May 18, 2022

উজানের ঢলে ডুবে গেছে ৩ হাজার বিঘা জমির ধান

উজানের ঢলে ডুবে গেছে ৩ হাজার বিঘা জমির ধান


চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় উজানের পানি এসে জমছে পূর্ণভবা নদীতে। ভরা নদীর পানি উপচে হাজার হাজার বিঘা জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শ্রমিক সংকটেও ভুগছেন কৃষকরা। ধানের ফলন ভালো হয়েও, কয়েকশ কৃষকের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে।

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য মতে, উজানের ঢলে পূর্ণভবা নদী ভরে গেছে। নদীর পানি উপচে উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের বিল কুজাইন, ভাটখোর, রোকনপুরগঞ্জ এলাকার প্রায় তিন হাজারেরও বেশি বিঘা জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে আছে।উপজেলায় এবারের বোরো ধানের মৌসুমে ৪১ হাজার ৮৩২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রাধানগর ইউনিয়নে প্রায় ১২ হাজার ৪৭৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। 

রোকুনপুরগঞ্জের এলাকার ধাম চাষি মোসলেম উদ্দিন জানান, বিল কুজাইন এলাকায়  ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলাম। প্রথম থেকে আবহওয়া ভালো হওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে। গত চার-পাঁচ দিন ধরে বিল কুজাইন এলাকার জমিগুলো উজানের ঢলে ডুবে গেছে।

তিনি আরও জানান, আমাদের এলাকার পূর্ণভবা নদীর গভিরতা কম। খুব দ্রুত উজানের ঢলে নদী ভরে গেছে। নদীর পানি উপচে এলাকার সব ফলস ডুবে গেছে। পূর্ণভবা নদী খনন করে গভিরতা বাড়ালে ধান কাটার সময় পেতাম। আফসোস আর থাকতো না।

ধান চাষি মাইনুল ইসলাম জানান, রোকনপুরগঞ্জ এলাকায় আমাদের ছয় ভাইয়ের প্রায় ২০ বিঘা জমিকে ধান চাষাবাদ করেছি। কয়েকদিন ধরে উজানের ঢলে পূর্ণভবা নদীর পানি উপচে এসব এলাকার ধানি জমিগুলোর তলিয়ে গেছে।আর কয়েকদিন মাঠে থাকলে ধান কেটে গোলায় ভরতে পারতাম।

তিনি আরও বলেন, এ খারাপ সময়ে ধান কাটার শ্রমিকও সংকট। আর যারা ধান কাটতে চায়,তারা অনান্য সময়ের চেয়ে পারিশ্রমিক বেশি নিতে চায়। ধানগুলো সঠিক সময়ে না কাটতে পারলে, বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। গতবছরেও জুনের মাসের প্রথম সপ্তাহে উজানের ঢল এলাকায় ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এবার জুনের আগেই এলাকাগুলো ডুবে কয়েকশ কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

রাধানগর ইউপির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফুয়াদ আলী জানান, রাধানগর ইউপির তিন মৌজায় প্রায় তিন হাজার বিঘা জমির কৃষকের ধান ডুবে গেছে। যতদ্রুত সম্ভব এ সমস্যার সমাধানের লক্ষে কৃষি বিভাগসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভির আহমেদ সরকার জানান, উজানের ঢলে তিন এলাকাজুড়ে কয়েকশ কৃষকের প্রায় তিন হাজারেরও বেশি বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কত পরিমাণ জমিন ধান নষ্ট হলো আমরা খুব শিগগির জানতে পারবো।

 

চাঁপাইয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার অনশন, প্রেমিক পলাতক

চাঁপাইয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার অনশন, প্রেমিক পলাতক


চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা অনশন করেছে। অনশনের খবরে প্রেমিক আব্দুল খালেক পলাতক আছে।

প্রেমিক আব্দুল খালেক উপজেলার দূর্লভপুর ইউনিয়নের কালুপুর এলাকার মৃত তোবজুলের ছেলে। তিনি একই উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকার একটি মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে শারিরীক সম্পর্ক করে আসছে।

অনশনে থাকা প্রেমিকা জানান, গত দুবছর ধরে আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক আছে আব্দুল খালেকের। এ সম্পর্কের সুবাদে বিয়ের আশ্বাসে অনেক দিন শারিরীক সম্পর্ক করেছে। আমায় বিয়ে করবে বলেও, বিয়ে করছেনা। আমার পরিবারকেবিয়ে করার জন্য দুবার সময় বেধেছে আব্দুল খালেক। কিন্তু আমার কোন খবর রাখেনি।

আব্দুল খালেকের পরিবারের দাবি, এ মেয়েকে আমরা চিনিনা। এ মেয়ের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই।

আব্দুল খালেককে একাধিকবার মোবাইল ফোন থেকে যোগাযোগ করা হলে, ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে স্থানীয়দের দাবি তার প্রেমিকার অনশনের খবরে সে গা ঢাকা দিয়েছে।

শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহম্মেদ জানান, এ ঘটনায় কেউ থানায় কোন খবর দেয়নি। খবর পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গোদাগাড়ী আসছেন ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা

গোদাগাড়ী আসছেন ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা



গোদাগাড়ী প্রতিনিধি:
রাজশাহী জেলা গোদাগাড়ী উপজেলার লালবাগ হেলিপ্যাড মাঠে ওবাইদিয়া নূরিয়া মারকাজুল উলুম ইসলামীয়া ও হাফিজিয়া মাদরাসার উদ্যোগে আগামী ২১ মে শনিবার বাদ আসর ৬ষ্ঠ তম তাফসির কুরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

তাফসির মাহফিলে সভাপতি শায়েখ আব্দুর রাজ্জাক শালাফীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস। এবং প্রধান বক্তা হিসেবে ওয়াজ করবেন দেশবরেণ্য তরুণ মোটিভেশনাল বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান।

মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ ওবাইদুর রহমানের আয়োজনে মাহফিলে ২য় বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিবগঞ্জ উপজেলার মাওঃ মোঃ আনজারুল ইসলাম। এবং মাহফিলে ইসলামী সংগীত পরিবেশনের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে সুরকার, গীতিকার ও ইসলামী সংগীত শিল্পী ওবাইদুল্লাহ তারেক ও এ্যাড.রোকনুজ্জামান।

