Showing posts with label জাতীয়. Show all posts
Showing posts with label জাতীয়. Show all posts

Apr 28, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক যুদ্ধাপরাধীর সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু

চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক যুদ্ধাপরাধীর সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু


চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা যুদ্ধাপরাধীর মামলায় আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেকে)চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। ওই আসামি সাত রশিয়া এলিাকার মৃত কুতুবউদ্দিনের ছেলে  আফসার উদ্দিন (৮০)। এ সংবাদটি একটি সুত্র নিশ্চিত করেন।

সুত্র জানায়, মৃত আফসার উদ্দিন বার্ধক্য জনিত কারনে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো।গত রবিবার (১৮ এপ্রিল) উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেকের ৪৩নং ওয়ার্ডে ভর্তি হয়।চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে দিন ভোরে মৃত্যু বরণ করেন। ওই ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধী আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী হিসেবে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।কয়েদি নং ১৮১৪/এ।

উল্লেখ্য, সে ২০০৮ সালের ২৮ মার্চ তার নামে মামলা হয়। জি আর নং ৮৬/০৮। ১৩ বছর পর তার মৃত্যু হলো।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা আজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা আজ

ফাইল ছবি।



চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বস্তির বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছে জেলা বাসি। আজ সে উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। ওই প্রার্থনাকে বলে ইসতেস্কার নামাজ। আজ (২৮ এপ্রিল) সকালে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামো-শংকরবাটির পাইকোড় তলা মোড়ের পাশ্বের চাতালে সকাল ৮ টায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা যায়। এ সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন ওই নামাজের আয়োজক কমিটির সদস্যরা।

হেফজুল উলুম মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা গিয়াস উদ্দিন জানান; অনাবৃষ্টি, খরা, ঝাঝালো বাতাসে অতিষ্ঠ মানুষ, প্রাণী গাছ পালা। তাই বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করা হবে৷ এখানে সকল পেশার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।

 

Apr 27, 2021

গোমস্তাপুরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালিত

গোমস্তাপুরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালিত

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ 
এমরান আলী বাবু, 

জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে গরিব, অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ খাদ্য সামগ্রীগুলো বিতরণ করা হয়। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রেজা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান, রহনপুর পৌর মেয়র মতিউর রহমান খাঁন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদ পারভেজ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আতিকুল ইসলাম আজম সহ অন্যরা। 

উল্লেখ্য, উপজেলার শতাধীক গরিব, অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে ৫ কেজি চাউল, ৩ কেজি আলু, ১ কেজি করে পেঁয়াজ ও লবণ সহ আধা কেজি তেল, ছোলা ও মসুর ডাল বিতরণ করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রলীগ দিবে ২৪ ঘন্টা টেলিমেডিসিন সেবা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রলীগ দিবে ২৪ ঘন্টা টেলিমেডিসিন সেবা


“করোনা মহামারী মোকাবেলায় গত বছরের মত এবারও জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকা চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে টেলিমেডিসিন টিম গঠণ করা হয়েছে যেই টিম ২৪ ঘন্টা জেলার মানুষদেরকে মোবাইলে চিকিৎসা সেবা ও করোনা মোকাবেলায় পরামর্শ প্রদান করবে।”এ সংবাদটি নিশ্চিত করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও টেলিমেডিসিন টিমের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সাইফ জামান আনন্দ।

কোভিড -১৯ এর সেকেন্ড ওয়েব মোকাবেলায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ ২৫ এপ্রিল জরুরী প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দিন-রাত ২৪ ঘন্টা টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছে। ঘরে বসেই রোগীদের চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়ার কাজ করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের টেলিমেডিসিন টিম। 


প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তিন জন সেবা দিবেন। ডাঃ তৌহিদুল ইসলাম সুজন ০১৭২৫৬৬৯৪৩৩, মনিষা জামান মিম ০১৭৮০৭৯২১০৭, আতিকা মাইশা শিমু ০১৭৭০৮৭৯৩৮০ এ নাম্বারে তারা সেবা প্রদান করবে।

প্রতিদিন বিকাল ৪ টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দুজন সেবা দিবেন।ডাঃ ওয়াহিদা আনসারি ০১৭১০৮৭৪১৭৪, আনিকা তাসিন পিংকি ০১৭১০০১৩০৬৯ এ নাম্বারে তারা সেবা প্রদান করবে।

প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত দুজন সেবা দিবেন।আল ফয়সাল ইমন ০১৭৩১৪১১৮৩৩,আইয়ুব আলী ০১৭৭৬৮৮১৭৪১ এ নাম্বারে তারা সেবা প্রদান করবে।

 

 

 

Apr 26, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারি ঘর ছাড়তে চান গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারি ঘর ছাড়তে চান গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা


চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের রানিহাটীতে অসহায় দরিদ্র ও ভূমিহীন মানুষদের বসবাসের জন্য প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে নির্মাণ করা গুচ্ছ গ্রাম। এটি ২০১৮ সালে দোচালা টিনের একটি ঘর,অস্থায়ী একটি টয়লেট ও হাজার খানেক মানুষের জন্য মাত্র ৯টি টিউবওয়েল বসিয়ে ২০১৮ সালে উদ্বোধন করা হয় গুচ্ছগ্রামটি। 

দু-দফায়  ১৩০টি পরিবার সেখানে বাড়ি বরাদ্দ পায়। পরিবারগুলা সেখানে ওঠার পর থেকেই নানান সমস্যায় ভুগছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা জানান- নদী ভাঙনের কারনে আমি নিঃস্ব হয়েগেছি। পরে আমাকে সরকারিভাবে গুচ্ছগ্রামে একটি ঘর দেয়া হয়। যে ঘরটি তাকে দেয়া হয়েছে ওস ঘরের মাথার ওপর টিনের ছাউনি। রোদে যেন ঘর থেকে আগুন বের হতে থাকে। বৃষ্টির দিনে বাড়ির ভেতর হাঁটু সমান পানি জমে কাদায় ভরে যায়। ক্ষোভে ইচ্ছা হয় সরকারি ঘর ছেড়ে বাইরে কোথাও গাছতলায় থাকলেও শান্তি পেতাম।

ভিক্ষু আলী নামে অপর এক বাসিন্দা। তিনি জানান- গুচ্ছগ্রাম হওয়ার পরে আমাকে একটি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। নেই কোন নিরপত্তা। প্রথমে আমি কোনো সমস্যা বুঝতে না পারলেও দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অসহায় হয়ে পড়ছি।তার দাবি, আগের বাড়িতেই ভালো ছিলাম। এখানে পানি সঙ্কট, বিদ্যুৎ সঙ্কট ও মাদক বেচা-কেনা হয়। এনিয়ে থাকার মতো কোনো পরিবেশ নেই।

আদরি বেগম নামে এক নারী জানান, গুচ্ছগ্রামে যে টিউবওয়েল আছে সেগুলোতে আর্সেনিক আছে। ওই পানি দিয়ে রান্না, গোসল, কাপড় ধোয়া কিছুই করা যায় না। পাঁচ বছরের শিশু আবদুল্লাহ জানায়, আমরা অনেক ভয়ে ভয়ে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে যাই। যদি গুচ্ছগ্রামের ঘরটি চালু করে পড়ালেখার ব্যবস্থা করা হত তাহলে আরও ভালো পড়ালেখা হত। একই কথা জানান অন্যান্য বাসিন্দারাও। তাদের দাবি, গুচ্ছগ্রামে বসবাসের মতো কোনো অবস্থা নেয়। এখানে দ্রুত বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হোক।

