এমরান বাবু; গোমস্তাপুর সংবাদদাতাঃ আমের রাজধানী নামে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলা সদর রহনপুরে আম বাজার ধীরে ধীরে জমে উঠছে। জেলা প্রশাসন কর্তৃক গত ২২ মে আম পাড়ার মধ্য দিয়ে রহনপুরে আম ব্যবসার সূত্রপাত ঘটে। প্রথমে গোপালভোগ আম দিয়ে বাজার শুরু হলেও বর্তমানে বাজারে খিরসাপাত, ল্যাংড়া, গুটি, লক্ষণভোগ, গিরিয়াদাগী, কালিভোগ প্রভৃতি জাতের আম দেখা যাচ্ছে।
আম মৌসুমের শুরুতেই মহামারী করোনা ভাইরাস চরম আকার ধারন করলে জেলা প্রশাসন পরপর দু সপ্তাহ কঠোর লকডাউন ঘোষনা করে। বর্তমানেও কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করে লকডাউন চলমান রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আম ব্যবসায়ীরা রহনপুর আম বাজারে আসা শুরু করেছেন। যার ফলে আম বাজার জমে উঠতে লেগেছে। লকডাউনের কারনে আম ব্যবসায়ীরা সময় মত আসতে না পারায় এবং আমের আড়ৎগুলোর পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকায় অনলাইন আম ব্যবসায়ীরা বেশ চুটিয়ে ব্যবসা করছে। অনলাইন আম ব্যবসায়ীদের কারনে কুরিয়ার সার্ভিসের স্থানীয় শাখাগুলো চরম ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে হালে কুরিয়ার সার্ভিসের সেবার মান নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
বর্তমানে বাজারে গোপালভোগ ২৩০০-২৫০০, খিরসাপাত ১৮০০-২৫০০, ল্যাংড়া ১৭০০-২২০০, গুটি ৮০০-১৫০০, কালিভোগ ৯০০-১৫০০ প্রভৃতি দামে বিক্রয় হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারনে সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য রহনপুরে দীর্ঘদিনের পরিচিত আম বাজারটি বর্তমানে ১ কিঃ মিঃ দূরে রহনপুর পিএম আইডিয়াল কলেজ মাঠে স্থানান্তরিত হয়েছে।
কিন্তু আমের আড়ৎগুলো পূর্বের জায়গায় থাকায় আম ব্যবসায়ীদের কে দূর থেকে আম ক্রয় করে নিয়ে আসতে হচ্ছে। অনলাইন আম ব্যবসায়ীগণ খুব সতর্কতার সাথে গ্রাহকের মন জয় করার লক্ষ্যে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। এবার অন্যান্য বারের তুলনায় অনলাইন আমের ব্যবসা উর্দ্ধমূখি । অনলাইন ব্যবসায়ী তাসরিফ আহম্মদ জানান, এবার আমের ফলন ভাল হওয়ায় ব্যবসা নিয়ে তারা প্রচন্ড আশাবাদী। আম আড়ৎদার আসিকুল ইসলাম বলেন, আমের বাজার বর্তমানে কিছুটা মন্দা হলেও আগামীতে আমের ভাল দাম পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রহনপুর আম আড়ৎদার সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি হুমায়ন কবির বাবু বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে আম ব্যবসার শুরুর দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আম রপÍানি কম হলেও বর্তমানে প্রতিদিন ৯০ থেকে ১০০ টি আম বোঝায় ট্রাক রহনপুর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া গত ২৭ মে থেকে রহনপুর চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে ঢাকা গামী ম্যাংগো এক্সপ্রেস ট্রেনে প্রতিদিন ৪ হাজার থেকে ৮ হাজার কেজি পর্যন্ত আম পরিবহন করা হচ্ছে বলে রহনপুর রেলওয়ের সহকারী স্টেশন মাষ্টার মামুন জানান।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার গোমস্তাপুর উপজেলায় ৪ হাজার ২ শত ৫ হেক্টর জমিতে আমের ফলন হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৮ শত ৪৫ মেঃ টন। বর্তমান আবহাওয়া আমের ফলনের জন্য উপযোগী হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরন হবে বলে আশা করা যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদ হোসেন বলেন, আমের ফলন ভাল হলেও চলমান করোনা ভাইরাস ও লকডাউনের কারনে আম চাষী ও ব্যবসায়ীগণ আমের নায্যমূল্য থেকে বি ত হতে পারে । তবুও সব শঙ্কা কাটিয়ে আম ব্যবসায়ীগণ উপকৃত হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।