টুটুল রবিউল,নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার এক কমিশনারের অপমান সইতে না পেরে বিষপানে এক প্রেমিকার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় আধুনিক সদর হাসপাতালে মারা যায় প্রেমিকা।
মৃত প্রেমিকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের দারিয়াপুর মহাজনপাড়ার কৃষক সাদেকুলের পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে আসিফা (১৩)।
স্থানীয়রা জানায়, আপন চাচাতো ভাই বাসিরের (২২) সাথে প্রেম ছিল আসিফার। প্রেমের সম্পর্ক তাদের শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। গত রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে প্রেমিক বাসির মেয়ের ঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি মেয়ের মা জানতে পেরে বাসিরকে অবরুদ্ধ করে ছেলের পিতা তৌহিদুলকে বিষয়টি অবগত করে। বিয়ে দেয়ার নাম করে এবং কাউকে না জানাতে বলে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় তৌহিদুল।
পরে তৌহিদুল ছেলের বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং মেয়েপক্ষকে চাপে ফেলার উদ্দেশ্যে কমিশনার মটন মিয়ার সহযোগী মাহতাবের আশ্রয় নেয়। পরে মাহতাব কৌশলে মেয়েপক্ষকে কমিশনারের বাসায় নিয়ে কমিশনার মতিউর রহমান মটন মিয়ার সভাপতিত্বে প্রেমিক বাসিরের অনুপস্থিতিতে একটি শালিস করে। শালিসে প্রেমিক বাসিরকে ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু মেয়ের মা ৬৫ হাজার টাকা পেয়েছে বলে জানায়। শালিসে আসিফা তার প্রেমিক বাসিরের সাথে বিয়ে না দিলে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছিল বলে জানায় আসিফার মা। আসিফার মা জানান, শালিসে তার মেয়েকে আজে বাজে কথা বলে অপমান করেছে কমিশনার আর মাহতাব।
স্থানীয়দের ধারণা এই অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে আসিফা।
স্থানীয় কয়েকজন যুবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, টাকা ছাড়া কোন শালিসে যাননা কমিশনার মটন মিয়া। যে পক্ষ তাকে টাকা দিবে তার পক্ষে রায় দেন। আর টাকার লেনদেন করে মাহতাব।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একটি মামলা হয়েছে, প্রেমিক বাসিরসহ তার বাবা-মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ময়না তদন্ত শেষে আসিফার লাশ শনিবার দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
একটি সুত্র জানায়, মীমাংসা করার জন্য ও মামলা তুলে নিতে মৃত আসিফার পরিবারকে চাপ দিচ্ছে কমিশনার মতিউর রহমান মটন মিয়া।
এবিষয়ে কমিশনার মতিউর রহমান মটন মিয়ার বক্তব্য নিতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার পর তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা যায়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় জানা যায় তিনি থানায় অবস্থান করছেন। থানায় গেলে তিনি কোন বক্তব্য দিবেন না বলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।