নয়ালাভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন, পানি এবং বিদ্যুতের বিষয়টি একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। শিমুল এমপি আশ্বাস দিয়েছিলো এখানের যত সমস্যা,সবগুলায় তিনি সমাধান করার কথা।

শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার সাকিব আল রাব্বি। তরি মুঠোফনে রিং দেয়া হলেও তার সাথে কথা বলা হয়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গরমে হাঁসফাঁস করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাসী

গরমে হাঁসফাঁস করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাসী

ফাইল ছবি।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্বরোডের অক্টয়মোড় এলাকায় রাস্তার পাশের বট গাছের ছায়ায় রিকশার সামনের সিটে পা তুলে পেছনের সিটে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ৪০ বছরের এক যুবক। পাশেই আরও দুজন রিকশাচালক বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তাদের পাশেই একজন পুলিশ কনস্টেবলকেও ওই গাছতলায় দাঁড়াতে দেখা যায়।

আলাপকালে ওই যুবক রিকশাচালক হারুন রশিদ বলেন, ‘হামি এখানে ম্যাইক্ষণ থ্যাইক্যা বইস্যা আছি।এখানে বইস থাকার আগে, হরিপুর থ্যাক্যা একটা ক্ষ্যাপ (যাত্রী) ম্যারাছি।এত্ত গরম, হার জ্বি খ্যাঁনটা আঁপাড়-ধাঁপাড় করছে। রোজা আছিতো জ্বী তাই একটু কষ্ট হয়ছে।

শুধু ওই রিকশাচালক কিংবা ট্রাফিক পুলিশরাই নন গত কয়েকদিনের গরমে হাঁসফাঁস করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাসী। বাসাবাড়ি, অফিস কিংবা রাস্তাঘাট কোথাও শান্তি মিলছে না। গত সপ্তাহে আধা ঘন্টা ধরে ফুরফুরা বৃষ্টি হয়েছে।কিন্তু  প্রখর রোদে ঘর-বাইর সব জায়গা এখন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থেকে বিস্তার লাভ করতে পারে।গতকাল রোববার (২৫ এপ্রিল) দেশে গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যশোরে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। আজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ধরা হয়েছিলো ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রোববার সরেজমিন জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে , প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। রাস্তাঘাটে অনেকেই প্রখর রৌদ্রকিরণ থেকে রক্ষা পেতে ছাতা মাথায় বের হয়েছেন।শ্রমজীবী মানুষ বিশেষ করে রিকশাচালক ও ঠেলা-ভ্যানগাড়িচালকরা গরমে ঘেমে অস্থির হচ্ছেন।কেউ বা গামছা দিয়েঘাম মুসছেন।রিক্সা চালক আলামিনকে দেখা যায়, সে কিছুক্ষণ পর পর গামছা দিয়ে মুখ মুছছেন। তবুও গরম কাটছে না।

জেলার শিবগঞ্জের বাসিন্দা গৃহবধূ তাহেরা খাতুন বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে রোজা রেখে গরমে অস্থির হচ্ছি। একাধিকবার গোসল করে শান্তি পাবো তারও জো নেই। প্রচণ্ড রোদে ছাদের ট্যাংক গরম হয়ে পাইপ দিয়ে গরম পানি বের হয়। রান্না ঘরে ইফতারির জোগাড় করতে গিয়ে রীতিমতো ঘেমে গোসল করতে হয়।’

Apr 19, 2021

দেশে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু আজ

দেশে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু আজ


দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটিই বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ নিয়ে টানা তিন দিন করোনাভাইরাসে ১০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হলো। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৪৯৭ জন।

একই সময়ে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ২১৭ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ২৩ হাজার ২২১ জন।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

Apr 18, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমজীবীরা যেমন আছেন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমজীবীরা যেমন আছেন




সরকারের ঘোষণা করা লক ডাউনের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমজীবীরা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। নেই কোন কাজ, বাড়িতে নেইও ভাত। কে খেতে দিবে তাঁদের। যারা এক সময় দিন আনত আর দিন খেতো। এ লক ডাউনে তাদের রাখেনি কেউ খোঁজ। কাজ হারিয়ে নিঃস্ব তারা। প্রথম বারে সরকারের দেয়া লক ডাউনে সরকারি ত্রাণ ও ব্যক্তি উদ্যেগে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলো সমাজের সেবা করা লোকেরা। কিন্তু এবার কেউ সাহায্যের হাত বাড়াইনি। তাহলে তারা যাবে কোথায়? কোথায় দু-মুঠো ভাত খেতে পাবে।

দিন আনে দিন খায় যারাঃ রিক্সা চালক, ভ্যান চালক, ইজি বাইক চালক,কুলি,কামার,কুমার,মুচি,নাপিত। এরা সাধারণত দিন এনে দিন খায়।

রিক্সা চালকঃ জেলা শহরের বিশ্বরোডে দেখা মিলে রিক্সা চালক তৈমুরের। কথা বলছিলো প্রতিবেদকের সাথে; তিনি জানান; আমার দিন ভালো চলছে না। সকাল বেলায় বের হতে পারিনা রিক্সা নিয়ে। সন্ধার পর বের হই বাড়ি থেকে। এক মালিকের রিক্সা চালাই; আজ ৩০০ টাকা আয় হয়েছে। তার মধ্য থেকে মালিককে দিতে হয় ১৫০ টাকা। চার্জার খরচ ৫০টাকা। কি রাখবো আর কী খাবো। রাস্তাতা তো লকজন নাই। কাকে নিয়ে যাবো কার গন্তব্য স্থলে।

অটো চালকঃ ব্যাটারী চালিত অটো চালক জামাল হোসেন। দেখা হয় প্রতিবেদকের সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বটতলা হাটে। তিনি জানান; বাবা মাকে দিয়ে আমি সংসার চালাই। দিন আনি; দিন খাই। বাড়িতে পোষা একটি মাত্র ছাগল। সেটাও বিক্রি করতে এসেছি হাটে। যাতে করে সংসারটা ঠিক মতো চালাতে পারি। কে রাখবে আমাদের খোঁজ।

ভ্যান চালকঃ আসগর আলী একজন পেশায় ভ্যান চালক। বাড়ি তার বারোঘরিয়ায়। মনটা ভার করে বসে ছিলো শান্তিমোড়ে। এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলো যদি কেউ আসে। কথা হয় প্রতিবেদকের সাথে।তিনি জানান, লক ডাউনের ৪ দিন পর বাধ্য হয়ে বের হয়েছি। বাড়িতে দেড় কেজি চাল আর ৩-৪ টা আলু ছাড়া কিছুই নাই। এখানে দেড় ঘন্টা ধরে বসে আছি কোন লকজন নাই। এখনও অবধি কেউ সাহায্য করেনি।

কুলিঃ রেল স্টেশনগুলিতে তাদের ভারী ভারী মালপত্র নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক মানুষ থাকেন। আগে তাঁদের কুলি বলা হত।শহরে রেলস্টেশন এলাকার আঃ করিম।পেশায় সে একজন কুলি।তিনি জানান, সকল ট্রেন বন্ধ।আমার কোন কাজ নাই। একেবারে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি করোনা কালে।গত বারেরে করোনার ধাক্কা সারিয়ে উঠতে পারিনি।ফের সরকার লক ডাউন দিয়েছে।গতবার কয়েকবার সাহায্য পেয়েছিলাম এবার সেটাও নাই।