ওবাইদিয়া নূরিয়া মারকাজুল উলুম ইসলামীয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামসুজ্জোহা বাবু মাহফিল সফল করার জন্য সকলের সব ধরনের সহযোগিতা কামনা করে সকলকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। এবং তিনি আরও জানান মাহফিলে মহিলাদের বিশেষ পর্দা ও প্রজেক্টরের ব্যবস্থা রয়েছে।

May 14, 2022

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপি'র বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপি'র বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত


বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর ‘সন্ত্রাসী হামলার’ প্রতিবাদে দেশব্যাপী দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সন্ধ্যা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা বিএনপির আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়।


বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে বক্তব্য দেন  জেলা বিএনপি'র আহবায়ক গোলাম জাকারিয়া,জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম (চাইনীজ রফিক), যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম টিপু, বিএনপি নেতা মবিনুর রহমান, সদর উপজেলা  বিএনপি'র আহ্বায়ক ওবায়েদ পাঠান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হাসান শরীফ মোল্লা শনি, জেলা ছাত্রদলের আহ্বয়ক ইউসুফ রেজা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান ইমতিয়াজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিলুর রহমান।

সমাবেশে বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি নেতারা সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন।

May 5, 2022

নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতার শিকার ছাত্রলীগ নেতা

নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতার শিকার ছাত্রলীগ নেতা


চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের রানিহাাটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা রাজু। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (০৫ মে) বিকেলে চকআলমপুর ফিরাঙ্গি পাড়ায় তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।


সংবাদ সম্মেলনে রাজু বলেন, রানিহাটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাকারিয়ার সমর্থন করি আমিসহ আমার পরিবার। এ  বিরোধের জেরে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী রহমত আলী ও তার সর্মথকরা আমার পরিবারকে হয়রানী করছে প্রতিনিয়ত। 

গত রবিবার (০১ মে) দুপুরে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী রহমত আলীর ১৩-১৫ জন লোকজন আমার বাড়িতে হামলা করে। এ সময় বাড়ি থেকে তারা স্বর্ণের একটি মালা, নগদ ৩ লাখ টাকা ও ৩টি মোবাইল লুটপাট করে। এতে আমি ও আমার ভাই বাধা দিতে গেলে আমাদের উপর হামলা করে। দুই হাতের কব্জিতে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আঘাত করে তারা। 

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনা দেখে স্থানীয় জনসাধারণ এগিয়ে আসলে রহমতের লোকজন কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করে। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসা শেষে থানায় অভিযোগ করতে গেলে তা গ্রহণ করেনি পুলিশ। ঘটনার পর চেয়ারম্যানের লোকজন আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।

রানিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী রহমত আলী বলেন, এসব ব্যাপারে আমার কিছু জানা নাই। আমার দলের লোকজন এরকম না। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার-ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে একটি বিস্ফোরক মামলা দায়ের করেছে। তদন্ত চলমান আছে, তাই আর কারো মামলা নেয়া হয়নি।

Apr 30, 2022

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় সাড়ে ৪হাজার জনকে খাদ্য সহায়তা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় সাড়ে ৪হাজার জনকে খাদ্য সহায়তা


পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের হতদরিদ্র, অসহায়-দুস্থ পরিবারের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার  দুপুরে পৌরসভার  চত্বরে এ চাল বিতরণ করা হয়। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র (১) সালেহ উদ্দিন, প্যানেল মেয়র ২ জিয়াউল রহমান আরমান, পৌরসভার উচ্চমান সহকারী গোলাম ফারুক, গোলাম মোস্তফা, কর নির্ধারক খায়রুল ইসলাম, উপজেলা ট্যাগ অফিসার আব্দুল মতিনসহ আরও অনেকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে ৪হাজার ৬২১ জনকে ১০ কেজি করে ৪৬ দশমিক ২১০ মে.টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

Apr 26, 2022

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক পাঠান, সদস্য সচিব সনি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক পাঠান, সদস্য সচিব সনি


চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনটির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে  ওবাইয়েদ পাঠানকে আহবায়ক আর এ্যাড. হাসান শরিফ মোল্লা সনিকে সদস্য সচিব পদে নিযুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (২৫ এপ্রিল) এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম জাকারিয়া, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রফিকুল ইসলাম টিপু, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম (চাইনিজ) ৩ জনের স্বাক্ষরে এ কমিটির অনুমদোন দেয়া হয়।৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করবেন আব্দুল মান্নান চেয়ারম্যান।

 

Apr 24, 2022

৩৪ হাজার বইয়ের পাঠক ২৮ জন

৩৪ হাজার বইয়ের পাঠক ২৮ জন




চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারে বই পড়ার পাঠক নেই।বুকশেল্ফে (বই রাখার তাক) থরে থরে সাজানো বই।সেখানে পাঠকদের জন্য কী নেই।আছে সোফাসহ কাঠের চেয়ার টেবিল। আরও আছে বৈদ্যুতিক বাতি আর পাখা।প্রকৃতির দেয়া আলোর সাথে সুনশান পরিবেশ।কিন্তু যাদের জন্য এই ব্যবস্থা, নেই সেই পাঠক।

এ গ্রন্থাগারটিতে ৩৪ হাজারের বেশি বই থাকলেও পাঠক সংখ্যা দৈনিক ১২ থেকে সর্বোচ্চ ২৮ জন।তাও ফের ওই ২৮ জনের মধ্যে অধিকাংশ পাঠক পত্রিকা পড়তেই বেশি আসে।গত ১২ বছরে গ্রন্থাগারটিতে সদস্য হয়নি আশানুরুপ।২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত সদস্য সংখ্যা মাত্র ১৩১ জন। পাঠকদের বক্তব্য হচ্ছে, গণগ্রন্থাগারে চাকরি প্রত্যাশীদেই বইয়ের সংকট রয়েছে। ইন্টারনেটের ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও এক-দু জনের বেশি ব্যবহার করতে পারেন না।তবে দায়িত্বশীলরা জানালেন, জনবল সংকটের কারণে কোনো রকমে চলছে গ্রন্থাগারটি।

