Sep 26, 2020

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩২ বিঘা জমি জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে প্রায় ৩২ বিঘা জমি জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রির করা হয়েছে। জালিয়াতি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, দলিল লেখক, সনাক্ত কারী ও স্বাক্ষির বিরুদ্ধে। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এ দলিল সম্পাদন করা হয়েছে বলে জমির প্রকৃত মালিক সৈয়দ আবুল কাশেম মহা: হারুন অভিযোগ করেছেন।


 প্রতিকার চেয়ে তিনি গত ২০ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ৩২ বিঘা জমি জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা সাব-রেজিস্টার মো.মোরশেদ আলম।

তথ্য অনুসন্ধানে জানাগেছে, নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের জমিন মালিয়াখৈর মৌজার ৪৮নং হোল্ডিং জমির প্রকৃত মালিক সৈয়দ আবুল কাশেম মহাঃ হারুন দিং এর পিতা-সৈয়দ এহসান আলী। মাতা-আরা ফাতেমা খাতুন। জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৮২২৮৮৩৯৭৩৭, জন্ম তারিখ ১৫/১১/১৯৩৫ইং প্রকৃত ঠিকানা-৩৫-ইন্দিরা রোড-ঢাকা।

কিন্তু জালিয়াত চক্রের মুল হোতা চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফকিরপাড়ার মৃত সৈয়দ নূরুল ইসলামের ছেলে মনিরুল ইসলাম(রাজু) গত ২৪/০৮/২০২০ তারিখের পাওয়ার-অব এর্টোনীর একটির সম্পাদিত ২৭২০ নং দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরী করেন এবং ক্ষমতাবলে মাত্র ২দিন পর সে গত ২৬/০৮/২০২০ইং তারিখে ২৭৮৩ নং কবলা দলিলমূলে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ঘিলাতলী গ্রামের মৃত কাজী সফি উদ্দিনের ছেলে কাজী জালাল উদ্দিন আহমেদসহ ৬ জনের নিকট ১০.৬৬৮২ একর জমি বিক্রয় করেন।

এ বিষয়ে দলিল গ্রহীতা মনিরুল ইসলাম(রাজু)’র সাথে তার ব্যবহৃত ০১৭১০৪৫২৯২৮ নম্বর ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোনে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এদিকে জালিয়াতির ঘটনাকে শতভাগ হালাল করতে নেজামপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি তৎকালীন উপ-সহকারী কর্মকর্তা রুপালী রানী সাহা (বর্তমানে শিবগঞ্জের নয়া লাভাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত) একই সনে একই হোল্ডিং-এ ১ মাসের ব্যবধানে বে-আইনী ভাবে ২টি চেক প্রদান করেছেন। উপ-সহকারী কর্মকর্তা রুপালী রানী সাহা একই হোন্ডিং এর ২টি চেক বাবুল ও রাজুর নিকট প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

৩২ বিঘা জমি জালিয়াতি ঘটনার মূল পরামর্শদাতা নাচোল সাব-রেজিস্ট্রী অফিসের ৫৬ নং লাইসেন্সধারী দলিল লেখক, নেজামপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে জিয়াউর রহমান ও অফিস সহকারী মোজাহারুল ইসলাম। তাদের পরামর্শে ও রেজিস্ট্রী অফিসকে ম্যানেজ করে জমির রেজিস্ট্রি কাজ সম্পাদন করা হয়েছে বলে জানান জমির প্রকৃত মালিক সৈয়দ আবুল কাশেম মহা: হারুন।

তবে এ বিষয়ে এ প্রতিবেদক শনিবার বহুবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও ফোনে কথা বলতে নারাজ জিয়াউর রহমান। তবে এলাকাবাসী বলছেন, সকল অনিয়মের সাথে জড়িত জিয়াউর রহমান, তিনি এসএসসি পাশ না করেও জাল সাটিফিকেটের মাধ্যমে দলিল লেখকের লাইসেন্স করেছেন এবং বিভিন্ন অনিয়ম করে যাচ্ছেন।

সেই সাথে জালিয়াতির দলিল হালাল করতে স্বাক্ষি হিসেবে দেখানো হয়েছে নেজামপুর জগদইল গ্রামের মৃত জলিল মন্ডলের ছেলে দলিল লেখক কামরুল ইসলামকে। তাকে দলিল দাতা-গ্রহীতাকে চেনেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে, তিনি বিষয়টি সম্পুর্ন এড়িয়ে যান।

জালিয়াতি দলিলের পরবর্তী গ্রহীতা কাজী জালাল উদ্দিন ২৭৮৩ নং সাফ কবলা দলিল মূলে জমি স্বত্ববান হয়ে নাচোল সহকারী কমিশনার(ভূমি) অফিসে ৬৭৭/ওী-ও/২০-২১নং খারিজ আবেদন করেন। বিষয়টি সৈয়দ আবুল কাশেম মহাঃ হারুন জানতে পেরে ওই খারিজ কেসটি বাতিলের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নিজামপুর ইউনিয় ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে নাচোল সাব-রেজিস্ট্রার মো.মোরশেদ আলম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সকলের আইডি কার্ড,ওয়ারিশান সার্টিফিকেট ও জমির খাজনার চেক দেখেই জমি রেজিস্ট্রী করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে জালিয়াতির ঘটনা ঘটে থাকলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com