চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শাহীবাগের একটি আম বাগানে গতকাল সোমবার সকালে একটি উত্তুরে হনুমান দেখা গেছে। সকাল থেকে শাহীবাগ এলাকায় সার্কিট হাউস সংলগ্ন আম বাগানে একটি গাছের উঁচু ডালে সেটিকে বসে থাকতে দেখা যায়। হনুমানটি দেখতে বিভিন্ন বয়সী মানুষ সেখানে ভিড় করেন। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়; দুপুর ১২টার দিকে উৎসুক মানুষের ভিড়ের কারণে হনুমানটিকে আম গাছের উঁচু স্থানে একটি ডালে পাতার আড়ালে বসে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয় যুবতি আয়েসা সিদ্দিকা জানান, সকালে স্থানীয়রা হনুমানটি দেখে ভিড় করেন। লোক জনের কারণে সে প্রাণীটি
ভীত হয়ে পড়ে। লোকেরা বিরক্ত করায় সেটি কয়েকবার স্থানও পরিবর্তন করে। এর গায়ের রং ফ্যাকাসে এবং নিচের দিকে কিছুটা হালকা সাদা। সূত্র বলছে;
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলার প্রায় ১৪৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে দলছুট হয়ে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে আসতে পারে।
বাংলা পিডিয়ার সূত্র হতে জানা যায়; উত্তুরে হনুমান বা বড়
হনুমান (ইংরেজি: northern plains gray langur) বৈজ্ঞানিক নাম, Semnopithecus
entellus হচ্ছে সারকোপিথিসিডি পরিবারের একটি প্রাইমেট প্রজাতি। এরা সাধারনত মাটিতে থাকা অবস্থায় লেজ বাঁকিয়ে শরীরের ওপর দিকে রাখে। প্রাপ্ত বয়স্কদের ভ্রুর পিছনে ললাটের ওপর চুল থাকে।মাথাসহ দেহের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫১ থেকে ১০৮ সেন্টিমিটার এবং লেজ ৭২ থেকে ১০৭ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পুরুষ হনুমানের ওজন ৯ থেকে ২১ কেজি ও স্ত্রী হনুমানের ওজন ৮ থেকে ১৮ কেজি হয়ে থাকে। এরা ফল, কাণ্ড ও গাছের পাতা খেয়ে জীবনধারণ করে। আমাদের দেশে এরা অতি বিপন্ন এবং এদের সংখ্যা ক্রমশই কমছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতে এদের দেখা যায়। এরা সাধারণত বনে-জঙ্গলে দলবদ্ধ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
স্হানীয় বাসিন্দা সেরাজুল ইসলাম জানান; উনিশ’শ ষাড় দশকে
আমরা গরুর রাখাল ছিলাম। পুরাতন স্টেডিয়াম,সরকারী কলেজ,পুলিশ ফাঁড়িতে তখন বনজঙ্গল ছিলো।
গরুর চরার সুবাদে অনেক হনুমান দেখতে পেয়েছি। অফিস আদালত আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার
কারনে বনজঙ্গলও আর নায়,কোন পশু পাখিরও দেখা নাই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিবেশবাদী একটি সংগঠন সেভ দ্য নেচারের সমন্বয়ক ফয়সাল মাহমুদ জানান, জেলায় প্রায় হনুমান ও বানর দেখার খবর পাওয়া যায়। এরা মূলত দলছুট হয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে নির্দিষ্ট এলাকা ছেড়ে ভারত থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে আসে। এই প্রজাতিগুলো মূলত আবাসন সংকট ও খাদ্যাভাবের কারণে ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে।