কামারঃ কামার একটি প্রাচীন পেশা যার কাজ লোহার জিনিসপত্র তৈরি করা। মূলত হিন্দু ধর্মের জনগোষ্ঠী এই পেশায় জড়িত। একসময় গৃহস্থালি ও কৃষিকাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ লৌহযাত যন্ত্রপাতি কামাররা প্রস্তুত করতেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল দা, বটি, পেরেক, শাবল, কুড়াল, ছুরি ইত্যাদি।বারোঘরিয়ার পুলপাড়া এলাকার রণজিৎ বসু। পেশায় সে একজন কামার। মুলত তার কাজ হচ্ছে দা,বটি,হাসুঁয়া এসব তৈজসপত্র গুলো বানানো। তারও কোন কাজ নেই। বাড়িতে সময় কাটে তার।আফসোস করে বলে কেউ তার খোঁজ রাখেনি।

মুচিঃ জুতা তৈরি এবং জুতা মেরামতের কাজ করেন। ত্রুটিযুক্ত বা পুরানো জুতা-সেন্ডেল মেরামত করে রং মাখিয়ে চাকচিক্য সৃষ্টি করাও এদের কাজ।বিশ্ব রোডে দেখা মিলতো মুচি নিতাইয়ের সাথে।তিনি জানান, কে রাখে কার খোঁজ।এখন তো লক ডাউন রাস্তায় কোন লোকজন নাই।দিন কষ্টেই যাচ্ছে। কেউতো আর খোঁজ রাখবেনা।নিজের ভালো থাকা নিজেকে থাকতে হবে।

নাপিতঃ নাপিত বা নরসুন্দর এমন এক শ্রেণীর পেশাজীবি যারা বিভিন্ন ধরনের বা রকম ভাবে মানুষের চুল ছাঁটেন এবং দাড়ি-গোঁফ কামিয়ে থাকেন। নাপিতরা যেখানে চুল ছাঁটেন তাকে সাধারণ বার্বার সপ বা হেয়ার সেলুন অথবা শুধু সেলুনও বলা হয়ে থাকে।শান্তি মোড়ের এক নাপিত। তিনি জানান, আমরা তো সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ।আমাদের আর কষ্ট কে বোঝবে।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, রাজনৈনিত ব্যক্তিরা সব সময় জনসেবা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন।সুতরাং এ করোনা কালে যেন তারা গরিব ও ছিন্নমূল মানুষের পাশে দাড়ায়।

বাড়ছে লকডাউনের মেয়াদ!

বাড়ছে লকডাউনের মেয়াদ!





করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধের) মেয়াদ আরও এক দফা বাড়তে পারে। বিধিনিষেধ শিথিলের জন্য বিভিন্ন পেশাজীবীদের চাপ থাকলেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করছেন মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, আগামীকাল সোমবার (১৯ এপ্রিল) সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় ভার্চুয়াল সভা হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আয়োজনে এই সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা যুক্ত থাকবেন। লকডাউন বাড়ানোর বিষয়ে এই সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘লকডাউন বাড়বে কী বাড়বে না, সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দু-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত হলে জানিয়ে দেয়া হবে। তবে লকডাউন বাড়ানোর পরামর্শ তো রয়েছেই।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। আগামী ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। এই লকডাউন ইতোমধ্যে বিভিন্ন পেশাজীবীদের দুর্ভোগে ফেলেছে। শ্রমজীবী মানুষের কষ্টটা একটু বেশিই হচ্ছে।

সর্বশেষ শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিনে একই সংখ্যক মৃত্যু হলো। একই সময়ে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৩ জন।

Apr 10, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কঠোর দোকানিরা, ক্রেতাদের ঢিলেমি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কঠোর দোকানিরা, ক্রেতাদের ঢিলেমি


করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে শপিংমল ও দোকান-পাট খুলে দেয়া হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব মার্কেটের দোকান-পাট খোলার কথা থাকলেও, তা মানছেন না অনেকেই।দোকানিরা কঠোর হলেও, ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ।

শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে জেলার একাধিক মার্কেট ও কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রবেশপথে নিরাপত্তারক্ষীরা হাতে স্যাভলন মিশ্রিত পানি ছিটাচ্ছেন।দোকান গুলোতে নেই সামাজিক দূরত্ব। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক থাকলেও, সেটা অনেকের থুতনির নিচে স্থান পেয়েছে। শর্ত সাপেক্ষে মার্কেট খোলার অনুমতি দেয়ার জন্য সবাই সরকারের প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে দোকানীর। দোকান মালিকরা বলছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলে মার্কেট থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা ।


গত ৫ এপ্রিল ৭ দিনব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর জেলায় ২য় দিনে জেলার বণিক ও মার্কেট সিমিতির লোকেরা প্রতিবাদ সভা করেন।এ সময় তারা বলেন,‘স্বাস্থ্যবিধি মানবো, দোকানপাট খুলবো।’ এমন অবস্থায় শুক্রবার থেকে পাঁচদিন কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শপিংমল খোলা রাখা যাবে বলে ঘোষণা দেয় সরকার।স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন না করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। তবে মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেট ও হাতেগোনা কয়েকটি ফ্যাশন হাউজে প্রবেশ করতে গেলে হাতে ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে স্যাভলন মিশ্রিত পানি।আবার কখনো বোতলে করে কাপড় কাঁচার জেট আর পানি মিশিয়ে ক্রেতাদের হাতে ছেটানো হচ্ছে।

মার্কেটের জুতার ব্যবসায়ী।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, ‘৬ দিন পর আজকে দোকান খুলেছি। আমরা মাস্ক ছাড়া কাউকে দোকানে ঢুকতে দিচ্ছি না।’ক্রেতাদের বারবার বারণ করার পড়েও তারা কথা শুনছেনা।

ফুটপাতের দোকানদার শরিফ আহমেদ। তিনি জানান, ‘দোকান খুলছি ঠিক আছে, তবে বিক্রি তো হয় নাই। আমাদের তো দিনে এনে দিন খাওয়ার অবস্থা। একদিন বিক্রি না হলে পরিবার নিয়ে চলতে কষ্ট হয়।’ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে, মাস্ক পরা নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েরই সমান অনাগ্রহ। এ জন্য তাদের কাছে আছে গরম লাগা, কথা বলতে না পরাসহ নানা অজুহাত।

নিউ মার্কেটে এক ক্রেতাকে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে, তিনি বলেন ‘মাস্ক পরি নাই তো কী হইছে?’ গত একদিনে ৭৪ জন করোনাভাইরাসে মারা গেছেন জানালে তিনি বলেন, ‘মরে যাওয়া ভালো তো!’ তদারকির কেউ নেই

দোকান-মার্কেটে স্বাস্থ্যঝুকি মানা হচ্ছে কি না তা তদারকি করতে দোকান মালিক সমিতি, পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট কারও উপস্থিতি চোখে পড়েনি। এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারছেন অনেক ব্যবসায়ী। তাই তারা নিয়েছেন পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা।

এমনই একজন ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘দোকানের বাইরে রশি টানিয়ে দিয়েছি। বাইরে থেকে বেচাকেনা করছি। কাউকে দোকানের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছি না। মাস্ক ছাড়া কারও কাছে পণ্য বিক্রি করছি না ‘ তিনি বলেন, ‘যারা সামনে থেকে করোনা রোগী দেখেছে বা আত্মীয় স্বজনকে অসুস্থ হতে দেখেছে, একমাত্র তারাই জানে করোনা কতটা ভয়াবহ। ম্যাজিস্ট্রেট আসলে জরিমানা করলে অন্য ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান চালানো সম্ভব। প্রথম দিকেই যদি কার্যকর লকডাউন দিতো, তাহলে পরিস্থিতি এমন হতো না।’

