পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত দেশ মিয়ানমার ও আঞ্চলিক যোগাযোগের সার্ক দেশগুলো ঘিরেই প্রাধান্য পেয়েছে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক। তবে বর্তমানে জাতিসংঘভুক্ত ১৯৩ দেশের মধ্যে ৫৮টিতে বাংলাদেশের মোট ৭৭টি মিশন রয়েছে। আরও ২১টি দেশে ২২টি মিশন খোলারও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অর্থনীতির বিষয়টি মাথায় রেখে প্রায় প্রতিটি দূতাবাসে সৃষ্টি করা হচ্ছে ইকোনমিক কাউন্সিলরের পদও।
জানা যায়, নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটন, আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন, আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেস, চীনের গুয়াংজো, ব্রাজিলের সাওপাওলো এবং জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে নতুন মিশন স্থাপনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া চীনের সাংহাই, আজারবাইজান, কম্বোডিয়া, লাওস, কাজাখস্তান, উগান্ডা, তিউনেশিয়া, তাঞ্জানিয়া, ঘানা, স্কটল্যান্ড, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, ইউক্রেন, মেলবোর্ন, চিলিতেও মিশন খুলবে সরকার। ভারতের চেন্নাই ও রুমানিয়ার বুখারেস্টেও সম্পন্ন হয়েছে মিশন চালুর সব প্রক্রিয়া।
চীনের বিশাল ভৌগোলিক আয়তন তথা ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং সর্বোপরি কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় গুয়াংজোতে মিশন খুলছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির সঙ্গে আমাদের পণ্য আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মোট আমদানির ২৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে চায়না পণ্যে। আয়ারল্যান্ডেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছে। সেই সঙ্গে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশটিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যাতায়াত বাড়ছে। দুদেশের মধ্যে ওষুধশিল্প ও চিকিৎসাসেবা, পোশাকশিল্প, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ প্রবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষায় সেখানে নতুন মিশন খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা। আর্জেন্টিনাতেও বাংলাদেশিদের উপস্থিতি ও ব্যবসা বহুগুণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পণ্য ও শ্রমবাজারের ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনাময় এ দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস স্থাপিত হলে তা তৈরি পোশাক ও শ্রমশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বুয়েনোস আইরেসেও মিশন খোলা হচ্ছে। ওই শহরে বর্তমানে কমবেশি ৯০টি দেশের কূটনৈতিক মিশন রয়েছে।
এদিকে আমদানিনির্ভর হওয়ায় বিশ্বের ২০২টি দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। বিশালসংখ্যক দেশ হলেও আমদানিতে শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে চীন, ভারত, জাপান, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, জার্মানি, কোরিয়া, ব্রিটেন থেকেই বেশি পণ্য আনা হয়। অন্যদিকে রপ্তানিতে আমেরিকা, স্পেন, ব্রিটেন ও ইউরোপের দেশই ভরসা। যদিও রপ্তানির জন্য ১৮৮টি দেশের সঙ্গে নিয়মিত লেনদেন করতে হয়। এর বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে রয়েছে আমাদের শ্রমবাজারের সম্পর্ক