লালমনিরহাটে করোনা সচেতনতা কে কেন্দ্র করে মারামারি, সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরির চেষ্টা
উত্তরা সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে করোনাভাইরাস সংক্রমণে সচেতনতা কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনাকে আড়াল করে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত ৩০ এপ্রিল ( বৃহস্পতিবার) বিকেল ৫ টার দিকে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের অরণ্য স্কুলের সংলগ্ন একটি হিন্দু পরিবারের লোকজন ব্যবসার কাজে বিভিন্ন জেলা যাতায়াত করলে প্রতিবেশি একটি মুসলিম পরিবারের লোকজন পরিবারটিকে সচেতনতা অবলম্বন করতে বললে তাদের মধ্যে এ মারামারির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, এ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতার কথা বলতে গিয়ে গত ১৫ ই এপ্রিল উভয়ের মধ্যে সীমান্ত সিনেমা হলের পাশে বাজারে শাহ আলীর ছেলে সাহেব আলী(১৭) ও সুধাংশুর ছেলে সুবোধ (১৬) এর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের হিসাবে ঘটনার দিন প্রতিবেশি শাহ আলীর ছেলে সুধাংশুর বাড়ির পাশ দিয়ে যেতেই সুধাংশু ও তার ভাই ভাতিজারা সাহেব আলী কে আটক করে বাড়ির ভিতরে নেয়। এ সংবাদ পেয়ে শাহ আলীর ও তার পরিবারের সকলে ছেলেকে উদ্বার করতে সুধাংশুর বাড়িতে প্রবেশ করার চেষ্ঠা করে। সুধাংশু প্রতিপক্ষকে ভাসাতে নিজের টিনের বেড়া ও রান্না করার জন্য খড়ের ছাউনি দেয়া একটি চালে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় দু পক্ষের মধ্যে পুনরায় মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে সুধাংশুর পরিবার দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিরত রয়েছেন।
এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে চলবলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু ও গোড়ল ইউনিয়ন আঃ লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর আমীন এবং কালীগঞ্জ থানার এস আই তুষার চন্দ্র রায় তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
সুধাংশু চন্দ্র দৈনিক মুক্তি ডট নিউজ কে জানান, আমার ভাই অনিল চন্দ্র ব্যবসার কাজে বিভিন্ন জেলা ঘোরাঘুরি করে থাকে। এজন্য প্রতিপক্ষ বলেন, অনিল চন্দ্র করোনা ভাইরাসে নিয়ে এসে গ্রামে ছড়াবে। তাছাড়াও ১৫ ই এপ্রিল আমার ছেলে সুবোধের সহিত হাতাহাতি হলে তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অপরদিকে শাহ আলী (৪৫) বলেন, আমার ছেলেকে তার বাড়ির পাশে একা পেয়ে সুধাংশু ও তার ভাই অনিল আটক করে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে আমরা তার বাড়িতে গিয়ে ছেলেকে উদ্বার করি। এতে কোনপ্রকার বাড়ির উপর হামলার ঘটনা ঘটেনি। সুধাংশু ও অনিল চন্দ্র নিজেরাই টিনের বেড়া ভাংচুর করে আমাদের মামলা দিয়ে ভাসাতে চেষ্ঠা করছে। এবং বিষয়টি একটি সুবিধাভোগি শ্রেণী স্বার্থ হাসিলে বিষয়টিকে ইন্ধন দিয়ে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরীর পাঁয়তারা করছে।
ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় ও প্রতিবেশি সামসুল বলেন, সুধাংশু চন্দ্র একজন মামলাবাজ প্রকৃতির মানুষ। মানুষকে মামলায় ফাঁসাতে সে সবকিছু করতে পারে।
এ বিষয়ে গোড়ল ইউনিয়ন আঃ লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর আমীন বলেন, ছোটখাটো বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরীর চেষ্ঠা দুঃখজনক। আমরা সকলে ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রাখতে চাই। এটিকে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরী করা যাবে না। উভয়ের মধ্যে ভুল বোধাবুঝি হলে আমরা সেটা স্থানীয়ভাবে সমাধান করব।
ঘটনার বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার এস আই তুষার চন্দ্র রায় বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।