Nov 26, 2020

বাল্যবিবাহ দিয়ে টাকা নেয় আইনজীবী


অর্থের বিনিময়ে কোর্টে বাল্যবিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। বাল্যবিয়ে দেয়ার সময় ও কাবিননামা করে দেয়ার নামে দুই দফায় টাকা নেয়ার পর ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ না করে হয়রানির অভিযোগ চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতের আইনজীবী বিলকিস খাতুনের বিরুদ্ধে।

কয়েকজন ভুক্তোভোগীর থেকে জানা যায়, প্রচলিত নিয়মে বাল্যবিয়ে দিতে রেজিস্ট্রারগণ অস্বীকার করলে টাকার বিনিময়ে কোর্টে বাল্যবিয়ে দেন অ্যাড. বিলকিস। পরে কাবিননামা দেয়ার নাম করে আবারো টাকা নিয়ে ২০ মাস ধরে না দিয়ে হয়রানি করছেন তিনি।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার টিকরামপুর মধ্যপাড়া এলাকার দিনমজুর মো. মনিরুল ইসলামের মেয়ে সালমা খাতুনের সাথে পোলাডাঙ্গা এলাকার রহুল আমিনের ছেলে রাজমিস্ত্রী মো. রুবেলের বাল্যবিয়ে দেন অ্যাড. বিলকিস খাতুন। বাল্যবিয়ে দেয়ার বিনিময়ে ৩ হাজার টাকা নেন মো. মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে।

মনিরুলের স্ত্রী ও বাল্যবিয়ের শিকার সালমা খাতুনের মা আম্বিয়া বেগম বলেন, বিয়ের পর কাবিননামা করে দেয়ার নাম করে আরো ৩ হাজার টাকা নেয় অ্যাড. বিলকিস। এরপর আজকাল বলে দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও কাবিননামার কাগজপত্র দিতে নারাজ আইনজীবী। অথচ টাকা নেয়ার সময় বিলকিস বলেছিলো, কোন সমস্যা হবে না, সঠিকভাবেই কাবিননামা করে দিবো।

আম্বিয়া বেগম আরো বলেন, আমরা গরিব, খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষ। আমাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে টাকা নিয়ে কাগজ করে দেয়ার কথা বলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে হয়রানী করছে। বারবার তার কাছে চাইতে গেলে আজকাল বলে পাঠিয়ে দেয়। আমাদের এখন জরুরী দরকার, তাই এখন কাবিননামার কাগজপত্রটি লাগবে। অথচ অ্যাড. বিলকিসের এমন প্রতারণার কারনে কাবিননামা সরবরাহ করতে পারছি না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, যেসব ছেলেমেয়ের বিয়ের বয়স হয়নি, তাদেরকে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে টাকার বিনিময়ে বিয়ে করিয়ে দেন অ্যাড. বিলকিস খাতুন। এমন আরো কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। যা সম্পূর্ণভাবে দেশের প্রচলিত আইন বিরোধী কাজ। এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতের আইনজীবী বিলকিস খাতুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে কোন কথা বলবেন না বলে জানান। পরে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আকরামুল ইসলাম আকরাম জানান, ছেলের ক্ষেত্রে ২১ বছর ও মেয়ের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেয়া দেশের আইন বিরোধী কাজ। জেলায় কিছু জুনিয়র আইনজীবী টাকার বিনিময়ে এমন অন্যায় কাজ করছে। তবে আইনজীবীর এমন কাজ অনৈতিক ও দেশের প্রচলিত আইনে বড় অপরাধ বলেও জানান তিনি।
সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com