চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে প্রেমের টানে ধর্মান্তরিত এক নারী চার বছর সংসার করার পর সর্বস্ব খুইয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অসহায় ওই নারী স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পাবার আশায় নাচোল থানায় গত ১৮সেপ্টেম্বর অভিযোগ দায়ের করেছে। প্রথম স্ত্রী সাথীকে না জানিয়ে গত ২৭ জুলাই মিলন আলী আবারও উপজেলার কসবা ইউনিয়নের বেলপুকুর গ্রামের আকতারুল ইসলামের কন্যা আক্তারা খাতুন(২০)কে কাজীর মাধ্যমে ১লাখ ২০হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে করে।
দুই নারীর অভিযুক্ত স্বামী হ’ল নাচোল পৌর এলাকার কাঁটাপুকুর মহল্লার লোকমান আলি ওরফে মোংলার ছেলে মিলন আলী (২৮)।
মিলনের পিতা লোকমান আলী ছেলের অপকর্মের কথা স্বীকার করলেও মিলন আলী তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মিলন বর্তমানে লাপাত্তা।
প্রতারিত সাথির অভিযোগ থেকে জানা গেছে, পেশায় ভুটভুটি চালক মিলন আলী ৪ বছর আগে নাচোল উপজেলার ভেরেন্ডী গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রী জগদীশের স্ত্রী, ২সন্তানের মা ফুলপতি(২২)’র সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
সেই সম্পর্কের খাতিরেই মিলন ফুলপতিকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ধর্মান্তরিত করে উপজেলার নসাচোল ইউনিয়নের রাজবাড়ী এলাকার এক মৌলভীর মাধ্যমে বিয়ে করে। ধর্মান্তরের পর ফুলপতির নাম রাখা হয় মোসাঃ সাথী। এরপর নাচোল বাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করে তারা। চার বছর পর গত ২৭ জুলাই মিলন আলী প্রথম স্ত্রী সাথী না জানিয়ে গোপনে উপজেলার কসবা ইউনিয়নের বেলপুকুর গ্রামের আকতারুল ইসলামের কন্যা আক্তারা খাতুনকে কাজীর মাধ্যমে রেজিস্ট্রি বিয়ে করে।
গোপনে বিয়ে করার পর থেকে সাথীকে এড়িয়ে চলতে থাকে মিলন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী অক্তারা খাতুন’র পিতা আকতারুল ইসলাম প্রতারকের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়ে পড়েছেন বিপাকে। আক্তারুলের মতে এরকম প্রতারকের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে আরো জানা গেছে, মিলনের দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানতে পেরে স্বামীর সঙ্গে ¯œায়ুযুদ্ধ শুরু হয় সাথীর। একপর্যায়ে সাথী জানতে পারেন মিলনের বাড়ি পৌর এলাকার কাঁটাপুকুর মহল্লায়। এরপর স্ত্রীর অধিকার ফিরে পাবার আশায় সাথী একদিন নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মিলনকে ধরে ফেলে। এ নিয়ে সেখানে হট্টগোল শুরু হলে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনকেই থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের প্রমাণপত্র না পেয়ে দন্ডবিধির ২৯০ ধারায় তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
এদিকে আদালত থেকে ছাড়া পেয়ে স্বামীর কাছে স্ত্রীর স্বীকৃতি পাবার আশায় গত ১৪ আগস্ট মিলনের কাঁটাপুকুরের মিলনের পিতার বাড়িতে উপস্থিত হলে মিলনের পরিবারের সদস্যরা সাথীকে বেধড়ক মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এতে আহত সাথী ওই দিনই নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়।
এ বিষয়ে মিলন আলীর পিতা লোকমান আলি মোংলার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি ছেলের অপকর্মের কথা স্বীকার করে বলেন, মিলন একটি হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে নাচোল বাজার পাড়ায় থাকে, এটা লোকমুখে শুনেছি।
এ ঘটনার সত্যতা জানতে মিলনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাথিকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে ও সাথীকে মারধোরের ঘটনা অস্বীকার করে। তবে কসবা ইউনিয়নের বেলপুকুর গ্রামের আকতারুল ইসলামের কন্যা আক্তারা খাতুনকে কাজীর মাধ্যমে বিয়ের কথা স্বীকার করেছে মিলন।
এদিকে স্বামীর স্বীকৃতির দাবিতে সাথীর অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।