Apr 8, 2021

বৃষ্টির অভাবে আম উৎপাদন ব্যাহতের শঙ্কা



আমের জন্য পরিচিতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা । এ জেলাকে কেউ বলেন আমের রাজধানী। সে রাজধানীতে সব খানেই গাছের মুকুল। বৃষ্টির অভাবে ইতোমধ্যে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। গাছে গাছে আমের গুটি দেখা গেলেও দীর্ঘ ছয়-সাত মাস ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে চিন্তিত আমচাষি ও বাগান মালিকরা। এ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হওয়ায় এ আমকে ঘিরেই এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের মুখের হাসি যেন মলিন হয়ে গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নয়াগোলা, কোর্ট এলাকা, বালিয়াডাঙ্গা,নতুনহাট,চরি, শিবগঞ্জের পিঠালীতলা,কানশার্ট,সেলিমাবাদ,ইসরাইল মোড়,শেখটলা,বিরামপুর মরদানাসহ বেশ কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, আমের গুটি বের হওয়া শুরু হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমের গুটি স্বাভাবিকভাবে বড় হচ্ছে না। আবার যে গুটিগুলো এক সপ্তাহ আগে ফুটেছিল তাও ঝরে পড়েছে। এতে করে চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।

সদর উপজেলার নতুনহাটের মারুফ। পেশায় একজন আম ব্যবসায়ী। তিনি জানান, এ বছর আমের গুটি ভালোই এসেছে। তবে অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। খুব ভয়ে আছি, যদি বৃষ্টি না হয় অনেক লোকসান হবে।

শিবগঞ্জের শেখটলা এলাকার আমির হোসেন। পেশায় সে একজন আম ব্যবসায়ী। সে প্রায় ১২৩ বিঘা আমের বাগান কিনেছে। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ মুকুল এসেছিল। গত ৪ এপ্রিল জেলায় যে ধুলিঝড় হয়েছিলো। সে সময় আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক আমের গুটি ঝড়ে পড়ে গেছে।

কানসাট এলাকার সেফাউর রহমান। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে আমের মুকুলের পরিমাণ অনেক ছিল। সময় মতো আমের গুটিও এসেছিলো গাছে। আশায় ছিলাম ভালো ফলন হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বেশ চিন্তায় আছি।

কয়েকজন আম বাগানের মালিক জানান, গাছে আসের গুটি রাখতে সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী আম গাছে পানি দিয়ে স্প্রে করছে। এছাড়া গাছের গোড়ায়ও পানি দেয়া হচ্ছে। খরচের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। তবে এ মুহূর্তে আর কিছু করার নেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, এবার ভালো মুকুল আসার পাশাপাশি গুটিও সময় মতো এসেছে। তবে গত ৯ অক্টোবর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। এ মুহূর্তে বৃষ্টি হলে ফলন ভালো হবে। না হলে আম উৎপাদনে ব্যাহত হতে পারে। সকল আম চাষিকে খরচ বেশি পড়লেও  গাছে পানি দেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দিন। তিনি জানান,  এখন পর্যন্ত এ জেলায় বৃষ্টি হয়নি। তিনি আরও বলেন, খরার কারণে গাছগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। তাই গাছের গোড়ায় একটু গর্ত করে পানি দিলে গাছগুলোও এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com