গণ গ্রন্থাগারটির সুত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে চালু হয় জেলার এ গণগ্রন্থাগারটি। ৩৪ হাজারের বেশি বই আছে এখানে।এখানে বসে প্রায় ৬০-৭০ জনের বসে পড়ার ব্যবস্থা আছে।এখানে ১২ টি সংবাদ পত্র পাওয়া যায়।৮ জন জনবলের বিপরীতে আছে মাত্র দুইজন।গ্রন্থাগারিকের মতো প্রধান পদ চলছে গ্রন্থাগার সহকারী দিয়ে।

সরজমিনে একদিন জেলার সরকারি এ গ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা গেলো; শনি থেকে বুধবার পর্যন্ত, সপ্তাহে মোট পাঁচ দিন খোলা থাকে এই গণগ্রন্থাগার। গ্রন্থাগারের ঢুকতেই চোখে পড়লো রেজিস্ট্রার খাতা।খাতাতে চোখ বুলাতে গিয়ে দেখা গেলো সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৬ পর্যন্ত পাঠকের দেখা মিলে ১২ থেকে সর্বোচ্চ ২৮ জন।আগতরা প্রতিদিনই আসেন।এখানে নতুন কোন পাঠকের স্বাক্ষর দেখতে পাওয়া যায়নি।তবে আগতদের বেশির ভাগই চাকরিপ্রত্যাশী অথবা শুধু সংবাদপত্র পড়তে আসেন।এখানে নারি ও শিশুদের পড়ার ব্যবস্থা থাকলেও গত মার্চ মাসে নারি এসেছেন হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন। আর শিশু? তাদের কথা নাই বললাম। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত কোন শিশুর নাম দেখা যায়নি গ্রন্থাগরের ওই রেজিস্ট্রার খাতায়।

দশম শ্রেনীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী স্মরণ।সে তার বন্ধুর সাথে গ্রন্থাগারে বসে ইসলামের ইতিহাস বই পড়ছিল।সে রাইজিংবিডিকে জানাল, বন্ধুদের দেখতাম তারা এ পাঠাগারে পড়তে আসত, তাদের দেখাদেখি আমিও আসা শুরু করলাম।কোচিং প্রাইভেটের কারণে চাপ বেড়েছে।ফলে পাঠাগারে আসার সময় পাওয়া যায় না। সপ্তাহে দুই দিন কোচিং ছুটি থাকে, শুধু মাত্র ছুটির দিন করে পাঠাগারে আসতে পারি।আগে যে বন্ধুরা এখানে পড়তে আসত, তারা এখন সবাই কোচিং আর প্রাইভেট নিয়ে ব্যস্ত।অভিভাবকদের ভিতরে প্রতিযোগিতা বাড়ায়, এখন আর পাঠাগারে কেউই আসতে চাইনা।

মাইনুল ইসলামসহ আরও একজন চাকুরি প্রতাশী জানান, আমাদের এ পাঠাগারে চাকুরি প্রত্যাশিরা বেশি বই পড়তে আসেন।চাকুরির জন্য প্রস্তুতির বই গুলো বাড়ানো দরকার।এখানে পুরানো দুটি সিরিজ আছে।নতুন কোন বই নিয়ে আসেনি, পাঠাগার কতৃপক্ষ।তাদের একাধিকবার বলা হলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা।এছাড়াও এখানে ইন্টারনেট কর্ণার থাকলেও একজনের বেশি ব্যবহার করতে পারেন না।

মইন হাসান নামের এক পাঠক জানান, এ পাঠাগারে এখন পত্রিকা আর জব প্রিপারেশনের জন্য পাঠক আসে।বিশ্বকে জানার জন্য যে বই গুলো আছে, সেগুলো বই পড়ার জন্য কোন পাঠক আসেনা।অল্প বয়সে ভার্চ্যুয়াল জগতে প্রবেশের কারণে নতুন প্রজন্ম একেবারেই গ্রন্থাগার থেকে বিমুখ।এদের গ্রন্থাগারে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।পাঠাগারের পক্ষ থেকে স্কুলে স্কুলে গিয়ে, এ ল্যাইব্রেরীতে আসার জন্য স্পৃহা যোগালে পাঠকের সংখ্যা বাড়তে পারে।

জেলা সরকারি পাঠাগারের গ্রন্থাগার সহকারী গোলাম মোস্তফা রাইজিংবিডিকে জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সরকারি পাঠাগারটিতে ৮জন জনবল থাকার কথা থাকলেও মাত্র ২ জন লোক আছে।পরিছন্নতা কর্মী না থাকায়, আমাদেরকে পাঠাগারের সব কিছু পরিষ্কার করতে হয়।এখানে ৩৪ হাজার বই থাকলেও পাঠকের সংখ্যা একেবারেই কম।পাঠাগারের যারা নিয়মিত আসে, কেবল তারাই আসে।নতুন পাঠকের উপস্থিতি একেবারেই কম।

তিনি আরও জানান, পাঠাগারের যারা সদস্য আছে তাদেরকে ফোন দিয়ে ডাকা হলেও, তারা পাঠাগারে আসতে অনিহা প্রকাশ করে।আমাদের পাঠাগারের উদ্যোগে বছরে ৭টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করি, কেউ আসে, আবার কেউ আসেনা।

জেলা পুলিশের ইফতার মাহফিল

জেলা পুলিশের ইফতার মাহফিল


পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা পুলিশের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ লাইনসে এই দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

দোয়া ও ইফতার মাহফিলে পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব স্বাগত বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন শিবগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, মহিলা সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসি, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুমার শিপন মোদক, সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুর রশিদ, ৫৯ বিজিবির রহনপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আমীর হোসেন মোল্লা, ৫৩ বিজিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সুরুজ মিয়া, শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, নাচোল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, ভোলাহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাব্বুল হেসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ রুহুল আমিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমান,শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মনিরুল ইসলাম, রহনুপর পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান খান, নাচোল পৌরসভার মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু, দৈনিক গৌড় বাংলার সম্পাদক ও প্রকাশক ও প্রয়াস মানিবক উন্নয়ন সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক এবং রেডিও মহানন্দা ৯৮.৮ এফ.এম.এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিব হোসেন, জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইনজীবী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা,  বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আমন্ত্রিত অতিথিগণ।

ইফতারির আগে দোয়া পরিচালনা করেন পুলিশ লাইনস মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. হেদায়েতুল্লাহ। দোয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং জেলা পুলিশের কল্যাণ কামনা করা হয়।

