May 8, 2021

বদলে গেছে আম বাগানের ধরন


চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জুড়ে প্রতি বছরই বাড়ছে আম বাগান।তবে বদলে গেছে আম বাগানের ধরন। প্রচলিত বড় গাছের আম বাগানের স্থান দখল করছে, ছোট গাছের ঘন আমের বাগান।জেলার চাষিদের এখন আগ্রহ আম্রপালি, বারি-১১, বারি-৪ গৌড়মতি এ ৪ জাতের দিকে।এতে পুরাতন জাত ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসাপাত,আসিনা,গুটি এসব জাতের নতুন বাগান গড়ে উঠছে না।এর ফলে এ জাতগুলো হুমকির মধ্যে পড়বে বলে ধারনা করছেন অনেক কৃষক।

জেলা কৃষি অধিদফতর সুত্রে জানা গেছে, গত দশ বছরে জেলায় ১১ হাজার ৪৫৮ হেক্টর জমির আমবাগান বেড়েছে।গত ২০১১ সালে আম বাগানের জমি ছিল ২৩ হাজার ৭০ হেক্টর।এর মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বেড়ে উঠেছে ছোট গাছের ঘন আমের বাগান।কম সময়ে লাভবান হওয়ার আসায় চাষিরা ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসাপাত,আসিনা আমের পরিবর্তে লাগাচ্ছেন উচ্চ-ফলনশীল জাত।

নাচোলের খেসবা এলাকার বাবু।সে নতুন করে ২৫ বিঘা জমিতে চাষ শুরু করছে আম্রপালি ও বারি- ৪ জাতের আম গাছ।তিনি জানান, আমি এ জমিটি লিজ নিয়েছি ১৫ বছরের জন্য। এবার নতুন করে এ জাতের আম চাষ শুরু করেছি।প্রথম বারে ২৬০০ গাছ লাগিয়েছি।একটি গাছ থেকে আরেকটির দূরত্ব প্রায় ৭-৮ ফুট।তিনি আরো জানান, কম সময়ে লাভবানের আশায় উচ্চ ফলনশীল জাতগুলোর বাগানই বাড়ছে।গাছ ছোট হওয়ায় পরিচর্যা থেকে শুরু করে আম নামানো সহজ হয়।অন্যদিকে কম জায়গায় বেশি ফলন পাওয়া যায়।’

সদর উপজেলার সুন্দরপুর এলাকায় বেড়ে উঠেছে রমজান আলীর বারি-১১, বারি-৪ এ দু জাতের আম বাগান।গত দু বছর আগের লাগানো এ বাগানে মুকুল ফুটে বের হয়েছে আম।চোখে পড়ার মতো আম গুলো।তিনি জানান, গত কয়েক বছর থেকে আমের দাম সে ভাবে পাইনি।কয়েকজনের মুখে শুনে এ জাতের আমের গাছ লাগিয়েছি ৪ বিঘা।আশা করছি লাভবান হবো।

আম চাষি সাইদুর রহমান। তিনি জানান, পুরাতন জাতের আম গাছ থেকে ফলের জন্য অিপেকাষা করতে হয় প্রায় ৭-৮ বছর। আর উচ্চ ফলনশীল আমগাছ অধিক পরিমাণে ঘন করে লাগানো যায়। এ ছাড়া দুই বছরেই ফল পাওয়া যায়।এসব কারনেই এ ধরনের বাগানের দিকে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন আম চাষিরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।তিনি জানান,গত বছর জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল আড়াই টন। এ বছরও এই উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।তিনি অরোও জানান, ‘বরেন্দ্র অঞ্চলে আমবাগান বাড়ছে। মূলত গৌড়মতি, যাদুভোগ, আম্রপালি, বারি-১১-সহ বিভিন্ন জাতের আমগাছ লাগাচ্ছে। আমের বাগান করলে জমির মূল্যও বাড়ে, বাগানে অন্যান্য ফসল করতে পারে। এছাড়া পরিবেশও ভালো থাকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. কামরুল ইসলাম।তিনি জানান, জেলায় স্বল্পমেয়াদী বাগান গড়ে ওঠায় নতুন নতুন জাতগুলো জনপ্রিয় হচ্ছে। বড় গাছের বাগান করলে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়। সেখানে ছোট গাছে ফল আসে দুই তিন বছরে।’ কৃষকরা লিজ নিয়ে অল্প সময়ে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাচ্ছে। তাই তারা আম্রপালি, বারি-১১, বারি-৪ এর মত জাতের আম চাষ করছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল: amarchapaibd@gmail.com