এ সপ্তাহেই গ্লোব বায়োটেকের টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা অর্থাৎ মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য অনুমতি পেতে বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) চূড়ান্ত প্রটোকল জমা দেওয়া হবে। বাংলাদেশের স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক এরই মধ্যে খসড়া প্রটোকল জমা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রথম ধাপে তাদের উদ্ভাবিত টিকা প্রাণীর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে তারা প্রত্যাশিত মাত্রায় সাফল্য পেয়েছে।
টিকা পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী কে এম জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, চীনের নমুনা টিকা এসে পৌঁছার পরে তা নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে প্রয়োগ করা হবে। যাঁরা স্বেচ্ছায় এই টিকা প্রয়োগে সম্মত থাবেন শুধু তাঁদেরই এখন বাছাই করা হচ্ছে। যে নির্দিষ্ট সাতটি প্রতিষ্ঠানকে গবেষণার জন্য আইসিডিডিআরবি চেয়েছিল এরই মধ্যে সরকার সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে গবেষণায় যুক্ত হওয়ার জন্য অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। এখন টিকা প্রয়োগের উপযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের বাছাই করার ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালকরা সাহায্য করছেন। আইসিডিডিআরবির গবেষকদলের সদস্যরা হাসপাতালগুলোয় এরই মধ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিয়েছেন। নির্ধারিত হাসপাতালগুলো হচ্ছে—ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল-২, একই হাসপাতালের বার্ন ইউনিট, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, ঢাকা মহানগর হাসপাতাল ও হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল।
ড. কে এম জামান বলেন, ‘আমরা দুই হাজার ১০০ জনের শরীরে নমুনা টিকা প্রয়োগ করব। আর দুই হাজার ১০০ জনকে দেব প্লাসিবো (প্রতীকী ওষুধ)। এরপর প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহ ও প্রতি মাসে নিবিড়ভাবে তাঁদের পর্যবেক্ষণ করা হবে। যাঁদের মধ্যে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে তাঁদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করা হবে। কারো শরীরে জোর করে বা অনিচ্ছায় নমুনা টিকা প্রয়োগ করার সুযোগ নেই কিংবা করা হবেও না। যাঁরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন তাঁদের আমাদের গবেষকরা পুরো কাজ সম্পর্কে বুঝিয়ে বলছেন। তারপর নির্দিষ্ট ফরমেটে যাঁরা সম্মতি দিচ্ছেন তাঁদের এই কাজে যুক্ত করা হচ্ছে। প্রয়োগের আগে প্রত্যেকের শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যাঁরা এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন কাউকে এই নমুনা টিকা প্রয়োগ করা হবে না।