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, সরকারের এমন ‍উদ্যেগকে সাধুবাদ জানিয়েছে দোকানিরা। দোকানিরা যদি করোনা সংক্রোমণ রোধে সরকারকে সাহায্য না করে, সরকার ফের লক ডাউন দিতে বাধ্য। তখন দোকানিদের উপরে আস্থা থাকবেনা সরকার বাহাদুরের।দোকানিরাকে সাফ জানিয়ে দিতে হবে, মাস্ক ছাড়া রকোন পণ্য বিক্রয় করবো না।তাহলে হয়তো কিছুটা করোনা ভাইরাস সংক্রোমণ রোধ করা যাবে।

বণিক ও মার্কেট সমিতির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বরাবরের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব মার্কেটের দোকান-পাট খোলার কথা বলছেন তারা।

Apr 9, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেড়েছে সবজির দাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেড়েছে সবজির দাম


করোনায় কড়াকড়িতে বেড়েছে সবজির দাম
সপ্তাহের ব্যবধানে জেলার বাজারগুলোতে পটল, বেগুন, শিম, ধুন্দল, বরবটি, ঢেঁড়স, লাউ, টমেটোসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। করোনায় বিধিনিষেধ আরোপের কারণে সবজির গাড়ি কম আসায় এই দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে এক সপ্তাহের লকডাউনের দ্বিতীয় দিন ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও এখন তা আবার বেড়েছে। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি আবার আগের দামে ফিরে গেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী ও লাল লেয়ার মুরগির দাম।

শুক্রবার জেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। শবেবরাতের আগে থেকেই এই দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার। তবে করোনায় বিধিনিষেধ আরোপের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকায় নেমে এসেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবারও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা বিক্রি হয় বেশিরভাগ বাজারে। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি গত মঙ্গলবার সোনালী মুরগির দামও কমে। ৩৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এই মুরগির দাম একবারে কমে ২৬০ থেকে ২৪০ টাকায় নেমে আসে। গত কয়েকদিনে এই মুরগির দাম আর পরিবর্তন হয়নি। আর দীর্ঘদিন ধরে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগি এখনো ওই দামেই বিক্রি হচ্ছে।


মুরগির দামের বিষয়ে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী শরিফুল বলেন, গতকাল ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ পাইকারিতে দাম বাড়ায় ১৬০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। শুক্রবার হওয়ার কারণে এই দাম বেড়েছে বলে আমাদের ধারণা। এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সজনের ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে সজনের ডাটার কেজি বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে একমাত্র এই সবজিটির দাম কমেছে।


অপরদিকে পটল, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়সের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
দাম বাড়ার তালিকায় থাকা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে। এর পাশাপাশি পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে ছিল।

বেশিরভাগ সবজির দাম বাড়লেও ফুলকপি ও বাঁধাকপি আগের মতো ৩০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দল, চিচিঙ্গা কিনতেও ভোক্তাদের ৫০ টাকার ওপরে গুনতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে চিচিঙ্গা। শশা আগের সপ্তাহের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজার থেকে এখন শাক এক আঁটি কিনতে ১০ টাকা বা তার বেশি গুনতে হচ্ছে। পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লালশাক, সবুজ শাক, পাট ও কলমিশাক। পুঁই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এক আঁটি ডাটা কিনতে লাগছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী শরাফত আলী বলেন, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ এমনিতেই কমে গেছে। এর সঙ্গে এখন লকডাউনের কারণে সবজির গাড়ি কম আসছে। এসব কারণেই সবজির দাম একটু বেড়েছে।

সবজির গাড়ি আসতে সমস্যা হচ্ছে কি-না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সবজির গাড়ি আসতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে ব্যাপারীরাই মাল কম পাঠাচ্ছেন। মাল বেশি পাঠালে যদি ঠিকমতো দাম না পাওয়া যায়, তেমন আশঙ্কা করেই হয় তো ব্যাপারীরা মাল কম আনছেন।

চাঁপাই বাজার সবজি বিক্রি করা হজরত আলী বলেন, আড়তে অন্যসময়ের তুলনায় গত কয়েকদিন মাল কম আসছে। দামও বাড়তি। বাড়তি দামে কেনার কারণে আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

তিনি বলেন, শীতের সবজির সরবরাহ কমে আসায় এমনিতেই কয়েকদিন ধরে সবজির দাম বাড়ছিল। এর মধ্যে লকডাউন এসে দাম বাড়ার প্রবণতা আরও উসকে দিয়েছে। আমাদের ধারণা সহসা আর সবজির দাম কমবে না।

প্রায় একই ধরনের কথা বলেন
নতুনহাট সবজি বিক্রেতা মিলন। তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই এখন সবজির দাম বাড়ার কথা। কারণ শীতের সবজি প্রায় শেষ। এর মধ্যেই লকডাউন এসেছে। লকডাউনের কারণে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। আর সরবরাহ কমলে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।

Apr 8, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশ্বরোডে দেখা গেছে বেশ কজন রিক্সা ও সিএনজি চালক বসে আছে। মাথার ওপর কড়া রোদের তাপে ঘামছেন তারা। রঙিন একটি গামছা মাথায় বাঁধার পাশাপাশি মুখেও পেঁচিয়ে রেখেছেন রিক্সাচালক তরিকুল। কেউ যদি মাক্স ছাড়া বাইরে হচ্ছে,সেও বাইরের দোকানে গিয়ে মাক্স কিনে মুখে দিচ্ছেন। ‍অনেক গৃহীনিকে দেখা যাচ্ছে , তদের ব্যবহারিক ওড়না মুখে পেঁচিয়ে থাকতে দেখা গেছে।

ছবিটি গতকাল শিবগঞ্জে তোলা হয়।

মুখে মাস্ক কেন পরেননি এ প্রশ্ন করতেই হকচকিত হয়ে রিকশাচালক তরিকুল ইসলাম জানান , মুখে মাস্ক পরে বেশিক্ষণ রিকশা চালালে দম বন্ধ হয়ে আসে। তাছাড়া গরমে মাস্ক ভিজে যায়। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে তিনি নিজেও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গামছা দিয়ে মাস্ক বানিয়ে মুখে পেঁচিয়ে রাখেন। মাঝে মাঝে খুলে ঘামও মোছেন। এতে কোনো সমস্যা আছে কি না তা জানতে চান।

শুধু তরুণ এই রিকশা চালকই নন, জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে মাস্ক পরিধানের ব্যাপারে সচেতনতা অনেক বেড়েছে। লকডাউনের আগেও অধিকাংশ মানুষ মাস্কবিহীন ঘোরাফেরা করলেও গত দুদিনে এ পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে যারা ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন, তাদের প্রায় সবাই মুখে মাস্ক পরিধান করছেন।

বুধবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সবার মধ্যেই মাস্ক পরিধানের প্রবণতা বেড়েছে। সরকার ঘোষিত লকডাউনের আজ তৃতীয় দিন চলছে। লকডাউন পালনে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও মাস্ক ব্যবহারে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যেই মাস্ক পরিধানের ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।

বর্তমানে দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলছে। মঙ্গলবার দেশে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়। এর আগে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা করা হলেও আজ থেকে আবার সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।

