চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন মূলনীতি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য ও প্রচার প্রচারণার অভিযোগে একটি পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে গ্রামবাসী। ঘটনাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের চাঁপাই-গোকুল গ্রামের। গত শনিবার (০৮ মে) মাগরিব নামাজের পর মসজিদে বসে এই সীধান্ত নেয় গোকুল গ্রামের মড়ল-মাতব্বরগণ।
শনিবার সন্ধ্যায় বয়কটের সীধান্ত নেয়ার সময় মসজিদে উপস্থিত ছিলেন এই গ্রামের মুসল্লী সাইদুর রহমান। তিনি জানান, গ্রামবাসী সীধান্ত নেয়ার পর তা মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়। এসময় ইসলামের মূলনীতি না মানা পরিবারের প্রতি বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞাগুলো হলো- তার সাথে গ্রামের কেউ সম্পর্ক রাখতে পারবে না, তাদের কোন বিপদে পাশে দাঁড়ানো যাবে না বা অন্য কারো বিপদে তাদের সহযোগিতা নেয়া যাবে না। এছাড়াও গ্রামের দোকানপাটে কোনকিছু কিনতে পারবে না, এমনকি তাদের পরিবারের কেউ মারা গেলে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা যাবে না বা দাফনকাজে অংশ নেয়া যাবে না। গ্রামের কেউ এসব নির্দেশনা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
গ্রামবাসীর
অভিযোগ, শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে না মেনে তার সমস্ত হাদিসকে অস্বীকার করে
ইসলাম ধর্মের মূলনীতিকে অস্বীকার করেছে পরিবারটি। গোকুল গ্রামের মৃত দুখু মন্ডলের
ছেলে শফিকুল ইসলাম ও তার পরিবার নতুন একটি কুফরী দলে যোগ দিয়েছে।
গোকুল মধ্যপাড়া জামে মসজিদের ইমাম বলেন, তারা এমন দলে যোগ দিয়েছে, যেখানে হাদিসকে সরাসরি অস্বীকার করছে। অথচ হাদিস ছাড়া ইসলাম অসম্পূর্ণ। কারন পবিত্র কোরআনে শুধুমাত্র ইবাদত করতে বলা হয়েছে। কোন ব্যক্তি কিভাবে, কখন, কোন উপায়ে ইসলামের বিভিন্ন নির্দেশনা বা ইবাদত মেনে চলবে তা ব্যাখা করে বলা হয়নি। তাই প্রত্যেক মুসলমানদের বাধ্যতামূলকভাবে হাদিসের শরণাপন্ন হতেই হবে। অথচ তারা এ বিষয়টি মানতে নারাজ।
হাদিস না মানতে চাওয়া শফিকুল ইসলামের ছেলে জাকারিয়া জানান, আমাদের প্রতি যে সীধান্ত নেয়া হয়েছে তা সত্য। আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আমরা কোরআন মানবো। কিন্তু হাদিস মানবো না। আর এই কারনেই এই বয়কটের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. তাসেম আলী বলেন, এবিষয়ে কিছু জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে বলতে পারবো।
এবিষয়ে পলশা উত্তরপাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা হযরত আস্তারুল বিন আব্দুস সামাদ জানান, ইসলামের দৃষ্টিতে এটি কতলযোগ্য (হত্যা করার মতো) অপরাধ করেছে তারা। ইসলামের মূলনীতি অমান্য করে তারা মুরতাদ হিসেবে পরিনত হয়েছে। এটি ইসলামিক আইনে মারাত্মক অন্যায়। সামাজিকভাবে বয়কট করাকেও সমর্থন করেন তিনি।