শিগগির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট কাটবে

শিগগির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট কাটবে


প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছেন, আগামি জুনের মধ্যে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট কেটে যাবে। এ জন্য ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন ধাপে শুরু হয়েছে।ইতিমধ্যেই প্রথম ধাপের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আগামি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আরও দুই ধাপে পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। কাজেই জুনের মধ্যে ৪৫ হাজার শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলে; প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে আর শিক্ষক সংকট থাকবে না।

রেবাবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে চাঁপাইনববাগঞ্জ পৌর এলাকার গনকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উদ্বোধন করার এ সময় প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

জেলার ৬৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন উদ্বোধন এবং ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিক্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী বিস্কুটের (টিফিন) ব্যবস্থা করেছেন। যে সব স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখনও টিফিনে বিস্কুট পায়নি; ওই সব স্কুলে আগামি মাসের মধ্যে টিফিনের ব্যবস্থা করা হবে। করোনায় পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের হাজার টাকা করে কিডস অ্যালাউন্স দেয়া হয়েছে। প্রায় সব টাকা দেয়া শেষ। এখনও কিছু কারণে ৮শ কোটি টাকা দেয়া বাকি আছে। খুব শিগগির এসব টাকাগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে দেয়া হবে।

প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে সাজাতে শেখ হাসিনা সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে সোনার বাংলা বির্নিমানে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। দেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ হয়েছে, এখনও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণাধীণ। এতো এতো শিক্ষার অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে, শিক্ষার মান যেন তলানিতে না যায়।

শিক্ষকদেরে উদ্যেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা শিক্ষার্থীদের ভালো করে পড়া লিখা শিখাবেন। আপনাদের যে সব সমস্যা আছে, আমাদের জানাবেন। আমরা আপনাদের দাবিশুনে পূরণের চেষ্টা করবো।

জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিয়াউর রহমান, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ, সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, নারী সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, জেলা পুলিশ সুপার একেএম আব্দুর রকিব,  চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও ইফফাত জাহানসহ আরও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষাকাবৃন্দরা। পরে  প্রতিমন্ত্র্রী জাকির হোসেন বিদ্যালয়ে গাছে চারা রোপন করেন।

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মামলায় অতিষ্ঠ ৩ পরিবার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মামলায় অতিষ্ঠ ৩ পরিবার


পরিবারিক ভাবেই নিকটাত্মীয় ৮ জন ব্যক্তি।তিনটি পরিবারকে মামলা দিয়ে গাহিল করতে ওই আটজন মিলেই আদালতে করেছেন ৪ মামলা। কিন্তু চার মামলার বাদিই ফের মামলা গুলোর সাক্ষি। আজব হলেও বাস্তব ৩০ বছর পূর্বে মারা যাওয়া ব্যক্তিতে করা হয়েছে সাক্ষি।

তিন পরিবারকে ফাঁসাতে মামলার আসামী করা হয়েছে; চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার চর মাহনপুর দক্ষিন পাড়ার মৃত নৈয়মুদ্দিন মাস্টারের ছেলে রেজাউল ইসলাম রেজা, একই এলাকার মৃত বাক্কার মেম্বারের ছেলে কাবির, মৃত মুনসুর মাস্টারের ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানসহ আরও ৪ জনকে। প্রথম মামলায় সুবিধা না পেয়ে একের পর এক মামলা ঠুকে ওই তিন পরিবারকে হয়রানী করছে ওই ৮ জনের সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা।

মামলার নথিপত্র ও অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে; প্রথম মামলার বাদি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার চরমোহনপুর-জামাইপাড়া এলাকার আজহারের ছেলে মো. দুরুল। বাদি দুরুল এজাহারে বলেছেন, মামলার আসামি রেজাউল ইসলামকে তিনি ১০ লাখ টাকা, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে কাবির আর মিজানকে নগদে ৪০ লাখ এবং একটি বিকাশ মোবাইল নাম্বার থেকে ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন।

রেজাউল ইসলাম লিখিত ভাবে প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ দিয়ে বলেন, মামলার বাদী দুরুল একজন ভূমিহীন খেটে-খাওয়া দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ। গত ৭-৮ বছর ধরে দুরুল সরকারি খাস জমিতে খড়ের ঘরে বসবাস করেন।দুরুল দিন মজুরের কাজ করে কোন রকমের সংসার চালান। পাওনা টাকা শোধ করতে না পারায় তার গাভিও নিয়ে চলে যায় ওই এলাকার তরিকুল ভোলা নামের এক ব্যক্তি। সে আমাদেরকে কেমন করে লাখ লাখ টাকা দিবে।”

রেজাউল বলেন, মামলার বাদি দুরুল এজহারে বলেছেন আসামী কবির আর মিজানকে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৪০ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু যে হিসাব নাম্বারে টাকা পাঠিয়েছে দুরুল, সে আমাদের কারোর নয়। ওই হিসাব নাম্বারটা এম আলী এন্টার প্রাইজের স্বত্তাধিকারী মোহাব্বত আলী নামের এক ভদ্র লোকের। আমাদের সাথে মোহাব্বত আলীর কোন সম্পর্ক নেই।

রেজাউল আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি; মোহাব্বত আলী রাজশাহীতে জমি কিনতে টাকা  দুরুলকে ধার দিয়েছেন।এর প্রমাণ স্বরূপ তাকে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের একটি চেক দেয়াও হয়েছে। সেখানে কোথাও, কোনভাবে আমার, মিজান আর কাবিরের নাম নেই। অথচ তাদেরকে মামলার আসামী করা হয়েছে।

মামলার বাদি দুরুল এজাহারে উল্লেখ করেছেন; একটি বিকাশ নাম্বার থেকে আসামীদেরকে ২০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে ওই বিকাশ নাম্বারটি জেলা সদরের রামচন্দ্রপুর হাট এলাকার আলেয়া বেগম নামের এক মহিলার। কিন্তু সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে ২০ লাখ টাকার লেনদেনের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামী রেজাউল, কাবির ও মিজানের কোন সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। এবং বিউটি, তার পিতা আনারুল ও মা সেমালী বেগমের এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদেরকে অভিযুক্তও করেন ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার বাদি দুরুল আদালতে এ তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নাখোশ হলে, ফের মামলাটি তদন্ত করতে আলাদন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে আদেশ দেন। এখনও মামলাটি তদন্তাধীন আছে।

