Mar 25, 2021

বাদাম বিক্রি করে চলেই জীবন

আমিত রানী


চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার বাসিন্দা আমিত রানী (৫৫)। পেশায় তিনি বাদাম বিক্রেতা। সে বারোঘরিয়ার সুইচগেট (পুলপাড়া) এলাকার মৃত সুবাদন চন্দ্র দাসের স্ত্রী। গত ৫ বছর আগে বার্ধক্য জনীত কারণে  তার স্বামিও মারা যায়। বিধবা নারী আমিত রানীর ১ ছেলে ৩ মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়েছে গেছে । নিয়ম অনুযায়ী বাবার মৃত্যুর পর ছেলেরা তার মায়ের সেবাযত্ন করবে। কিন্তু তার ছেলে মায়ের সেবাযত্ন না করে, উল্টো তার মাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। চিকিৎসার জন্য ছেলের কাছে গেলেও অপারগতা প্রকাশ করে। এমন কি কাজের দোহায় দিয়ে কথা বলতেও চাইনা ছেলে গৌড়। গৌড় পেশায় চটপটি বিক্রেতা। বারোঘরিয়ার দৃষ্টিনন্দন পার্কে চটপটি বিক্রি করে।

 স্বামী মৃত সুবাদন চন্দ্র দাস বাদাম বিক্রেতা ছিলেন। আমিত রানী সে সূত্র ধরে বারোঘরিয়ার ৫৩ বিজিবি চেকপোষ্টের পাশে প্রতিদিনই বিকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত বাদাম বিক্রয় করে। প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় আমিত রানীর। প্রতিবেদক সে জানান; প্রতিদিন প্রায় দেড় কেজি থেকে দুকেজি পর্যন্ত বাদাম বিক্রি করি। মুলধন বাদ দিয়ে লাভ থাকে প্রায় ১২০ টাকা। আমি কোন রকম ভাবে পরের একটি জায়গায় বসবাস করি। আজ যদি আমায় উঠে যেতে বলে, তাহলে যাওয়ার জায়গা নাই। রাস্তায় রাস্তায় ঘুড়ে বেড়ানা ছাড়া আর উপায় নাই। বিধবা ভাতার কার্ডও পাইনি। আমিত রানী বলেন দীর্ঘদিন থেকে ডায়াবেটিকস, হ্নদরোগ, প্রেসারসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে আছি। আমার বাদাম বিক্রি করে, যে টাকা পয়সা ছিল তা দিয়ে রাজশাহীতে চিকিৎসা করিয়ে ছিলাম। আমি এখন টাকার জন্য ওষুধ কিনতেও পারছিনা। চিকিৎসকরা জানিয়েছে সুস্থ থাকার জন্য আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।

প্রতিবেদক আরোও জানান; আমি আমার ৩ মেয়ের সাথে আমি যোগাযোগ করি তাই আমার ছেলে আমায় আরোও দেখতে পারিনা। এ বিষয়ে তার ছেলে গৌড় জানান; আমার বিরুদ্ধে মায়ের দেয়া সকল অভিযোগ বানোয়াট। ঐ ওর (মা) মেয়ের নিয়ে পরে থাকে। তাই আমি তার সাথে যোগাযোগ করিনা।

বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দশ টাকা কেজি চালের জন্য কার্ড করার জন্য,আমার অসচ্ছলতার কথা বললে চেয়ারম্যান আবুল খায়ের আমার সাথে কথা না রেখে ধমক দিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের প্রতিবেদককে জানান; আমি কি তাকে লাঠি দিয়ে তাড়িয়েছি। হয়তো কোন কাজে ব্যস্ত ছিলাম, তাই চলে যেতে বলেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে যে আভিযোগ  দেয়া হয়েছে, সব গুলা বানোয়াট। দায়সারা বক্তব্য দিয়ে ফোন কেটে দেয় চেয়ারম্যান।

বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ড হলদারপাড়ার মহল্লাদার শ্রী অসিত কর্মকার জানান; বারোঘরিয়াতে একজনই মহিলা বাদাম বিক্রি করে সে আমিত রানী (৫৫)। তার স্বামীও অনেক আগেই মারা গেছে। মেয়ে গুলারও  বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে থাকলেও তার মায়ের দেখভাল করেনা। সে বড়ই অসহায়। বাদাম বিক্রি করেই চলে জীবন।

সদর উপজেলার জনবান্ধব নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলাম সরকারকে ফোনসহ এসএমএসস করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন জামালকে একাধীক বার  ও ফোন তিনি রিসিভ করেনি।


সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com