মঙ্গলবার (৬ এপ্লিল) জেলার মার্কেট ও বণিক সমিতির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। তখন তারা বলেন, সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খুলতে চান তারা। জেলা প্রশাসন যদি তাদের দাবি না মানেন তাহলে তারা মানববন্ধন করবে বলেও জানান তারা। তারা আশা করছেন আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে ভালো কোনো খবর পাবেন। লকডাউনের সময়সীমা বাড়বে নাকি লকডাউন প্রত্যাহার হবে, তা আজ জানানো হবে বলে জানান সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, পেটের দায়ে বের হচ্ছে মানুষ। গত বারের করোনার ধাক্কা এখনোও অনেকে সামাল দিতে পারেনি। মানুষ মুখে মাস্ক দিচ্ছে এবং পেটের দায়ে বের হচ্ছে। এটি একটি ভালো দিক।

জেলা সিভিল সার্জন বলছেন, জেলায় মাস্ক ব্যবহারের সংখ্যা বেড়েছে। জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত ৮৬১ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।

 

Apr 7, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জের একমাত্র করোনা ইউনিট বন্ধ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের একমাত্র করোনা ইউনিট বন্ধ


অর্থ সংকটে বন্ধ করা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের করোনা ইউনিট। গত তিনমাস ধরে চলা করোনা ইউনিট হঠাৎ বন্ধ হওয়ার কারণ হিসেবে অর্থ সংকটকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। রোববার (৪ এপ্রিল) করোনা ইউনিটে যে দুজন ভর্তি ছিলেন, তাদেরকেও রেফার করা হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। এতে রোগীশূন্য করে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে করোনা ইউনিট। বুধবার (৭ এপ্রিল) চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের পঞ্চম তলায় করোনা ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে তালা মেরে রাখা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ধাপে হাসপাতালের সপ্তম তলায় চালু হয় করোনা ইউনিট। চালুর পর থেকে ডাক্তার-নার্সদের থাকা, খাওয়াসহ বিভিন্ন সুবিধা দিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। গত তিনমাসে ডাক্তার-নার্সদের বিভিন্ন সুবিধা, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন, নতুন বেড স্থাপনসহ সবমিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। বিভিন্ন হোটেলের খাবার বিলসহ আনুষাঙ্গিক প্রায় সব খরচই বাকি রয়েছে বলে জানা গেছে।

করোনা ইউনিটে দায়িত্বরত এক নার্স জানান, রোববার দুইজন করোনা রোগীকে রামেক হাসপাতালে পাঠানোর পর রোগীশূন্য হয় জেলা হাসপাতালের করোনা ইউনিট। তবে রোগী না থাকলেও সকালে ওয়ার্ডের সব রুম পরিষ্কার করা হয়েছে। বেডের বিছানা, চাদরসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র পরিবর্তন করা হয়েছে। যেকোনো সময়ের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে করোনা ইউনিট।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, এই মুহূর্তে কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে করোনা ইউনিট। এমনকি করোনা ইউনিট চালুর বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা পেলেই এর কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের ২০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে সোমবার (৫ এপ্রিল) পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। বর্তমানে জেলায় যে ৩৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন তারা প্রায় সবাই ভালো আছেন এবং বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় ২০ লাখ টাকার বিল পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, খুব শিগগিরই বিল পাওয়া যাবে। সরকারের নির্দেশনা পেলেই যেকোনো মুহূর্তে করোনা ইউনিট আবার চালু করা হবে।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় বর্তমানে ৩৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এদের মধ্যে রোববারই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন ও সোমবার আরও আটজন। এখন পর্যন্ত জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত রোগী আছেন ৮৬১ জন। মারা গেছেন ১৪ জন।

 

Apr 6, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রেম করে বিয়ে অতঃপর

চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রেম করে বিয়ে অতঃপর


চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে প্রেম করে বিয়ে করার পর; পারিবারিক কোলাহলের জের ধরে শশুর বাড়িতে শ্রী সুস্মিত (১৮) নামের এক তরুনী আত্মহত্যা করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চককৃত্তি ইউনিয়নের বালুরচর এলাকায় ঘটনা ঘটে। সে রানীবাড়ি চাঁদপুর এলাকার শ্যামলের মেয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়; বালুরচর এলাকার কানাই কর্মকারের ছেলে শ্রী বিশালের সাথে প্রেম করতো। গত ৭ মাস আগে তাদের দুজনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক কোলাহলের জের লেগেই থাকতো। আজ দুপুরে নিজের উপর বিরক্ত হয়ে ঘরের বাঁশের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ বিষয়টি জানলে; ঘটনাস্হলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে। 

শিবগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ হোসেন জানান; থানার অপারেশন ওসি আব্দুল মালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঐ তরুনীর আত্মহত্যার পর থেকে শশুর বাড়ির লোকজন পলাতক আছে। এ মর্মে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

Apr 5, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারী বাড়িতে উঠেনি ২২ পরিবার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারী বাড়িতে উঠেনি ২২ পরিবার


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রথম দফায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় প্রায় ২০০টি বাড়ি বিনামূল্যে নির্মাণ করে দেয় সরকার। গত ২৩ জানুয়ারি শনিবার সকালে সারাদেশে এসব বাড়ি হতদরিদ্রের মাঝে ভিডিও কনফারেন্সেস এর মাধ্যমে হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

ঘরগুলো হস্তান্তরের প্রায় দু’মাস পার হলেও নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শিংরোইল গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর নির্মিত ঘরে প্রায় ২২টি পরিবার এখনও ওঠেনি। তাদের দাবী ২২ টি ঘর ব্যবহারের জন্য অনুপযোগী। একদিন সকালে ওই গুচ্ছগ্রামে প্রকল্পের অধীনে নির্মিত বাড়িগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্মিত এসব ঘরে কোনো লোকজনের বসবাস নেই। তালাবদ্ধ হয়ে অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে ঘরগুলো।

ঘর হস্তান্তরের প্রায় ২ মাস পেরিয়ে গেলেও এসব ঘরে এখনও না ওঠার কারণ জানতে চাইলে বিনামূল্যে ঘর পাওয়া সুবিধাভোগী আশরাফুল। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী আমাদের ভালোবেসে বিনামূল্যে ঘর দিয়েছেন। ইউএনও সাবিহা সুলতানা ঘরের চাবি ও দলিল হস্তান্তর করেছেন। কিন্তু এসব বাড়ি এখনও বসবাস করার যোগ্য হয়নি। ঘরগুলো  মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় নির্মিত করা হয়েছে। নেই বিদ্যুৎ সংযোগ ও খাবার পানির ব্যবস্থা। যার কারণে এসব ঘরে এখনও আমরা উঠিনি।

উপকারভোগী আরেকজন মহবুল। তিনি জানান,আমাদের গ্রামের মধ্যে সরকারি অনেক খাস জমি ছিল। সে সব জায়গায় যদি বাড়িগুলো নির্মাণ করতো তাহলে এতদিনে বাড়িতে বসবাস শুরু করতাম। কিন্তু ফাঁকা মাঠের মধ্যে নির্মিত এসব বাড়িতে কিভাবে ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস করবো।

আরোও একজন সুবিধাভোগী জানান, বাড়ির পুরুষ গুলা কাজের জন্য বাইরে চলে যায়। আমাদের অনেকের মেয়ে আছে। এ ফাঁকা মাঠে কেমন করে বসবাস করবো।

ফতেপুর ইউপির শিংরইল গ্রামের মেম্বার আজিজুর রহমান। তিনি জানান, হস্তান্তরের প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও অনেকেই এখনও এসব বাড়িতে ওঠেনি। সেখানে খাবার পানি ও বিদ্যুৎ না থাকায় তারা যেতে চাচ্ছে না। অনেকে দাবীর নিরাপত্তার।

নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা। এ সব বিষয়ে তিনি জানান, কেন তাঁরা সরকারী বাড়িতে উঠবেনা। আমরা তো তাদেরকে ঘর বুঝিয়ে দিয়েছি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখে; প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।