প্রথম মামলার ৮ মাস পর দ্বিতীয় মামলা করেন প্রথম মামলার সাক্ষি মাসুম। এই মামলায় তিনি রেজাউলকে বিউটির স্বামী হিসেবে উল্লেখ করেন। অথচ বিউটির স্বামী আরেক জন। রেজাউলের স্ত্রী একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফাঁসাতেই এমন তথ্য দেয়া হয়েছে দাবি রেজাউলের।

প্রথম মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও দ্বিতীয় মামলা করে ওই তিন পরিবার গুলোকে যখন হেনস্তা করা যাচ্ছেনা। ফের তখনিই মাসুমের ঘনিষ্ট বন্ধু রুবেল কোর্টে আরেকটি মামলা করেছেন। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী। অথচ এজাহারে রুবেল অভিযোগ করেছেন, তিনবারে আসামীদেরকে ৪০ লাখ টাকা জমি কেনা বাবদ দিয়েছেন। এই মামলার সাক্ষি দ্বিতীয় মামলার বাদি মাসুমও। মামলার ভার কম হওয়ায় ওই তিন পরিবারের জীবনকে দূর্বিষহ করতে আরেকটি মামলা ঠুকেন কৃষক কালাম। এ চার নং মামলার সাক্ষি হলেন, ২য় মামলার বাদি মাসুম আর প্রথম মামলার বাদির ছেলে আসমাউল।

এজাহারে কালামের অভিযোগ, আসামীদেরকে তিনি ১৩ লাখ টাকা ধার দিয়েছেন। অথচ বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিনি বলেছেন, সম্পর্কের খাতিরে তিনি প্রথম মামলার বাদি দুরুলকে টাকা ধার দিয়েছেন। টাকা ধার দিয়েছেন দুরুলকে, অথচ মামলা হয়েছে রেজাউল, কাবির ও মিজানের নামে।

এ বছরের ১৯ মার্চে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেস কাবে চার মামলার বাদিরা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে দাতা সংস্থার পরিচয়ে তাদেরকে আর্থিক সহায়তা পায়য়ে দেয়ার নামে তারেকে কাছে থেকে ৪ কোটি টাকা নেন সংঘবদ্ধ চক্রের আসামিরা। পরে এ ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদালতে ৪ টি মামলা দায়ের করেন তারা। ওই সম্মেলনে মামলার চার জন বাদিরা মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ ঘটনায় স্থানীয় ভাবে একটি শালিশী বৈঠক বসে। এ সময় স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ, বর্তমান কাউন্সিলর ইব্রাহিমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইব্রাহিম বলেন, এ ঘটনায় একটি শালিশী বৈঠক বসে। প্রথম মামলার দুরুল বিউটি নামের এক মহিলাকে ৭০ লাখ টাকা দিয়েছে বলে দাবি করেন। পরে কাউন্সিলর দুরুলকে এ টাকা আয়ের উৎস জানতে জানতে চাইলে তিনি সঠিক অয়ের উৎসের কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

ওই কাউন্সিলর আরও জানান, ওই শালিশী বৈঠকে বিউটি উপস্থিত না হওয়ায় সেদিন কোন সুরাহা হয় নি।আমার জানা মতে এখনও ওই ঘটনা এমনই আছে ।

Mar 30, 2022

 চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাক্স হাসপাতালের ১ম বর্ষ পূর্তি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাক্স হাসপাতালের ১ম বর্ষ পূর্তি


‘সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা’ এ ব্রতকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাক্স হাসপাতালের ১ম বর্ষ পূর্তি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দিনটিকে ঘিরে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। 

এমনকি ডাইলোসিস রোগীদেরও সেবা ফ্রি দেয়া হয়। আর দুপুর ১২ টা থেকে অতিথিদের আগমন ঘটে। এ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের আতিথিয়েতায় মুগ্ধ হন আগত অতিথিরা। এ ধরনের অনুষ্ঠানটি মিলনমেলায় পরিণত হয়। রোগীর সেবায় আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতার প্রত্যয় নিয়ে গতকাল বুধবার দুপুর ১টায় জেলা শহরের মিস্ত্রীপাড়ায় অবস্থিত ম্যাক্স হাসপাতালের ১ম বর্ষ পূর্তি সাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালন করা হয়। 

এ উপলক্ষে হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের পরিচালক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ গোলাম রাব্বানী, পরিচালক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাঃ ইসমাইল হোসেন, পরিচালক শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহফুজুর রায়হান। অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ওমর ফারুক সরোওয়ার হোসেন, দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক তসলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের রফিকুল আলম, জেলা স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাহিদ ইসলাম মুন, ডাঃ সাইফ জামান আনন্দ। পরে, অতিথি, চিকিৎসক, নার্স, পরিচালক ও অন্যান্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কেক কাটা এবং মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়

শিবগঞ্জে ভ্রাম্যমান আদালতে ২০ হাজার টাকা জরিমানা

শিবগঞ্জে ভ্রাম্যমান আদালতে ২০ হাজার টাকা জরিমানা


 চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের পুখুরিয়া এলাকায় ট্রাক, ট্রাক্টর, মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ১৮টি মামলায় ২০ হাজার ৫’শ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার দুপুরে উপজেলার কানসাট পুখুরিয়া এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ভ্রামমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল-রাব্বি। 

তিনি জানান, ট্রাক, ট্রাক্টর, সিএনজি ও মোটরসাইকেল চালকরা মহাসড়কে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া যান চলাচল করে আসছিল-এমন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুরে পুখুরিয়া পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন মহাসড়কে ভ্রামমাণ আদালত পরিচালনা করে সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ ধারায় ১৮টি মামলায় ২০ হাজার ৫'শ  টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। জনস্বার্থে ভবিষতে এ অভিযান অব্যহত থাকবে বলেও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, গত এক মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনে স্কুলছাত্রীসহ প্রাণ হারিয়েছে পাঁচজন।
রমজানে নিত্যপণ্যের দাম না বাড়ানোর আশ্বাস ব্যবসায়ীদের

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম না বাড়ানোর আশ্বাস ব্যবসায়ীদের




চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান বলেছেন, রমজান মাসে জেলার বাজার গুলোতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াবে না ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের সাথে জেলা প্রশাসনের বৈঠক হয়েছে। তারা জেলার বাজারের পণ্যগুলো দাম না বাড়ানো থেকে বিরত থাকবে। এছাড়াও ব্যবাসায়ীরা যদি বাজারে পণ্যের দাম বাড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারীকি দেয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ মার্চ) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন ডিসি গালিভ।

ডিসি আরও বলেছেন, জেলায় বাজার মনিটরিং টিম রয়েছে। ওই বাজার মনিটরিং টিম সব কিছুই পর্যবেক্ষণ করছে। তেল, ডাল, চালের দাম আগের থেকে কিছুটা দাম কমেছে। এছাড়াও যদি কোন ব্যবসায়ী গোডাউনে তেল, চাল, ডাল, চিনি, মজুদ রাখেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে প্রশাসন। কৃষকদের জমিতে দেয়া সার অনেক কিটনাষক ব্যবসায়ী মজুদ রেখেছে বলে খবর পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাকিউল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহান, জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হোদা অলক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু, সাংবাদিক তোসলিম উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, ফয়সাল মাহমুদ, আজিজুর রহমান শিশির, কামাল সুকরানা, মেহেদী হাসান শিয়াম, ফারুক আহম্মেদ, টুটুল রবিউলসহ স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

Mar 20, 2022

 চাঁপাইনবাবগঞ্জে ওয়ালটন ডে পালিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ওয়ালটন ডে পালিত


চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওয়ালটন ডে পালিত হয়েছে। রোববার (২০ মার্চ) সকালে জেলা শহরের শিবতলা এলাকায় ওয়ালটনের ডিলার আঃ রাকিবের উদ্যোগে এ দিবসটি উদযাপন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুব উন্নয়নের অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মান্নান, সমাজ সেবক ও সাংবাদিক মুনিরুল ইসলামসহ ওয়ালটনের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এ দিবসটি উপলক্ষে জেলা সদরের শিবতলা থেকে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে একটি র‍্যালী প্রদক্ষিণ করে। র‍্যালী শেষে কেক কাটেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।

 

Mar 18, 2022

কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল বিষ্ফরোণে আহত

কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল বিষ্ফরোণে আহত


চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের একটি আম বাগানে কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল বিস্ফোরণে রিমন ওরফে ইমন (১১) নামের এক স্কুল ছাত্র আহত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে শিবগঞ্জ স্টেডিয়ামের পাশের আম বাগানে একটি আমবাগানে এ দূর্ঘটনা ঘটে। আহত স্কুল ছাত্র শিবগঞ্জ পৌর চতুরপুর মহল্লার আনারুল ইসলামের ছেলে। সে আলীডাঙা জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

আহত রিমনের মা শিউলি বেগম জানান, দুপুরের খাবার খেয়ে রিমন ও তার ছোট ভাই ইকবাল শিবগঞ্জ স্টেডিয়ামের পাশের আমবাগানে গাছের পাতা কুড়াতে যায়। এ সময় রিমন একটি লাল রঙের একটি কোটা দেখতে পাই। ওই বস্তুটিকে পা দিয়ে নাড়ানোর সময়, বস্তুটি (ককটেল) বিকট শব্দে বিষ্ফরিত হয়। এ সময় তার বাম চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান জখম হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

 শিবগঞ্জ থানার ওসি চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছ। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে বঙ্গবন্ধুর জ্ন্মবার্ষীকি ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা তাতিঁলীগ ও উপজেলা আ.লীগের একই স্থলে সমাবেশ ডাকে। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটার শঙ্কায় শিবগঞ্জ স্টেডিয়ামসহ আশপাশের এলাকায় সকল ধরণের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করে উপজেলা প্রশাসন।

আমের রাজ্যে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা

আমের রাজ্যে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা




আমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আমের রাজধানীতে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। গত বছরের ক্ষতি পুষিতে নিতে এবার আম গাছের পরিচর্যায় বেশ মনযোগী হয়েছেন বাগান মালিকরা। বাগান পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরাও পেয়েছে নতুন কর্মস্থল। তারাও নতুন কর্মস্থল পেয়ে আনন্দিত। বাগান মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া মজুরি দিয়ে সংসারের দুঃখ দূর হবে বলে আশাবাদী শ্রমিকরা। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সুত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে আম ২ লাখ ৭৭ হাজার ৬২২ বিঘায় মোট ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৪০ টি আম গাছ চাষাবাদ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার ৩০ হাজার ৯১১ বিঘা বেশি জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এ মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৮ হাজার ৪৭০ দশমিক ৫ বিঘা, শিবগঞ্জে ১ লাখ ৫২ হাজার ১৪ দশমিক ৫ বিঘা, গোমস্তাপুরে ৩১ হাজার ৫২৩ দশমিক ৪ বিঘা, নাচেলের ২৮ হাজার ২৭৩ দশমিক ৯৫ বিঘা, ভোলাহাট উপজেলায় ২৭হাজার ৩৪০ দশমিক ২ বিঘা জমিতে আম গাছ চাষাবাদ হচ্ছে।

