Jan 6, 2021

রহনপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১০ সদস্যের অনাস্থা


চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফি আনসারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে অনাস্থা দিয়েছেন ১০ ইউপি সদস্য। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার,চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক,গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালককেও অনাস্থার অনুলিপি দিয়েছেন।

রহনপুর ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যান শফি আনসারীর বিরুদ্ধে ১০টি সুনির্দিষ্ট অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। ১২ জনের মধ্যে ১১ ইউপি সদস্যই অনাস্থা দিলেও পরে একজন প্রত্যাহার করে নেন। অনাস্থা দিয়েছেন ৭নং ওয়ার্ড সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান বাইরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান, সানাউল ইসলাম, মো. তজিবুর রহমান, মো. বাবর আলী, সোহরাব হোসেন, ইসমাইল হোসেন, সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রুলিয়ারা বেগম, মোসা. কোহিনূর ও জোসনা বেগম। 

ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন- চেয়ারম্যান শফি আনসারী ইউপি সদস্যদের নিয়ে নিয়মিত মাসিক সভা করেন না। টিআর, কাবিখা, এডিপি খাত থেকে আসা প্রকল্পের পদাধিকার বলে সভাপতিকে কাজ বাস্তবায়ন করতে দেয়া হয় না। কৃষি প্রণোদনা পেতে সভা না করে সার, বীজ সঠিক সময়ে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেননি। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে আমেরিকা প্রবাসী স্ত্রী-সন্তানের কাছে যাওয়া-আসার কারণে নাগরিক সেবা থেকেও বঞ্চিত হয় ইউনিয়নবাসী।

ইউপি সদস্যরা অনাস্থাপত্রে উল্লেখ করেন, অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইউজিপি) তালিকা সভায় চূড়ান্ত করার পরেও চেয়ারম্যান আবারও তার ইচ্ছামতো পরিবর্তন করেন। একইভাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে ভিজিডি যাচাই-বাছাই করার পরেও পুনরায় পরিবর্তন করেন শফি আনসারী। এমনকি সভা চলাকালীন সময়ে ইউপি সদস্যদের অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলেও চাঁদার দাবিতে ফাইলে সাক্ষর না করা ও বিল না দেয়ার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, রাজস্ব তহবিলের অর্থ ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান শফি আনসারী।

রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য ইসমাইল হোসেন বলেন, রোববার অনাস্থা দেয়ায় বিভিন্নভাবে চেয়ারম্যান তা প্রত্যাহার করতে চাপ প্রয়োগ করছেন। এটি না করলে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নিরুপায় অবস্থায় আমরা অনাস্থা দিয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদকে তিনি তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করেন বলেও অভিযোগ ওই সদস্যের।

৪ নং ওয়ার্ড সদস্য সানাউল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন থেকে ৪০ দিনের কর্মসূচির বিলে সাক্ষর করতে অনীহা দেখাচ্ছেন চেয়ারম্যান। তার কাছে ঘুরে ঘুরে না পেয়ে ইউএনও মহোদয়কে বিষয়টি জানালে সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদে সাক্ষর করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বরাদ্দ ৩০০টি কম্বলের মধ্যে ৪ নং ওয়ার্ডের জন্য দেয়া হয় ১০টি। কিন্তু এই ১০টি কম্বলের মধ্যে এখনও ৪টি কম্বল পাননি তিনি।

রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফি আনসারী সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, আমি আওয়ামীলীগ সমর্থক,আর যারা অনাস্থা প্রকাশ করে উর্ধতন মহলে অভিযোগ করেছে তারা সকলই বিএনপি সমর্থক।তাই আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ও অনাস্থা দেয়া হয়েছে।

গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com