা সামনে থেকে করোনা রোগী দেখেছে বা আত্মীয় স্বজনকে অসুস্থ হতে দেখেছে, একমাত্র তারাই জানে করোনা কতটা ভয়াবহ। ম্যাজিস্ট্রেট আসলে জরিমানা করলে অন্য ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান চালানো সম্ভব। প্রথম দিকেই যদি কার্যকর লকডাউন দিতো, তাহলে পরিস্থিতি এমন হতো না।’

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, সরকারের এমন ‍উদ্যেগকে সাধুবাদ জানিয়েছে দোকানিরা। দোকানিরা যদি করোনা সংক্রোমণ রোধে সরকারকে সাহায্য না করে, সরকার ফের লক ডাউন দিতে বাধ্য। তখন দোকানিদের উপরে আস্থা থাকবেনা সরকার বাহাদুরের।দোকানিরাকে সাফ জানিয়ে দিতে হবে, মাস্ক ছাড়া রকোন পণ্য বিক্রয় করবো না।তাহলে হয়তো কিছুটা করোনা ভাইরাস সংক্রোমণ রোধ করা যাবে।

বণিক ও মার্কেট সমিতির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বরাবরের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব মার্কেটের দোকান-পাট খোলার কথা বলছেন তারা।

সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com