সদর উপজেলার ইসলামপুরে ২৪ বিঘার একটি বাগান কিনেছেন মুনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, গত বারের চেয়ে এবার আম উৎপাদনের জন্য দিয়ে মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি। গতবছরে জলবায়ুর কারণে আমের মুকুল ফুটার সময় বৃষ্টি হয় নি। এছাড়াও করোনার প্রাদূর্ভাবের কারণে অন্য জেলার ব্যাপারীরা আম কিনতে আসতে পারেনি। ফলে আমের মৌসুমের প্রথম দিকে আমের দাম পাওয়া যায়নি। অনেক লোকসান হয়েছে। এবার করোনার মধ্যে আমের বাজারদর যেন না কমে এদিক দিয়ে আম সংশ্লিষ্টরা খেয়াল রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শিবগঞ্জের আরেক আম বাগানি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এবারের মৌসুমের প্রথম দিক থেকে আবহাওয়া ভালো আছে। ফলে গতবারের চেয়ে এবার আম ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।  আমের ফলন ভালো হলে গত বছরের লোকসানের টাকা গুলো এবার পুষিয়ে নেয়া যাবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ  সদর উপজেলার ঝিলিম এলাকায় একটি বাগানে আমের গাছে কিটনাষক প্রয়োগ করছিলেন সাইফুল, গোলাম রাব্বানি, সোহেল, আব্দুল আজিম। তারা জানান, করোনায় অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কাজ ছিলোনা, ধার দেনা করে আমাদের সংসার চালাতে হয়েছে। এমন কী বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে সংসারে ব্যয় করতে হয়েছে। এখন আমরা কাজ পেয়েছি। প্রত্যেকেই প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করি। সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন কাজ থাকে। এমন করে কাজের গতি চলতে থাকলে, ধার আর লোনের টাকা গুলো শোধ করা যাবে। তবেইতো নিতে পারবো স্বস্থির নিঃশ্বাস।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, বর্তমানে আমের গাছগুলো শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি মুকুল এসেছে। এবারের মৌসুমে ৩৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন। আবহওয়া ভালো থাকায় আমের ফলন ভালো হবে বলে আশাবাদি এ কর্মকতা।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কামরুল ইসলাম বলেন, চলচি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে তিন চার ধরে মেঘলা আবহওয়া ছিল। এ সময়ে যে সব মুকুল ফুটেছিলো সেগুলো ঝরে যাওয়ার শঙ্কা ছিলো। কিন্তু পরে আবহাওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় আমের মুকুলের ক্ষতি হয়নি। তবে যে সব গাছে আগাম মুকুল এসেছিল, ওইসব কিছু কিছু গাছের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি আরও বলেছেন, এ সময়ে গাছের সঠিক পরিচর্যা না নিলে, আম গাছে ছত্রাক ভাইরাস বাসা বাঁধতে পারে। কৃষকরা যদি গাছে ছত্রাক নাশক স্প্রে করে তাহলে এ ভারসাস থেকে পরিত্রাণ পাবে।

 

Mar 15, 2022

আম চাষিদের ঘন বাগানে ঝোঁক

আম চাষিদের ঘন বাগানে ঝোঁক




চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জুড়ে প্রতি বছরই বাড়ছে আম বাগান।শুধু বদলে গেছে আম বাগানের ধরন। প্রচলিত বড় গাছের আম বাগানের স্থান দখল করছে, ছোট গাছের ঘন আমের বাগান।জেলার চাষিদের এখন আগ্রহ আম্রপালি, বারি-১১, বারি-৪, গৌড়মতি, কার্টিমন এ ৫ জাতের দিকে।এতে পুরাতন জাত ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসাপাত, আসিনা, গুটি এসব জাতের নতুন বাগান গড়ে উঠছে না।

জেলা কৃষি অধিদফতর সুত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে আম বাগানের জমি ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩২ বিঘা। আর গত দশ বছরে জেলায় ৮৫ হাজার ৫৯১ বিঘা জমির আম বাগান বেড়েছে।এর মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বেড়ে উঠেছে ছোট গাছের ঘন আমের বাগান।কম সময়ে লাভবান হওয়ার আসায় চাষিরা ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসাপাত, আসিনা আমের পরিবর্তে লাগাচ্ছেন উচ্চ-ফলনশীল জাত।

জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাবি জাতের আম চাষ হয় শিবগঞ্জে। ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপরেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শামিম খান।তিনি জানান, প্রায় সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে গৌড়মতি আর আম্রপালি এ দুই জাতের আম চাষাবাদ করছি।এরমধ্যে ৪ বিঘা জমিতে লাগোনো হয়েছে ১ হাজার আম্রপালির গাছ।গাছ গুলো লাগানোর প্রায় দুই বছরের মাথায় ফল আসবে। এছাড়াও বাকি জমিতে ৫০০ টি আম্রপালির গাছ লাগানো হয়েছে।প্রায় আড়াই বছরের মাথায় আসবে ফলন।একটি গাছ থেকে আরেকটির দূরত্ব প্রায় ৬-৭ ফুট।

শামিম খান বলেন, ফজলি, আসিনা, ক্ষিরশাপাত, ন্যাংড়া আমের চাষ করে, তেমন লাভবান হওয়া যায় না। এতে করে পুঁজির টাকা পকেটে উঠাতেই হিমশিম খেতে হয়। কম সময়ে লাভবানের আশায় উচ্চ ফলনশীল জাতগুলোর বাগানই বাড়ছে।গাছ ছোট হওয়ায় পরিচর্যা থেকে শুরু করে আম নামানো সহজ হয়।অন্যদিকে কম জায়গায় বেশি ফলন পাওয়া যায়।

আম চাষি সাইদুল রহমান তার জমিতে গড়ে তুলেছেন বারি-১১, বারি-৪ এ দু জাতের আম বাগান।  তিনি জানান,গত কয়েক বছর থেকে আমের দাম সে ভাবে পাইনি।কয়েক জনের মুখে শুনে এ জাতের আমের গাছ লাগিয়েছি ৪ বিঘা।আশা করছি লাভবান হবো। তিনি আরও জানালেন, প্রচলিত জাতের আম গাছ থেকে ফলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রায় ৭-৮ বছর। আর উচ্চ ফলনশীল আমগাছ অধিক পরিমাণে ঘন করে লাগানো যায়। এ ছাড়া দুই বছরেই ফল পাওয়া যায়।এসব কারনেই এ ধরনের বাগানের দিকে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন আম চাষিরা।

৭ বিঘার বাগানে ৮০০ আম্রপালি আমগাছ লাগিয়েছে কৃষি উদ্যোক্তা আহসান হাবিব।তিনি গাছে রাসায়নিক সার ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করে পরিবেশ বান্ধব জৈব সার ব্যবহার করছে। এছাড়া আমগুলো রপ্তানীমুখী করার জন্য দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শাহীবাগ চৌধুরীপাড়ার বাগান মালিক তাজ রহমান টনি মিয়া জানান, আমার ২৬ বিঘার একটি বাগান আছে। এ বাগানে প্রচলিত জাতের আমের গাছ ছিল। বছরে মাত্র বছরে মাত্র ২ থেকে সোয়া ২ লাখ টাকা পাওয়া যেত।পরে বাগানের গাছ গুলো কেটে আম্রপালি, গৌড়মতি, কাটিমন জাতের আমের গাছ লাগানো হয়েছে।এখন নাবিজাতের আম চাষ করে  লাভোবান হচ্ছি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান,গত বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আম উৎপাদন হয়েছে।বরেন্দ্র অঞ্চলে আমবাগান বাড়ছে। মূলত গৌড়মতি, যাদুভোগ, আম্রপালি, বারি-১১-সহ বিভিন্ন জাতের আমগাছ লাগাচ্ছে। আমের বাগান করলে জমির মূল্য বাড়ে, বাগানে অন্যান্য ফসল করতে পারে। এছাড়া পরিবেশও ভালো থাকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. কামরুল ইসলাম জানান, জেলায় স্বল্পমেয়াদী বাগান গড়ে ওঠায় নতুন নতুন জাতগুলো জনপ্রিয় হচ্ছে। বড় গাছের বাগান করলে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়। সেখানে ছোট গাছে ফল আসে দুই তিন বছরে।’ কৃষকরা লিজ নিয়ে অল্প সময়ে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাচ্ছে।