Apr 4, 2021

কাঁচা আমের সাথে লবন মরিচের সম্পর্ক

কাঁচা আমের সাথে লবন মরিচের সম্পর্ক


গ্রীষ্মকাল মানেই আমের মৌসুম। কাঁচা আম দেখলেই সবার জিভে জল চলে আসে। আচার থেকে শুরু করে মজাদার অনেক পদ তৈরি করা যায় কাঁচা আম দিয়ে। বিশেষ করে আম যখন বড় হওয়া শুরু করে তখন প্রথমে লবণ মরিচ দিয়ে আম খাওযার কথা মনে পড়ে। কাঁচা আম যখন লবণ, মরিচ, সরিষা দিয়ে মাখানো হয়; তখন এর স্বাদ সবাইকে মুগ্ধ করে দেয়।

এ নিয়ে কথা হচ্ছিলো শিবঞ্জের বাসিন্দা ফাতেমার সাথে। তিনি জানান, সাধারণত মেয়েরা একটু টক খেতে পছন্দ করে। বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ তো আমের রাজধানী। এ এলাকাতে আমের অভাব নেই। ছোট বেলার একগুচ্ছ স্মৃতি খুব ভালো করে মনে আছে। এ জেলার মেয়েরা সঙ্গবদ্ধ ভাবে নকশিকাঁথা সেলাই করতে অভ্যস্থ। যখন ১০ থেকে ১৫ জন মিলে আমরা কাঁথা সেলাই করতাম, সেই ফজলু মড়লের ফজলি আমের বাগানে। সেলাই করার তালে,বাতাসের বেগে একটা জোরে ভট্ করে শব্দ হতো। সবাই মিলে দৌড়াতাম ঐ আম গাছের নিচে। দৌড়াতাম  অনেক বেগে। কে আগে আমটা নিতে পারে। যদিও সবাই মিলে ভাগ করে খেতাম। লবন মরিচ দিয়ে। কাঁচা আমের সাথে যে লবন মরিচের সম্পর্কটা সেটা কিন্তু এ জেলার মানুষ বেশ ভালো করে জানে।

কলেজে পড়ুয়া বায়েজিদ বোস্তামী। তিনি জানান; আমি যখন ছোট ছিলাম।বেশ কজন বন্ধু মিলে স্কুল পলাতাম। স্কুল  ‍ছুটি হওয়ার আগে বাড়িতে গেলে মা কিংবা মা বকা-ঝকা করতো। যারা স্কুল পলাতাম; সবাই মিলে আমের বাগানে গিয়ে ভীড় জমাতাম। বাগানে থাকতো জোগানদারের জন্য বিশেষ আশ্রয়স্থল। যেটাকে আমরা বলি টং। ফাঁকা মাঠ। আম বাগানের শিতল হওয়া। ইস.... মনটা উতলা উঠে উঠতো। আগেই থেকে বলা থাকতো; সবাই যেন নিজ বাড়ি থেকে কাগজে করে লবণ আর গুড়া মরিচ মিশিয়ে নিয়ে আসে।আগের কথায় সবাই আনতো। জোগানদারের চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে কয়েকটা আম পাড়তাম। পাশের নিকটস্থ এলাকা থেকে হাসুয়া বা ছুরি সংগ্রহ করতাম। আমের চকা ছিলতাম। পিচ পিচ করে কেটে নিয়েও আসতাম। সেই টং গিয়ে বেসুরা গান ধরতাম। আর মজা করে লবন মরিচ দিয়ে কাঁচা আম খেতাম। আর সেদিন নেই। বড় হয়েছি; আন্দদটাও ফুরিয়ে গেছে।

মেহেদী হাসান শিয়াম। সে একজন শিক্ষার্থী। পারিবারিক ক্ষেত্র বিশেষে সে চট্টগ্রামে কাটিয়েছে ছোটবেলার সময়টা। সে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তিনি জানান; আমার জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ হলেও; অনেক সময় ধরে জেলার বাইরে থাকতে হয়েছে। যখন ছুটি জেলায় আসতাম তখন খুব আনন্দ পেতাম। বিশেষ করে আম যখন গাছের ডালে থোকায় থোকায়  ঝুলতো। কী দারুণ লাগতো। কেউ কারো গাছে হাত দেয়না। সবাই নিজ নিজ বাগানের যত্মে ব্যস্ত। ফলন বেশ ভালো হবে; ফলন বাম্পার হলে দামও জুটবে বেশি। কাঁচা আম আর লবন বাটা; আম খাওয়ার যে কী মজা সে কিন্তু বলে বোঝাবার নয়। বেশ সুস্বাদু। জিভে জল আসবে আসবে ভাব। যদিও টক লাগে। কিন্তু বেশ মজার। যে খেয়েছে; সে কিন্তু ঐ কাঁচা আমের সাথে লবন মরিচের সম্পর্কটা জানে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক এ কে এম মঞ্জুরে মওলা জানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৪ হাজার ৭৭৮ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে এক হাজার ৭০০ হেক্টর বেশি। এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। এ বছর ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ গাছ মুকুলিত হতে পারে আশা করছেন তারা। আরও দুই সপ্তাহ সময় রয়েছে গাছে মুকুল আসার জন্য।

 

 

Apr 3, 2021

আমার চাঁপাই এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

আমার চাঁপাই এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলার অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল ‘আমার চাঁপাই’ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। পত্রিকাটির ৩য় বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে শনিবার (৩ এপ্রিল) সকালে আমার চাঁপাই অফিসে কেক কাটার আয়োজন করা হয়।

আমার চাঁপাই এর সম্পাদক ও মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে বর্ষপুর্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি, যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ও যুগান্তর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন জুয়েল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি ফয়সাল মাহমুদসহ অন্যরা।অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, আমার চাঁপাই এর নির্বাহী ও বার্তা সম্পাদক মেহেদী হাসান শিয়াম।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘আমার চাঁপাই’ অনলাইন পোর্টালটি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের শক্তিতে বিশ্বাসী  পোর্টালটি দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সমাজের বিভিন্ন দুর্নীতি, দুঃশাসন, অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে। আমার চাঁপাই মূলধারার খবর পরিবেশনের পাশাপাশি ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তারা।


উপস্থিত ছিলেন, বাংলা ভিশন টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি শাখাওয়াত জামিল দোলন, দৈনিক চাঁপাই দর্পণ এর স্টাফ রিপোর্টার টুটুল রবিউল, সাংবাদিক জমসেদ আলী, বদিউজ্জামান রাজা বাবু, শাহনেওয়াজ দুলাল, ইব্রাহিম,আঃ রহমান, সোহাগসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে কেক কেটে আমার চাঁপাই এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেন অতিথিবৃন্দ।

এর আগে দৈনিক চাঁপাই দর্পণ, অনলাইন পোর্টাল চাঁপাই শিক্ষা বার্তা, দেশ ক্রাইম নিউজসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন আমার চাঁপাই এর পরিবারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায়।


 

Apr 2, 2021

তিনে পা

তিনে পা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সর্বাধিক পঠিত অনলাইন পোর্টাল আমার চাঁপাই। দুবছর শেষ করে তিন বছরে পা দিয়েছে। দৈনিক লাক্ষাধিক পাঠকের আস্থা আমার চাঁপাই নামক অনলাইন পোর্টালটির। গত ৩ মাস থেকে এলেক্সা রাঙ্কিং এ জেলার অনলাইন পোর্টাল গুলোর মধ্যে  প্রথমস্থান দখল করে রেখেছে ।


 ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রয়ারী। প্রথম যাত্রা শুরু করে। বলে রাখা ভালো; এ পোর্টালটির কয়েক বার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমে হারঘে লবগঞ্জ নামে যাত্রা শুরু করে। ইচ্ছা ছিলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা। এ আঞ্চলিক ভাষায় সংবাদ লিখতে গিয়ে কতৃপক্ষ সময়ের গুরুত্ব ভেবে নাম পরিবর্তন করে। নাম দেয়া হয় আমাদের চাঁপাই। এ নামে যখন পোর্টালটির ডোমেইন ক্রয় করা হলো; নাম বড় হয়ে যাওয়াসহ অনিবার্য কারণবশত ফের নাম পরিবর্তন করার উদ্যেগ নেয়। নাম পরিবর্তন করে রাখা হলো " আমার চাঁপাই"।শুরু থেকে আজ অবধি আমার চাঁপাই নামক অনলাই পোর্টালে জেলার সংবাদ প্রকাশিত করা হয়েছে প্রায় দু-হাজার।

চাঁপাই দর্পণের স্টাফ রিপোর্টার টুটুল রবিউলের সাথে আমার চাঁপাই'র পাবলিশার মেহেদী হাসান শিয়াম যায় বালিয়াডাঙ্গায়। সুত্র খবর দিয়েছিলো বালিয়াডাঙ্গার পিয়ারাপুরে নিজ ভাইয়ের নির্যাতনের শিকার ছোট বোন। জমি জায়গার জের ধরে ছোট বনের বাড়ির দরজা অবরুদ্ধ করে রাখে বড় ভাই। সংবাদটি প্রকাশিত হয় আমার চাঁপাই পোর্টালে। সদর উপজেলার সাবেক ইউএনও আলমগীর সংবাদটি পড়ে। সেই ছোট বোনের দরজায় করা ইটের দালান ভেঙ্গে আসে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে সে পরিবারটি মুক্তি পায়। তখনও নজরে রাখে আমার চাঁপাই'র পাবলিশার শিয়াম। গোপন সুত্রধরে খবর আসে; সরকার গরিব রিক্সাচালকদের রিক্সা দিবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় পাবে ৪জন। সেই ছোট বনের জামাই (বর)  রিক্সাচালক। তাকে রিক্সা নিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে। পরে তাকে ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে রিক্সা দেয়া হয় সরকার থেকে।

 শিবগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে প্রকাশ্যে চলছিলো মাদক ব্যবসা। এ মর্মে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় আমার চাঁপাই অনলাইন পোর্টালে। ৭দিনের মাথায় অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ীকে ৬৭ বোতল ফেন্সিডিল সহ আটক করে ডিবি পুলিশ। তার দেড় বছরের কারাদণ্ড হয়। এখনো সে কারাভোগ করছে।

আমার চাঁপাই পোর্টালে "বাদাম বিক্রি করে চলেই জীবন" এ শিরনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ঐ মহিলা বাদাম বিক্রি করে বারোঘরিয়া ব্রিজের উপর। ৫৩ বিজিবি চেকপোস্টের পাশে। স্বামী মৃত্যুতে সংসার না চলার করানে বাদাম বিক্রি করে। তার ছেলে গৌড়। সেও নতুন বাড়ি করেছে। তার মাকেও বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পর জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ ঐ মহিলার মুঠোফন নাম্বার নিয়ে; জেলা প্রসাশক নিজেই মুঠোফনে যোগাযোগ করেন। একদিন ডিসি তার অফিসে আসতে বলেন সেই বাদাম বিক্রেতা মহিলাকে। ডিসির সাক্ষাৎ পেয়ে; ঐ মহিলা একটি বাড়ির আবদার করেন। আমনুরায় নির্মাণাধীন  গুচ্ছগ্রামে জেলা প্রশাসক তাকে বাড়ি দেয়ার আশ্বাস দেয়। এরকম উল্লেখযোগ্য আরোও ঘটনা আছে। 

আমার চাঁপাইয়ে প্রকাশিত সকল সংবাদ নির্ভূল করার চেষ্টা করে প্রকাশিত করে। বিশেষ করে বানান। তারপরে বাক্য গঠনে। কোন গণমাধ্যম কর্মীরা সেচ্ছায় বানান ভুল করেনা। আমার চাঁপাই অনলাইন পোর্টালে বানান ভূল হয়ে থাকে। সে সকল ভূল ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার চাঁপাই তিনে পা দিয়ছে। তাই আমার চাঁপাই নতুন প্রতিজ্ঞা নিয়ে ফের পথ চলবে। সঠিক ঘটনা,আর বানান নির্ভূলে বেশ নজর রাখবে আমার চাঁপাই' প্রকাশনা মন্ডলীরা।

 


Apr 1, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আত্মহত্যা রোধে সামাজিক আন্দোলন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আত্মহত্যা রোধে সামাজিক আন্দোলন


একজন নারী একজন পুরুষ সব সামাজিক, ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় কোনো দিক থেকেই কেউ কারও থেকে  পিছিয়ে নয়। পরস্পর সমানে সমান। তারপরও সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় অপসংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক কারণে নারীরা বিভিন্নভাবে পিছিয়ে আছে। শুধুই যে পিছিয়ে আছে তা নয়, এই দুর্ভাগ্যের ফলশ্রুতিতে নারীরা আত্মহত্যার প্রবণতায় এগিয়ে যাচ্ছে। এ সংখ্যায় পুরুষও কম নয়। এ কারনে চাই, সামাজিক আন্দোলন।এ আন্দোলন করেই দেশে বাল্য বিবাহ কমেছে।

  • চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত মার্চ মাসে আমার চাঁপাই’র তথ্য মতে; মোট ৫ জন আত্মহত্যা করেছে।

৩ মার্চ বুধবার সকাল ১০ টার দিকে শিখা খাতুন (১৮) নিজ শয়ন কক্ষে আত্মহত্যা করে। তার মা মেয়েকে তার শয়ন কক্ষের ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার দেয়। মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশী ছুটে আসে এবং সদর মডেল থানায় খবর দেয়। সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ‍উদ্ধার করে।সে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মসজিদ পাড়া এলাকার মোঃ সেন্টু আলীর মেয়ে। মানসিক চাপের কারনে সে আত্মহত্যা করে জানায় পুলিশ।

২১ মার্চ রবিবার দিবাগত রাত প্রায় ১১টায় তার নিজস্ব বাড়িতে সদর উপজেলায় প্রেমে ব্যার্থ হওয়ায় আকাশ ঘোষ (১৮) নামে একজন আত্মহত্যা। সে বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের নশিপুর এলাকার বিকাশ ঘোষের ছেলে। জানা যায়; প্রেমের জেরে নিজ বাড়ির দোতালায় ঘরের ফ্যানের হুকের সাথে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে।

২৮ মার্চ সোমবার রাত ৯টার দিকে নিজ শয়ন কক্ষের দরজা ভেতর থেকে আটকে ফ্যানের সাথে গলায় ওড়নার ফাঁস দেয় সাদিয়া। সে মহারাজপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া নতুনপাড়া গ্রামের সেলিম আলীর মেয়ে ও কারবালা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া খাতুন (১৫) । খবর পেয়ে রাত ১১ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পোঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। জেদি প্রকৃতির সাদিয়া খাবার নিয়ে পরিবারের সাথে অভিমান করে এ ঘটনা ঘটায় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

