চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর ঘাটে নৌকার অপেক্ষায় থাকা জাকিয়া বেগম কুলসুম (৩৬) নামে এক গর্ভবর্তী নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি পাঁকা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কদমতলা গ্রামের সেরাজুল ইসলামের স্ত্রী। শুক্রবার বিকেল পৌণে ৪টার দিকে পদ্মা নদীর কদমতলা ঘাটে তার মৃত্যু হয়।
পাঁকা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী আবুল কালাম আজাদ জানান, সাত মাসের গর্ভবর্তী ছিলেন কুলসুম। বেশ কয়েকদিন থেকে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। শনিবার থেকে অসুস্থের মাত্রা বেড়ে যায়। অবশেষে শুক্রবার দুপুরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে রওনা হন কুলসুমসহ তার পরিবার। কদমতলা পদ্মা নদীর ঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। বিকেল পৌণে ৪টার দিকে কদমতলা ঘাটে তিনি মারা যায়।
তিনি আরও জানান, পদ্মা নদীতে চলাচলের জন্য জরুরী সেবায় চালু করা হয় নৌ-আম্বুলেন্স। কিন্তু অশিক্ষিত হতদরিদ্র পরিবার হওয়ায় এবং তাদের বাড়িতে স্বামীসহ পুরুষ মানুষ না থাকায় নৌ-আম্বুলেন্স সার্ভিস নিতে পারেননি তারা। তবে চরাঞ্চলবাসীর জন্য নৌ-আম্বুলেন্স সার্ভিস পেতে হটলাইন সার্ভিস চালুর দাবি জানান তিনি। এমনকি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অবগত করেননি নৌ-আম্বুলেন্স সার্ভিস নেয়ার জন্য।
এদিকে সাবেক ইউপি সদস্য হোসেন আলী গর্ভবর্তী কুলসুমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কুলসুমের স্বামী একজন রাজমিস্ত্রি। বর্তমানে তিনি ঢাকায় কাজ করছেন। তাদের সংসারে ১২ বছর ও ৫ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এছাড়া কুলসুমের পরস্পর তিনটি সন্তান জন্মের আগেই মারা যায়। সর্বশেষ আরেকটি সন্তান পৃথিবীতে আগমনের আগে গর্ভবর্তীর করুন মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) দুরুল হোদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ইউপি সচিব আকবর হোসেন জানান, গর্ভবর্তী নারী কুলসুমের মৃত্যুর বিষয়টি তিনি অবগত নন। কিন্তু জরুরী সেবা পেতে নৌ-আম্বুলেন্সের জন্য কেউ তাকে অবহিত করেননি। চরাঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে নৌ-আম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা হয়েছে।