Jun 19, 2020

সাংবাদিকের সাথে নাচোল ইউএনও’র উদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ তীব্র নিন্দার ঝড়

সাংবাদিকের সাথে উদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ করে তথ্য না নিয়ে মামলা করতে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবিহা সুলতানা। সেই সাথে তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে বাজে মন্তব্যও করেন। বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) জেলার দুই সাংবাদিক একটি বিষয়ে তথ্য জানতে তার অফিসে গেলে তিনি এ আচরণ করেন।


তিনি বলেন, এত ছোট বিষয়ে জেলা সদর থেকে আপনাদের আসার কি দরকার, আমার উপজেলায় কি সাংবাদিক নাই।
গত মঙ্গলবার জেলার এক সাংবাদিক ইউএনও সাবিহা সুলতানাকে মোবাইলে একটি বিষয়ে বক্তব্য চাইলে তিনি সশরীরে এসে বক্তব্য নেয়ার জন্য বলেন। তার কথামত বৃহস্পতিবার দুই সাংবাদিক জেলা সদর হতে নাচোলে তার বক্তব্য নিতে যায়। তখন তিনি বলেন, যা বক্তব্য দেয়ার তাতো মোবাইলে দেয়া হয়েছে, আবার এসেছেন কেন? তিনি আরও বলেন, ও বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে চান না, অন্য কিছু জানার থাকলে বলুন, নইলে যেতে পারেন।
ঘটনায় প্রকাশ, নাচোল উপজেলার নাসিরাবাদ এলাকার একটি অর্পিত সম্পত্তিতে স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে হতে ২০-২৫ টি পরিবার বসবাস করে আসছে। রাস্তা নিয়ে সেই অর্পিত সম্পত্তিতে বসবাসকারীদের মাঝে মনোমালিন্য দেখা দিলে একপক্ষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নাচোল বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে ডেকে কোন মীমাংসা বা নোটিশ প্রদাণ ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে অন্যপক্ষ মোজাম্মেল ও তার ভাইদের বেড়া ও টিনের চালা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ প্রদাণ করেন। তার নির্দেশে ভুমি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গিয়ে মোজাম্মেল ও তার ভাইদের বেড়া ও টিনের চালা ভেঙ্গে ফেলে, এবং মোজাম্মেল ও তার ভাইদের হত্যা করার হুমকি প্রদান করেন। মোজাম্মেল টিনের চালা ও বেড়া ভাংচুরের বিষয়ে ভুমি কর্মকর্তা রফিকুলের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এসব ভাঙ্গা হচ্ছে।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী মোজাম্মেল বলেন, থানায় বসে আলোচনার মাধ্যমে ৮ ফুট রাস্তা ছাড়ার কথা হলে আমি এবং আমার ভাইয়েরা তা মেনে নিলেও প্রতিপক্ষ তা মানেনি। আমি সবসময় শান্তির পক্ষে বিধায় আমার নিজস্ব জমির উপর দিয়ে প্রতিবেশীদের যাতায়াতের জন্য ৫ ফুট প্রস্থ এবং দৈর্ঘ ২০০ফুট রাস্তা ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু ইউএনও মহোদয় প্রতিপক্ষের প্ররোচনায় পড়ে আমার সাথে কোন আলোচনা না করেই আমার নিজস্ব দখলীয় জমিতে নির্মিত টিনের চালা ও আমার ভাইয়ের বেড়া ভাংচুর করার নির্দেশ দেন। ভাংচুরের পর হতে প্রতিপক্ষরা ইউএনও’র সাহসে আমাকে ও আমার ভাইয়ের হত্যা করে ফেলার অব্যাহত হুমকি দিয়ে আসছে। এইমর্মে আমি থানায় জিডি করতে গেলে ইউএনও’র নির্দেশে আমার জিডি গ্রহণ করেনি নাচোল থানার ওসি। বাধ্য হয়ে প্রতিকার চেয়ে মোজাম্মেল জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

উপরোক্ত বিষয়টি অবগত হবার পর মডেল প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সম্পাদক ও দৈনিক নবচেতনা’র জেলা প্রতিনিধি জারিফ হোসেন এবং যুগ্ম সম্পাদক ও দেশসংবাদ আর দৈনিক আজকের বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি টুটুল রবিউল সরেজমিনে তদন্তে যায়। তদন্ত শেষে ইউএনও সাবিহা সুলতানার বক্তব্য নিতে গেলে ইউএনও সাবিহা সুলতানা তাদের সাথে উদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ করেন এবং সাংবাদিকদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন।
ইউএনও সাবিহা সুলতানার এমন আচরণে বিষ্ময় প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মডেল প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সভাপতি আখতারুজ্জামান। তিনি সাংবাদিকদের সাথে আচরণে সহনশীল হবার আহবান জানান।

সাংবাদিকের সাথে ইউএনও সাবিহা সুলতানার এমন উদ্ধত্বপূর্ণ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর বলেন, তিনি সাংবাদিকের সাথে এমন আচরণ করতে পারেন না। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের অনৈক্যের কারণে প্রশাসন আজ এমন আচরণ করার সাহস পাচ্ছে। নিজেদের স্বার্থ রক্ষার লক্ষে সকল সাংবাদিককে এক হওয়ার আহবান জানান তিনি।
সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com