একই দিনে রাত ১১ টার দিকে বাড়ির সকলে ঘুমিয়ে যাবার পর বাড়ির বাইরের দিকের বারান্দায় বাঁশের খুঁটির সাথে গলায় রশির ফাঁস দেন রতন। সে নাচোল সদর ইউনিয়নের রাজবাড়ি মোহম্মদপুর জামকুড়ি গ্রামের সৌখিন খালকোর ছেলে রতন খালকো (৪০)।৩০ মার্চ মঙ্গলবার ভোররাত ৩ টার দিকে রতনের ছেলে ও মেয়ে  পিতার মরদেহ ঝুলতে দেখে সকলকে খবর দেয়। পুলিশ সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। পেটের পীড়া ও মানসিক যন্ত্রণায় রতন একাজ করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

৩১ মার্চ বুধবার বিকেলে আলিনগরে ভাড়া বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও কলহের জের ধরে ফাতেমা ঘরে খাটের উপর চেয়ারে উঠে ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে গলায় ফাঁস দেয়।সে সদর উপজেলার উচালিয়া পাড়া সরাইল বি. বাড়িয়া এলাকার সোহেল মিয়ার মেয়ে এবং ওসমান আলীর সহধর্মিণী ফাতেমা।

একসময় চোখের সামনে ঘন কুয়াশার আস্তরণ দেখা দেয়। আর সেই ঘন কুয়াশার আস্তরণ ভেদ করে মানুষ কখনো কখনো প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদের ভাষা যখন নিজের জীবনকে হরণ করে তখন তাকে আমরা আত্মহত্যা বলি। আমাদের দেশে আত্মহত্যা বহুবিধ কারণে হয়ে থাকে। পারিবারিক সৃষ্ট কলহ চরম পর্যায়ে পৌঁছলে, যৌন হয়রানি, নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, বহুবিবাহ, মান অভিমান, বিষণœতা, হতাশা, অন্তর দহন, স্বামীর সঙ্গে মানসিক দূরত্ব, সম্পর্কের টানাপড়েন, বাল্যবিবাহ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ইত্যাদি।

বিজ্ঞানের ভাষায় বলা যায়, মুড বা মেজাজের পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে মস্তিষ্কের জৈব রাসায়নিক পদার্থ, নিউরোট্রান্স মিটারের গোপন সংশ্রব। এই পদার্থগুলোর মধ্যে সেরোটনিক ও নর এড্রিনালের মাত্রা কমে গেলে মনোজগতে তৈরি হয় নিম্নচাপ। নিম্নচাপ থেকে আসে বিষণœতা। আর গুরুতর বিষণœতা থেকেই আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় মস্তিষ্কের গ্লুটামিক অ্যাসিডের ভারসাম্যহীনতার সঙ্গে আত্মঘাতী আচরণের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। যেসব মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে, গবেষণায় তাদের মস্তিষ্কের গ্লুটামিক অধিক কার্যকর থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গ্লুটামিক হচ্ছে এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড যা স্নায়ুকোষের মধ্যে সংকেতের আদান-প্রদান করে। কোষ থেকে কোষে সংকেত পাঠাতে গ্লুটামিককে সহায়তা করে কুইনোলিক অ্যাসিড।

 সুইডেনের প্রায় ১০০ আত্মহত্যার রোগীর ওপর এ গবেষণা করেন গবেষকরা। এসব রোগী আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আত্মহত্যার চেষ্টা করা এসব মানুষের স্পাইনালে তরল পদার্থের মধ্যে স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণে কুইনোলিক অ্যাসিড রয়েছে, যার অর্থ তাদের গ্লুটামিক অধিক কার্যকর। এতে প্রমাণিত হয়, যেসব মানুষের মস্তিষ্কের রসায়নে কুইনোলিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম, তাদের আত্মহত্যার ঝুঁঁকি কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বের ১ থেকে ২ কোটি মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এর মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ সফল হয়। ২০১০ সালের স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় এবং সরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গ্রামীণ জনপদে আত্মহত্যার ব্যাপ্তি নির্ণয় করা হয়। সেখান থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এখানে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ১২৮.৮ জন আত্মহত্যা করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর অন্তত ৮ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করেন। তবে আত্মহত্যা রুখতে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছেন। বিশেষজ্ঞরাও আত্মহত্যা রোধ করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। জানা গেছে আত্মহত্যা রোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে পরিবার। হু-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। আত্মহত্যার অন্যতম কারণ অবসাদ। টিনেজদের মধ্যে আজকাল আত্মহত্যার প্রবণতা সর্বাধিক।

একাকীত্বের কারণেও আত্মহত্যা করার অনেক উদাহরণ রয়েছে। চলুন জেনে নিই আত্মহত্যা রুখতে পরিবার যে ভূমিকা রাখতে পারে ‘মানসিক’ রোগ থেকে মুক্তি পেতে ভারতীয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রিয়াল দাস জানান, পারিবারিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে এই রোগের প্রতিকার সম্ভব। ‘আত্মহত্যার উপসর্গ’ সম্পর্কে পরিবারকে সচেতন হতে হবে এবং সেই অনুযায়ী রোগীর চিকিৎসা করতে হবে। এছাড়া আত্মহত্যার প্রতিরোধক হিসেবে দারুণ কাজ করে শরীরচর্চা। ব্যয়ামের ফলে শরীরে এক বিশেষ ধরনের হরমোন নির্গত হয়। যা ‘অ্যান্টি ডিপ্রেশন’-এর ওষুধ এবং স্বাভাবিকভাবে অবসাদ দূর করে।

চিকিৎসকের পরামর্শ: ১. আত্মহত্যা নিয়ে কথা না বলার ট্যাবু থেকে বেরিয়ে এসে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। সমস্যা জানার চেষ্টা করতে হবে। 

২. রোগীকে বোঝাতে হবে, তিনি যা ভাবছেন তা সঠিক ভাবনা নয়। সবসময় পাশে থাকতে হবে। চিকিৎসা চলাকালে রোগীকে একলা ছাড়া যাবে না। ‘সেলফ ডেসট্রাকটিভ বিহেভিয়ার’ লক্ষ্য করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

৩. ধারালো অস্ত্র, ছুরি, কাঁচি, দড়ি- এই সমস্ত জিনিস রোগীর নজরের মধ্যে রাখা যাবে না।৪. সবসময় আশার আলো দেখাতে হবে। (সূত্র- এবিপি আনন্দ) 

 

 

Mar 31, 2021

চাঁপাইনবাবগঞ্জে দু-গৃহীনির আত্মহত্যা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে দু-গৃহীনির আত্মহত্যা


চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ৩ নং ওয়ার্ডে ফাতেমা নামে (১৮) ও ১৩ নং ওয়ার্ডের শিবতলা এলাকায় চামেলি (১৮) নামে এক গৃহবধূ মোট ২ গৃহীনি আত্মহত্যা করেছে।আজ বুধবার বিকেলে ও সকালে এ ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়; চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার উচালিয়া পাড়া সরাইল বি. বাড়িয়া এলাকার সোহেল মিয়ার মেয়ে এবং ওসমান আলীর সহধর্মিণী ফাতেমা।চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. মোজাফফর হোসেন জানান, স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও কলহের জের ধরে ফাতেমা ঘরে খাটের উপর চেয়ারে উঠে ওরনা পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে যায়।লাশ উদ্ধার করে সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১৩ নং ওয়ার্ডে শিবতলা এলাকায় চামেলি (১৮) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। সে চাঁদলায় এলাকার মিলনের স্ত্রী। আজ বুধবার সকাল ১০ টায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে নিশ্চিত করেছে চামেলির শশুর বাড়ির লোকজন। সদর মডেল থানার এসআই আবু হাসান ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানায় আইনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তাতান্তর করা হয়েছে।