 

তবুও সুখী মর্জিনা খালা

তবুও সুখী মর্জিনা খালা





ষাটোর্ধ্ব একজন মর্জিমা খালা। রেল স্টেশনের বস্তির বাসিন্দা তিনি। রেলস্টেশন পাড়াতে বসায় ঝালের আসর। ঝালের সাথে থাকে কালাইয়ের রুটি। দূর-দুরান্ত থেকে ঝালের সাথে কালাইয়ের রুটি খেতে আসেন অনেক জন।

একদিন রাতে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে রুটি বানাতে দেখা যায়। গাছ তলায় দুটো বেঞ্চে বসে ছিল কয়েকজন ঝাল প্রেমি মানুষ। মানুষগুলোও বেশ মচমচ করে খাচ্ছিল কালাইয়ের রুটি আর লবণ ও মরিচ বাটার ঝাল।

তীব্র শীতের রাতে রুটি বানানোর কারণ জানতে চাইলে মর্জিনা খালা বলেন, প্রায় ২০ বছর পূর্বে  স্বামী তোসলিম হোসেনকে হারাই। পরে আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিলাম। বাড়িতে কামাই করার মতোন আর কেউ নাই। তখন রাতে রুটি বানাই। আর বিক্রি করি। এখান থেকে যা টাকা আয় হয়। এ টাকা দিয়েই সংসার চালাই। 

বাড়িতে ছেলে মেয়ে আছে কিনা জানতে চাইলে মর্জিনা খালা প্রশ্নোত্তরে বলেন,  দুই ছেলে আর এক মেয়ে আছে আমার। মেয়েটার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় শুশুর বাড়িতে থাকে। আর দুটা ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সালেক প্রতিবন্ধী। আর ছোট ছেলে রাজু বেকার বললেই চলে। আমার ছোট ছেলেটা কখন রিক্সা চালায়, কখনও বারো ভাজা, বাদাম বিক্রি করে। কিন্তু তার এখন আর বেচা বিক্রি নাই। সব মিলিয়ে আমাকেই সংসার চালাতে হয়। ছোট ছেলে ব্যবসার জন্য কিস্তি তুলেছিলো। ওর এখন বেচা বিক্রি না থাকায় রুটি বেচেই তার কিস্তির টাকা শোধ করি।

মর্জিনা খালা আরও বলেন, আমরা গরিব মানুষ। ফুটপাতে দুটা রুটি বেচেই খাই। যেখানে এখন বাস করছি জামিটা রেলের। হয়তো সেখানকার বাড়িগুলো রেলের লোকজন উঠিয়ে দিবে। কিন্তু থাকার জায়গা তো নাই। কোথায় যাবো, কোথায় থাকবো। এ ভেবেই দিন পার করছি। আশপাশে কোন সরকারি ঘর পেলে সেখানে উঠবো। আর এখানে এসে রুটি বিক্রি করবো। তাহলে সংসারটা চালাতে পারবো।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা ফাইজুর রহমান মানি। তিনি একটি রুটি খেয়ে খালাকে আরেকটি রুটির অর্ডার দেন। খালার বানানো রুটি খেতে কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবসর পেলেই এখানে রুটি খেতে আসি। রুটির দাম ২০ টাকা হলেও স্বাদটা অনেক। বিশেষ করে লবণ আর মরিচ বেটে তিনি যে ঝালটা বানান তা কিন্তু বেশ স্বাদের। 

ওহেদুজ্জামান নামের একজন জানান, জেলা শহরের মধ্যে সব জায়গার কালাইয়ের রুটির স্বাদ নেয়া আছে। কিন্তু মর্জিনা খালার বানানো রুটি আর ঝাল বেশ মজাদার। তিনি রাতে রুটি বানান। সারাদিন কাজ শেষ করে প্রায় সম এখানে চলে আসি রুটি আর ঝাল খেতে।

 

মারামারি ছুটাতে গিয়ে প্রাণ হারাল বৃদ্ধ

মারামারি ছুটাতে গিয়ে প্রাণ হারাল বৃদ্ধ


চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে মারামারি ছুটাতে গিয়ে মজনু আলী (৬৫) নামের এক জনের মৃত্যু হয়েছে।সোমবার (১৪ মাচ) সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের আজমতপুর ঝাংড়িপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের হোসেন বলেছেন, সজনে গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে মারামারি সংগঠিত হওয়া, মারামারি ছুটাতে গিয়ে মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে মজনুর মৃত্যু হয়েছে।এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছে।

 প্রত্যক্ষদশী  আহসান হাবিব জানান, সকালে বাড়ির পাশে থাকা সজনে গাছের ডাল কাটার ঘটনায় দুই প্রতিবেশী দানেস ও কায়েশের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।এক পর‌যায়ে তারা রড ও লাঠি সোটা নিয়ে একে অপরকে আঘাত করতে থাকে।এ সময় তাদের ফুফা মজনু মারামারি  ছুটাতে গিয়ে মাথায়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগলে গুরতর আহত হয়। এবং ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি।

শাহবাজপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, সোহেল ও দানেশের পরিবার খুব নিকটবর্তী আত্মীয়। কিন্তু একে অপরের পরিবারের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে মিল ছিলনা। এর আগেও সীমানা নিয়ে একাধিক সালিস হয়।

শিবগঞ্জ থানার ওসি চৌধুরী জোবায়ের হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ উদ্ধার করেছে।ঘটনার প্রকৃত কারন অনুসন্ধান শেষে দায়ীদেও বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।