চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের আতাহার-চাঁদলাই জামে মসজিদের চাবি রাখাকে কেন্দ্র করে একটি পরিবারের প্রতি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের একটি দল। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে ৫ জন। বৃহস্পতিবার রাতে হামলায় আহতদের চিকিৎসার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতে ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হলেও এখনও ২ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতেই আহতের পরিবার সদর থানায় এজাহার দায়ের করে।
এজাহার ও আহত তরিকুল ইসলাম সূত্রে জানা যায়, ঝিলিম ইউনিয়নের আতাহার-চাঁদলাই জামে মসজিদের ইমাম সাদেকুল ইসলামের ছুটি হলে তিনি এলাকার ভাদু মন্ডলের ছেলে মো. আজহারুলকে (৫০) চাবি দিয়ে যায়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে বিভিন্ন কাজে ঈদুল আজহার দিন হতে তিনি মসজিদের তালা খোলার পর আযান ও নামাজ হয়। কিন্তু বিভিন্ন কাজে প্রতিনিয়ত আযান ও নামাজে দেরী হলে বুধবার জোহরের সময় মৃত আলফাজ উদ্দীনের ছেলে গোলাম রাব্বানী চাবি নিয়ে এসে আযান দেন ও নামাজ আদায় করে। মসজিদ হতে আজহারুলের বাড়ি দূরে হওয়ায় মসজিদের পাশে শফিকুলের বাড়িতে চাবি রাখেন গোলাম রাব্বানী। শফিকুলের বাড়িতে চাবি রাখাকে কেন্দ্র করে এনিয়ে কথা কাটাকাটির সময় গোলাম রাব্বানীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আজহারুল।
গোলাম রাব্বানীর ছোট ভাই মো. তরিকুল ইসলাম (৫০) জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আগের দিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদলাই জামে মসজিদের দক্ষিণে আম বাগানে দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গোলাম রাব্বানীর উপর হামলা করে। এসময় আমি, আমার স্ত্রী রুবি, ছোট ভাই রফিকুল ও বোন হানেফা বেগম এগিয়ে আসলে তাদের হাতে থাকা রড, লাঠি দিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। এসময় এলাকায় মাদকসেবি, মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার বাহিনীর মো. আজহারুলসহ তার ৩ ছেলে মাসুম (৩৩), মামুন (২৬), মাসুদ (৩৬), কাবিরুল (১৯), রাসেল (৩৩), জাহাঙ্গীর (৩০), মাইনুল (৩৮), শরিফুল (৩৪), নাসিরুল (২৭), আরিফ (২৮) হামলায় অংশ নেয়।
তিনি আরো বলেন, হামলায় আহত আমার ভাই রফিকুল ও আমার স্ত্রী রুবি এখনও (শুক্রবার রাত পর্যন্ত) হাসপাতালে ভর্তি আছে। অন্যদিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় আছে বোন হানেফা ও ভাই রাব্বানী।
আহত গোলাম রাব্বানী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিকভাবে আওয়ামীলীগের সাথে সক্রিয় রাজনীতিতে জাড়িয়ে আছি। তাই সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার বাহিনী ও এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী দল আমাদের পরিবারের উপর হামলা চালিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। তিনি আরো জানান, আমাদের উপর হামলা করে উল্টো আমাদেরকেই মামলার হুমকি দিচ্ছে। আমি ও আমার পরিবার এখন নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছি।
অভিযুক্ত মো. আব্দুর রহমানের ছেলে মো. রাসেলের সাথে কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঝিলিম ইউনিয়নের ০৭ নং ওয়ার্ড সদস্য মাইনুল ইসলাম মুকুল মুঠোফোনে জানান, অনেক আগে থেকেই দুই পক্ষের ঝামেলা চলছে। রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব নিয়েই এই হামলাটি হয়েছে বলে মনে হয়৷
সদর থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, দুই গ্রুপের একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষই অভিযোগ করেছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

