Dec 11, 2020

চাঁপাইয়ের আজ দু-উপজেলার মুক্ত দিবস


শিবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
আজ ১১ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুরের রহনপুর মুক্ত দিবস। এ দিনে ৭ নম্বর সেক্টরের সহ অধিনায়ক বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বীরমুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপন যুদ্ধ করে পাক সেনাদের বিতারিত করেন এবং শিবগঞ্জকে মুক্ত করে বর্তমান উপজেলা পরিষদ চত্তরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। শিবগঞ্জ উপজেলার সাহাবাজপুর ইউপির আবুল খায়ের বিশ্বাসের বাড়ী থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ৬ নভেম্বর পাক সেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে পরাস্থ করে কানসাট অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। এদিকে ৩০ নভেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর বালিয়াদিঘী- সোনামসজিদ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে ধোবড়া এলাকায় পাক সেনা অবস্থানে আক্রমন চালান। ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে ধোবড়া এলাকায় মুক্তিবাহিনী পাক সেনাদের পরাস্থ করে সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা ডিফেন্স বসায়। ঐ সময় ২০/২৫জন পাক সৈন্য মারা যায়। ৮ ডিসেম্বর বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পাক বাহিনী বিনোদপুর ও মনাকষা এলাকার শতাধিক নিরীহ গ্রাম বাসিকে ঘরে আটকে আগুনে পুড়িয়ে এবং ৫০/৫৫ জন শিক্ষিত ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে। এ খবর পেয়ে সাবেক এম.পি মোঃ শাহজাহান আলী ও আমানুল্লাহ বিশ্বাসের বাহিনী এবং মনাকষা এলাকায় মইনউদ্দিন আহম্মেদ মন্টু ডাক্তারের মুক্তিবাহিনী ত্রিমুখী ভাবে আক্রমন করে সম্মুখ যুদ্ধে মিলিত হয়ে ৬/৭ জন পাক সেনাকে নিহত করার পর শিবগঞ্জ অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। একই ভাবে চককীর্তি ধাইনগর সহ আরও বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের দলগুলো শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্তরে এসে মিলিত হয় এবং পাক বাহিনীকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের দিকে তাড়িয়ে দিয়ে বিকেল ৩.৩০ মিনিটের দিকে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর পৌছা মাত্রই বর্তমান উপজেলা পরিষদ চত্তরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শিবগঞ্জকে মুক্ত অঞ্চল হিসাবে ঘোষনা করা হয়।


গোমস্তাপুর প্রতিনিধিঃআজ শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জরে গোমস্তাপুর উপজেলা সদর রহনপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এ শহর হানাদার মুক্ত হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে গোমস্তাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এ বছর করোনাকালীন থাকায় কোন কর্মসূচীর গ্রহণ করেননি তারা ।
এ দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আকতার আলী খাঁন কচি জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এ এলাকা ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর খুব সকালে লেফটেনেন্ট রফিকের নেতৃত্বে প্রায় ৩০/৩৫ জনের মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল বাঙ্গাবাড়ী থেকে রহনপুর অভিমুখে রওনা হয়। পথে আলিনগর এলাকার মুক্তিযোদ্ধারাও তাদের সাথে যোগ দেন। এ ছাড়া মহানন্দা নদীর পেরিয়ে বোয়ালিয়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা রহনপুরে প্রবেশ করে। মুক্তিযোদ্ধারা রহনপুরে প্রবেশের আগেই ভোরে পাক সেনারা রহনপুর এবি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে গড়ে তোলা সেনা ক্যাম্প গুটিয়ে ট্রেনযোগে পালিয়ে যায় এবং রহনপুর শহর মুক্ত হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধারা নাচোল-আমনুরা হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দিকে রওনা হয় এলাকাগুলো মুক্ত করতে।
সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com